Image of মো: মোনায়েল আহমেদ

নাম: মো: মোনায়েল আহমেদ

জন্ম তারিখ: ২৫ মার্চ, ২০০৭

শহীদ হওয়ার তারিখ: ২১ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: সিলেট

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

শহীদের জীবনী

প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ মোনায়েল আহমেদ আষাঢ়। ২৫ মার্চ ২০০৭ সালে হবিগঞ্জের লাখাইয়ের কামালপুর গ্রামে পরিবারের ছোট ছেলে হিসেবে পৃথিবীতে আসেন তিনি। শহীদের পিতার নাম সোয়াব মিয়া। পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। যার উপার্জনে চলতো পাঁচ জনের সংসার। মাতা ইয়াসমিন আক্তরের হাতের পরশে সাজানো সংসারে পরিণত হয়। ছোট থেকেই বেশ চটপটে ও মেধাবী হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করেন আষাঢ়। ধর্মীয় দিকে প্রচন্ড আগ্রহ ও পিতা মাতার ইচ্ছা অনুযায়ী হাফিজিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন নিজ গ্রামে। কৃতিত্বের সাথে আত্মস্থ করেন আল্লাহর ৩০ পারা কোরআনের প্রতিটি হরফ। সুমধুর তেলাওয়াতে নামাজ পড়াতেন নিজ মসজিদে। হাফিজিয়া পড়া শেষ হলে ভর্তি হন নিজ এলাকার মাধ্যমিক স্কুলে। শহীদ ইমরানের ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হয়েছিলো। স্বপ্ন পুরণের আগেই বুলেটের আঘাতে স্বপ্ন অপুর্ণ রয়ে যায়। শাহাদাতে প্রেক্ষাপট কোটাবিরোধী আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ পূর্বের কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ৯৩% মেধা ও ৭% কোটা রাখার পক্ষে রায় দেন। দাবি পূরণ হলেও বিগত দিনগুলোতে সরকারের পেটোয়া বাহিনীর ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি এবং হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে সারাদেশের আপমর জনসাধারণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আষাঢ় এ বিক্ষোভে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ২১ জুলাই দেশব্যাপী কারফিউ চলাকালীন সময়ে তিনি এবং তার বড় ভাই তোফায়েল আহমেদ সাইনবোর্ড এলাকায় অন্যান্য বন্ধুদের নিয়ে বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন। নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে স্বৈরাচারী সরকারের ঘাতক বাহিনী। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ আরো তীব্র হয়ে ওঠে। মোনায়েম সে মিছিলে প্রথম সারির ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম একজন। ঘটনার এক পর্যায়ে মোনায়েমের পিঠে চারটি এবং তার বড় ভাই তোফায়েলের গায়ে চারটি রাবার বুলেট লাগলে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পিচ ঢালা রাস্তা রক্তে রঞ্জিত হয়। সাথে থাকা আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতা রিকশায় করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে রক্তশূন্যতায় তার শরীর নিথর হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। মৃত্যুর খবর শোনানা মাত্রই পরিবার শোকে পাথর হয়ে যায়। তাদের মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। তার আপন বড় ভাই এখনো পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। শহীদ সম্পর্কে নিকটাত্মীয়দের অনুভূতি মো: মোনায়েল আহমেদ ইমরানের চাচা মো সিরাজুল ইসলাম বলেন, শহীদ মোনায়েম অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র ছেলে ছিলো। তার হৃদয় ছিলো ৩০ পারা কোরআনের ভরা। মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। তার সুমিষ্ট কোরআন তেলাওয়াতে গ্রামের লোকজন পেছনে নামাজ আদায় করতো। শহীদ ইমরান ছিলো সদা হাস্যোজ্জ্বল ছেলেদের মধ্যে অন্যতম। পারিবারিক আর্থিক অবস্থার বিবরণ মো: মোনায়েল আহমেদ ইমরানের পারিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। বাবা নারায়নগঞ্জে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন। যার উপার্জিত আয় দ্বারা ৪ ভাই বোনের লেখাপড়া চলতো। গ্রামের বাড়িতে থাকার মতো উপযুক্ত ঘর নেই। শহীদদের পরিবারের জন্য বসবাসের ঘর এবং আর্থিক সহায়তা পেলে বাকী দিনগুলো স্বচ্ছলতার মাধ্যমে কাটাতে পারবে। শহীদের বাবা ৮০০০০/- টাকার ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন যা এখনো অপরিশোধিত। একনজরে শহীদ মোনায়েল আহমেদ আষাঢ় পুরো নাম : মো: মোনায়েল আহমেদ আষাঢ় পেশা : ছাত্র জন্ম তারিখ : ২৫/০৩/২০০৭ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: কামালপুর, ইউনিয়ন : ১নং লাখাই, থানা: লাখাই, জেলা: হবিগঞ্জ বর্তমান ঠিকানা : সাইনবোর্ড, নারায়নগঞ্জ পিতার নাম : মো: সোয়াব মিয়া, বয়স: ৫০ পেশা : ক্ষুদ্র ব্যবসা মায়ের নাম : ইয়াসমিন আক্তার, বয়স: ৪৪ পেশা: গৃহিণী পরিবারের মাসিক আয় : ৩০০০০/- আয়ের উৎস : পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা পারিবারিক সদস্য : ৫ জন ভাই বোনের সংখ্যা : ২ বোন ১ ভাই ১. বড় বোন : জিনিয়া আক্তার, বয়স: ২২ পেশা: শিক্ষার্থী, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নারায়ণগঞ্জ ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার (৮ম সেমি) ২. মেঝো ভাই : মো: তোফায়েল আহমেদ, বয়স: ২১ শিক্ষার্থী :পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক (৮ম সেমি) ৩. ছোট বোন : জেরিন আক্তার, বয়স : ১৮, শিক্ষার্থী : এইচ এস সি ঘটনার স্থান : সাইনবোর্ড, নারায়ণগঞ্জ আঘাতকারী : সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে আহত হওয়ার সময় কাল : ২১/০৭/২০২৪ বিকাল ৩ টায়, নারায়নগঞ্জ নিহত হওয়ার সময়কাল, স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শহীদের কবরে বর্তমান অবস্থান : গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে প্রস্তাবনা ১. শহীদের পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া ২. বাবার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করা ৩. শহীদের বাবার ব্যবসা সম্প্রসারণে এককালীন আর্থিক অনুদান দেয়া ৪. শহীদের বাকি ভাই বোনের পড়াশুনার খরচ নিশ্চিত করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: মোনায়েল আহমেদ
Image of মো: মোনায়েল আহমেদ
Image of মো: মোনায়েল আহমেদ
Image of মো: মোনায়েল আহমেদ
Image of মো: মোনায়েল আহমেদ
Image of মো: মোনায়েল আহমেদ

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

গৌছ উদ্দিন

মোস্তাক আহমদ

জয় আহমেদ হাসান

রিপন চন্দ্র শীল

মো: নাজমুল ইসলাম

মো: হাসাইন মিয়া

মো: আনাছ মিয়া

মো: সাদিকুর রহমান

মো: সোহেল আহমদ

মো: মোজাক্কির মিয়া

এটিএম তুরাব

নাহিদুল ইসলাম

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo