জন্ম তারিখ: ১৫ মার্চ, ১৯৯৬
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা_সিটি
পেশা : চাকরি, শাহাদাতের স্থান : স্টার কাবাবের সামনে, ধানমন্ডি
১৯৯৬ সালের ১৫ মার্চ ভোলার চরফ্যাশনে জন্ম শহীদ হাসনাইন আহমেদের। পিতা আলমগীর (মৃত) এবং মা হাসিনা বেগমের ৩ সন্তানের মধ্যে সবার বড় হচ্ছেন শহীদ হাসনাইন। কাজ করতেন আকাশ টিভির ডিস বিভাগের কর্মী হিসেবে। নিজ জেলা ভোলা হলেও পরিবার নিয়ে থাকতেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজারে একটি ভাড়া বাসায়। তার পরিবারে ছিলো স্ত্রী রুমা আক্তার ও ২ বছরের মেয়ে রায়সা মনি। এছাড়া ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া বোন তানহা আক্তার মিম এবং ভাই মোহাম্মদ হোসেনও থাকতো তাদের সাথে। ১৯ জুলাই ধানমন্ডি নাইন স্টার কাবাব নামের রেস্তোরার সামনে পুলিশের গুলিতে তিনি শহীদ হন।শহীদ শাহাদাতের দিন দেশে শুরু হয়েছিলো কোটা সংস্কার আন্দোলন। আন্দোলন দমানোর নামে স্বৈরাচার হাসিনা ছাত্রদের উপর শুরু করেছিল পাশবিক নির্যাতন। ছাত্রদের দাবী না মেনে নিয়ে তাদের আন্দোলন থামাতে নানা ধরনের পাশবিকতার আশ্রয় নেয় এই জালিম সরকার। আন্দোলনের উপর চালাতে থাকে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট এবং ছররাগুলি। তার চেয়ে ভয়ংকর যে বিষয়টা সবাইকে হতবাক করেছে তা হলো এই স্বৈরাচার ছাত্রদের উপর নির্বিচারে তাজা গুলি চালাতে থাকে। যে গুলি গুলো ছাত্রদের বক্ষকে ঝাঝরা করতে থাকে। ১৯ জুলাইতেও সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অবরোধ চলে। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি জায়গায় চলতে থাকে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকাতেও চলছিলো ছাত্রদের সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা পালন করছিলেন হাসনাইন আহমেদ। আন্দোলন চলমান থাকে রাত পর্যন্ত। রাত নটার দিকে হঠাৎ একটি শটগানের বুলেট এসে লাগে তার বুকে। সাথে সাথে রাইফেল থেকে ছোড়া আরেকটা বুলেট এসে তার বুক ভেদ করে পৃষ্ঠদেশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। মাটিতে লুটিয়ে পরে তার দেহ। সাথে থাকা সঙ্গীরা তাকে নিয়ে যায় ইবনে সিনা হাসপাতালে। সেখানের চিকৎসকরা তাকে অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। অতপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। জীবনে মৃত্যুর সাথে লড়তে লড়তে রাত ১১ টায় মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদের খাতায় নাম লেখান রাজপথের বীরসেনানী হাসনাইন আহমেদ। এভাবেই আরেকটা তাজা প্রাণ কেড়ে নেয় খুনি হাসিনা। সাথে কেড়ে নেয় ২ বছরের রাইসা মনির থেকে নিজের বাবার স্নেহের পরশ। ১৫ বছরের আওয়ামী বর্বরতা এরকম হাজারো রাইসার বাবা ডাক কেড়ে নিয়েছিলো। পরিবারের বর্তমান অবস্থা ভিটেবাড়ি সংক্রান্ত মাত্র ৫ শতাংশ জমি আছে গ্রামে। ঢাকা মোহাম্মদপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শহীদের মা একটি মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের জন্য খাবার রান্না করে দেন। সেখান থেকে মাসিক ৬০০০ টাকা বেতন পান। ছেলেকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তার মা। এক নজরে শহীদ হাসনাইন পূর্ণনাম : হাসনাইন আহমেদ জন্ম তারিখ : ১৫-৩-১৯৯৯ জন্মস্থান : ভোলা জেলার শ্রীধরগুর নই গ্রাম পেশা : চাকরি পিতা : মো: আলমগীর মাতা : মোসা: হাসিনা বেগম স্ত্রী : মোসা: রুমা আক্তার বর্তমান ঠিকানা : মোহাম্মদপুর, ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: রুহুল আমিন মাল বাড়ি, ইউনিয়ন: বাকের চর, থানা: চরফ্যাশন , জেলা: ভোলা আহত হওয়ার স্থান : স্টার কাবাবের সামনে, ধানমন্ডি শহীদ হওয়ার স্থান : হাসপাতাল ঘাতক : পুলিশ আঘাতের ধরন : গুলি গুলিবিদ্ধের তাং ও সময় : ১৯ জুলাই, ২০২৪ রাত ৯.০০ টা শহীদ হওয়ার তাং ও সময় : ১৯ জুলাই, ২০২৪ রাত ১১.০০ টা সহযোগিতার প্রস্তাবনা : ১ শহীদের এতিম কন্যা সন্তানের প্রতিপালনে যাবতীয় খরচ বহন করা : ২ ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া শহীদের ছোটো বোনের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া যেতে পারে