Image of তারেক আহমেদ

নাম: তারেক আহমেদ

জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ২০০১

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: সিলেট

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: রংমিস্ত্রী, শাহাদাতের স্থান: সিলেটের বিয়ানীবাজারে

শহীদের জীবনী

শহীদ তারেক আহমেদ পেশায় একজন রং মিস্ত্রী। শহীদ হওয়ার মাত্র ২ বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন। তার ঘরে ৪ মাসের একটি সন্তান রয়েছে। তিনি খুব ভালো একজন মানুষ। দারিদ্র্যতার কারনে জীবনের কোন শখই পূরণ করতে পারেননি। তারেকের ঘরে যখন একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম হয় তখন আনন্দ নেমে আসে তাঁর জীবনে। ভেবেছিলেন ছেলে বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হয়ে স্বপ্ন পূরণ করবেন। কিন্তু মৃত্যুই যেন ছিল তাঁর জীবনের শেষ পরিণতি। স্বপ্ন আর পূরণ হল না। আওয়ামী ঘাতকের আঘাতে তাঁকেও প্রাণ দিতে হল। শহীদ তারেক আহমেদের জন্ম ২০০১ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজারের নিদনপুর গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে। পিতা তাঁকে বাল্যকালেই এতিম করে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেন। তার মাতা মোসা: ইরানুন্নেসা একজন বৃদ্ধ মহিলা, বয়স ৫৫ বছর। পরিবারের অভাব অনটন আর বাবার অকাল মৃত্যুতে তার আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি। রং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করে পরিবারের হাল ধরেন। থাকার মত কোন ঘর নেই তাঁদের। তাই পরিবার নিয়ে তাঁর চাচার বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার বর্ণনা আগস্টের ৫ তারিখ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশে থমথমে পরিবেশ। মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আন্দোলন যেন বড় হতে না পারে সেজন্য সরকার ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন প্রদান করে। সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশে বিদেশে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পেশাজীবী, সাংবাদিক, দিনমজুর, রিকশা চালক, ভ্যান চালক, খেটে খাওয়া মানুষ সবাই নেমে এসেছিল সেদিন অধিকার আদায়ের দাবিতে। তাদেরই একজন ছিলেন শহীদ তারেক আহমেদ ঐদিন দুপুরে শহীদ তারেক আহমেদ তার বন্ধুদের সাথে সিলেটের বিয়ানীবাজারে আন্দোলনকারীদের সাথে যুক্ত হন। মিছিল নিয়ে থানার সামনে গেলে স্বৈরাচারী হাসিনার ঘাতক পুলিশ বাহিনী আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি নিক্ষেপ করে। পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শতাধিক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে আরও অনেকে। শুরুতে দুইটা ছোড়রা গুলি এসে লাগে শহীদ তারেক আহমেদের গায়ে। আরেকটি গুলি এসে লাগে তাঁর বুকে। মানুষ আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে থাকে। গুলি বিদ্ধ হয়ে তারেক আহমেদ সেখানেই মৃত্যুবরণ করে। কংক্রিটের রাস্তায় পড়ে থাকে শহীদের নিথর দেহ। আন্দোলনকারীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শহীদ তারেক মাহমুদের লাশ পুলিশ টেনে হিঁচড়ে থানার ভিতরে নিয়ে যায়। নিয়ে ফেলে রাখে লাশের স্তুপে। সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে মা ও বোন বাতাসের গতিতে চলে আসেন থানায়। অন্ধকার কুঠুরির ভিতরে ছেলের লাশ দেখে ভয়ে কেঁপে উঠেন মা। মসজিদের মুয়াজ্জিনের সহযোগিতায় ছেলের লাশ শনাক্ত করতে সক্ষম হন তাঁর পরিবার। শোকের সাগরে ভাসতে থাকে তার পরিবার। মায়ের আহাজারি, বউয়ের কান্না, বোনের চিৎকারে ছুটে আসে এলাকাবাসী। ৪ মাসের ছেলে আরিয়ান আহমদ রাফি জানেই না যে সে আর কোনদিন বাবা ডাকতে পারবে না। দাফন ৬ আগস্ট ফজরের পর শহীদের লাশ বাড়িতে আনা হয়। সেখানেই তার দাফন-কাফন সম্পন্ন হয়। পারিবারিক অবস্থা ছোট বেলায় বাবাকে হারান শহীদ তারেক আহমেদ। বাবাহীন পৃথিবী যে কতটা কঠিন এটা যার বাবা নেই শুধু সেই জানে। তার মা বৃদ্ধ, বয়স ৫৫ বছর। তাঁর একটি ছোট বোন আছে। শহীদ হওয়ার ২ বছর আগে বিয়ে করেছেন। তার একটি ছেলে হয়েছে। ছেলের বয়স ৪ মাস। তাদের নিজেদের বাড়িটি অনেক পুরনো এবং জরাজীর্ণ। সংস্কার করার সামর্থ্য নেই। তাই স্ত্রী-সন্তান ও মা বোন কে নিয়ে তাঁর চাচার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। রংমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে সংকট নেমে আসে। সংসার কে চালাবে? আর ৪ মাসের শিশুর দায়িত্বই বা কে নিবে? এক নজরে শহীদের ব্যাক্তিগত তথ্যাবলি নাম : শহীদ তারেক আহমেদ পেশা : রংমিস্ত্রী জন্ম তারিখ : ০১/০১/২০০১ জন্ম স্থান : সিলেটের বিয়ানীবাজার পিতা : মৃত রফিক উদ্দিন মাতা : মোসা: ইরানুন্নেসা আহত হওয়ার তারিখ : ৫ আগস্ট ২০২৪ শাহাদাতের তারিখ : ৫ আগস্ট ২০২৪ স্থায়ী ঠিকানা : কটুখালিপাড়, মোল্লাপোর, বিয়ানীবাজার, সিলেট প্রস্তাবনা ১. শহীদের পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া ২. এককালীন আর্থিক অনুদান ও নিয়মিত মাসিক ভাতা প্রদান ৩. শহীদ পরিবারের সকল খরচ নিশ্চিত করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of তারেক আহমেদ
Image of তারেক আহমেদ
Image of তারেক আহমেদ
Image of তারেক আহমেদ
Image of তারেক আহমেদ
Image of তারেক আহমেদ
Image of তারেক আহমেদ

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

এটিএম তুরাব

মো: তোফাজ্জল হোসেন

মোস্তাক আহমদ

মো: আনাছ মিয়া

জয় আহমেদ হাসান

মিনহাজ আহমদ

ওয়াসিম

রিপন চন্দ্র শীল

মো: সোহেল আহমদ

পঙ্কজ কুমার কর

ময়নুল ইসলাম

মো: মোনায়েল আহমেদ

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo