জন্ম তারিখ: ১০ এপ্রিল, ২০০৩
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা_সিটি
পেশা: ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে
শহীদ জোবায়ের ওমর খান ছিলেন এক সম্ভবনাময় তরুণ। তিনি ২০০৩ সালের ১০ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত বিনোদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের মাত্র ৬ মাস পরেই মাকে হারান। মায়ের ভালোবাসা ছাড়াই বেড়ে ওঠেন। শিক্ষা জীবনে সর্বশেষ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশোনালস (বিউপি) এর আইন বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন। বিইউপির ১ম বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হন। ঘটনার বিবরণ শহীদ জোবায়েরের পিতা একজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। নৈতিক শিক্ষা ও দেশ-জাতির প্রতি দায়বদ্ধতার শিক্ষাটি পেয়েছিলেন বাবার কাছেই। নিজেও ছিলেন আইনের ছাত্র। মানবাধিকারের বিষয়ে ছিলেন সচেতন। তাইতো যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাক আসলো তখন আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। ছাত্র-জনতার প্রাণের দাবির এ আন্দোলনে ছিলেন শুরু থেকে। সক্রিয় ভূমিকা রাখতেন মিছিলে। ১৮ জুলাই ২০২৪ তারিখে যখন তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন, ঠিক সে সময় যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র হাতে ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিরস্ত্র ছাত্ররা বাধ্য হয়ে পিছু হটতে থাকে। সে সময় শহীদ জোবায়ের দেখলেন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে সন্ত্রাসীরা মারধর করছে। আত্মপ্রত্যয়ী সাহসী তরুণ জোবায়ের একাই রড হাতে রুখে দাঁড়ান। উদ্ধার করেন সহযোদ্ধাকে। শহীদ জোবায়ের রাখেন সাহসের স্বাক্ষর। অনুপ্রাণিত করেন অন্যান্য ছাত্রদের। বিভিন্ন ঘাতপ্রতিঘাত পেরিয়ে ছাত্র-জনতার দাবি চলে আসে এক দফায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোসহীন ছাত্র-জনতা অর্জন করে চূড়ান্ত বিজয়। ৫ই আগস্ট ঐতিহাসিক সেই দিনে স্বৈরাচার পতনের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে কোটি প্রাণে। এমন দিনে যাত্রাবাড়িতে বিজয়োল্লাসরত ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করে পুলিশ। শহীদ জোবায়েরের ডান পাজরে বৃদ্ধ হয় দুটো বুলেট। ঘটনাস্থলেই শহীদ হন এই মেধাবী ছাত্র। বাবার মতো তাঁর বড়ো ভাইও একজন আইনজীবী। তাদের মতো আইনজীবী হবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি শহীদ জুবায়েরের। কিন্তু একটি মুক্ত-স্বাধীন দেশ এনে দিতে সহযোগিতা করেছিলেন। শহীদের বড় ভাই অ্যাডভোকেট জেআই খান পিয়াস বলেন, “জুবায়ের চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হওয়ার চান্স পেয়েছিল কিন্তু ঢাকায় পরিবারের সাথে থাকার জন্য আমরা তাকে বিইউপিতে ভর্তি করি। জজ হওয়ার তীব্র বাসনা থেকেই আইন বেছে নেওয়া তাঁর। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন জাতির মেধাবী এ বীর সন্তান। দোয়া করি মহান আল্লাহ যেন তাঁর আত্মত্যাগ ও শাহাদাতকে কবুল করে নেন।” শহীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নাম : জোবায়ের ওমর খান জন্ম : ১০.০৪.২০০৩ পিতা : জাহাঙ্গীর আহমেদ খান পিতার পেশা ও বয়স : আইনজীবী, ৬৫ মাতা : ইমামা খান পরিবারের সদস্য সংখ্যা : ৪ জন মাসিক আয় : ১ লক্ষ টাকা আয়ের উৎস : আইনজীবী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : বিইউপি স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: বিনোদ, থানা: কসবা, জেলা: ব্রাহ্মণবাড়িয়া বর্তমান ঠিকানা : মহল্লা: ৫৬৯, এলাকা: সায়দাবাদ, ২ নং ওয়ার্ড, জেলা: ঢাকা শহীদের জানাজা তাঁর নিজ উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানেই সমাহিত করা হয় শহীদের পরিবারের প্রতি সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রস্তাবনা ১.আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন নেই তবে শহীদ পরিবারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা দরকার