জন্ম তারিখ: ১৭ জানুয়ারি, ১৯৬৮
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১০ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা
পেশা : কৃষিকাজ, শাহাদাতের স্থান : ইসিইউ, পপুলার মেডিকেল কলেজ।
শহীদুল খান ১৯৬৮ সালে ১৭ জানুয়ারি মাদারিপুর জেলার কালকিনী উপজেলায় পিতা লালু খান ও মাতা চাহেরনের সংসারে জন্ম গ্রহণ করেন। পেশায় তিনি কৃষক ছিলেন। কৃষিকাজের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এলাকায় বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় ভূমিকা রাখতেন। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট স্বৈরাচারী সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে একে একে সমস্ত বিরোধী দল ও তাদের প্রতিদ্বন্ধীদের দমন করতে থাকে। শেখ হাসিনা ও তার অবৈধ সরকার কয়েকটি বড় কেলেংকারী ও গণহত্যার জন্য দায়ী। এসব দূর্নীতি ও হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার শুরু হলে আওয়ামী লীগ ও তার প্রত্যেক সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ ও চাটুকার সমর্থকদের ১০০ বছর কারাদন্ড প্রদান করলেও তা খুব কম হয়ে যাবে। ২০০৬ সালে জোট সরকারের শেষ মুহুর্ত্বে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে নির্দেশ দেয় লগি-বৈঠা দিয়ে বিরোধীদের হত্যা করতে। যার প্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবর বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ চলাকালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে পিটুনিতে তাৎক্ষনিক ৭ জন এবং বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ চলাকালে মোট ৪০ জন নিহত হয়। ২০০৮ সালে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে ক্ষমতায় এসেই পরিকল্পনা করে দেশপ্রেমিক সেনাদের হত্যা করার। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানার অভ্যন্তরে ভারতীয় ঘাতকদের মাধ্যমে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করে। পরবর্তীতে স্বাক্ষ্যদাতাদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি স্বৈরশাসক ও দূর্নীতিবাজ ভারত সৃষ্ট সরকার শেখ মুজিব ও তার হিংস্র রক্ষীবাহিনীকে নির্মূল করতে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধারা ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের মধ্য থেকে ৪ জনকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয় এবং ১ জনকে শেখ হাসিনা বুকে পা দিয়ে চেপে ধরে জবাই করেন। ২০১২ সালে সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকান্ড ছিল আলোচিত। যাতে খুনিরা আওয়ামীলীগের তাবেদারী করে শাস্তি থেকে রক্ষা পেয়েছিল। ২০১২ সালে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাসহ বিভিন্ন নেতাদের আন্যায়ভাবে ফাঁসি। মিথ্যা বানোয়াট যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগ তুলে এবং সেসব অভিযোগের কোন যাচাই-বাছাই না করে জামায়াত নেতা, আ কা মোল্লা, কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মতিউর রহমান নিজামীদের আটক করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া। এছাড়াও গোলাম আজম, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাইদী, সালাউদ্দিন কাদের প্রমুখ ব্যক্তিদের ফাঁসি প্রদান। ২০১৩ সালে ইসলাম ধর্মের অবমাননার কারণে হেফাজতে ইসলামের সম্মেলনে নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা। ২০১৭ সালে ভারতের সাথে দেশ বিরোধী গোপণ চুক্তি। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দেশের ইতিহাসে বড় দুইটি শেয়ার কেলেংকারীর ঘটনা ঘটে। ১৯৯৬ সালে যখন শেখ হাসিনা প্রথমবারের মত ক্ষমতায় আসে তখন ঐ বছরের শেয়ার বাজারে ঘটে মহা র্দূনীতি। যেখানে ৪০ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়। নভেম্বর-ডিসেম্বরে এই ঘটনা ঘটে। এই কেলেঙ্কারিতে যাদের নাম আলোচনায় আসে এবং যাদের নামে মামলা করা হয় তাদের মধ্য অন্যতম বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান ও আসিফ এফ রহমান। এছাড়াও রয়েছে, অলিম্পিক গ্রুপের মোহাম্মদ ভাই ও আজিজ মোহাম্মদ ভাই, টি কে গ্রুপের আবু তৈয়ব, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান, ডিএসইর সাবেক পরিচালক মুসতাক আহমেদ সাদেক প্রমুখ। এ ছাড়া ’৯৬ সালের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। স্থায়ীভাবে দেশের বাইরে চলে গেছেন বেশ কয়েকজন। ১৯৯৭ সালের ২ এপ্রিল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ নিয়ে মামলা করা হয়। মামলার পর পরই অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। নিম্ন আদালতে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর দিনই শাইনপুকুর হোল্ডিংসের মালিক শেখ হাসিনার বর্তমান উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এবি সিদ্দিকুর রহমান, বেঙ্মিকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সালমান এফ রহমান, সোহেল এফ রহমান ও ডিএইচ খান উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। শুধু জামিনই নয়, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই গঠন করা যাবে না বলে উচ্চ আদালত থেকে জানানো হয়। উচ্চ আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে এসইসি, অজানা কারণে সেই আপিলের নিষ্পত্তি আজ পর্যন্ত হয়নি। ৮ ডিসেম্বর ২০১০, বুধবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত সোয়া ঘণ্টায় শেয়ারবাজার থেকে কত টাকা হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছিল তার পরিসংখ্যানে কেউ বলেছে ১৮ হাজার কোটি টাকা, কেউ বলেছে ২২ হাজার কোটি টাকা। আবার কারো কারো মতে ৮৬ হাজার কোটি টাকা। ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখের হিসাবের সঙ্গে এর আগের অন্তত ১৫ দিনের হিসাব মিলালে ৮৬ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে যাওয়া বাস্তব ভিত্তি পায়। তবে সে ৮৬ হাজার কোটি টাকা, পরবর্তী সময়ে যাঁরা অভিযুক্ত হয়েছেন তাঁরা একা নিতে পারেননি। সে টাকা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছেও গিয়েছে। ফর্মুলাটি ছিল নেই-দেই, নেই-দেই, নেই-দেই, নেই আর-দেই না। ৮ ডিসেম্বর এসে দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। একবারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী সে টাকা নেয়নি, নিয়েছে পাঁচ থেকে ছয়জন ব্যক্তি। যাদের ছবি প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায়। তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের নাম উঠে এসেছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ডিএসই, সিএসই, এসইসি, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা সবাই নিশ্চিত হয়েছে পাঁচ-ছয়জন দুরাচারের বিষয়ে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, অর্থমন্ত্রী তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরও বলেছিলেন, তাদের নাম প্রকাশ করা যাবে না; করলে অসুবিধা আছে। আওয়ামী সরকার আরো যেসব কেলেংকারীর সাথে জড়িত বলে জানা যায় তা হলো- হলমার্ক গ্রুপ ঋণ কেলেংকারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ ঋণ কেলেংকারি, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগ কেলেঙ্কারি। বাংলাদেশে বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর তদারকির কাজ পেতে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী, রাজনীতিক ও প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার প্রস্তাব দেয় কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি-লাভালিন। এই অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর ৩০০ কোটি ডলার ব্যয় সাপেক্ষ পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিতে অস্বীকৃতি জানায় বিশ্বব্যাংক। এরপর অন্যান্য দাতা সংস্থা পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি বাতিল করে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরামর্শকের কাজ পাওয়ার জন্য দশ শতাংশ ঘুষের প্রস্তাব দেয় এসএনসি। এর মধ্যে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের জন্য ৪ শতাংশ, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর জন্য ২ শতাংশ, চিফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরীর ভাই মুজিবুর রহমান নিক্সনের জন্য ২ শতাংশ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমানের জন্য ১ শতাংশ এবং সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার জন্য ১ শতাংশ ঘুষ বরাদ্দ করা হয়েছিল। এসএনসি-লাভালিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ সাহার ডায়রিতে এ হিসাব লেখা ছিল। হাসিনা আমলে কয়েকটি ব্যাংকের কেলেংকারী ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি- ক্ষমতায় আসার পর বেসিক ব্যাংকে রাজনৈতিক বিবেচনায় চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয় শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে। এরপরই ব্যাংকটিতে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। যার পরিমান প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। ফারমার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারি- মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী ঋণ জালিয়াতি, দুর্নীতি-অনিয়ম ও লুটপাট করেই কেবল ক্ষান্ত হননি, গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে নিজেদের অ্যাকাউন্টে অর্থ সরিয়ে নেয়ার মতো গুরুতর অপরাধ করতেও পিছপা হননি তারা। সোনালী ব্যাংকে সুরঙ্গপথে চুরি ও অর্থ কেলেঙ্কারি- সোনালী ব্যাংকে সুড়ঙ্গ কেটে একই পদ্ধতিতে দুইবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রথম চুরির পরিমান ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে চুরি হয় ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৮৮৪ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি- ২০১৬ সালে অজ্ঞাতপরিচয় হ্যাকাররা ভুয়া ট্রান্সফার ব্যবহার করে নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে সুইফটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লক্ষ ডলার অর্থ হাতিয়ে নেয়।। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা এবং ৮ কোটি ১০ লক্ষ ডলার চলে যায় ফিলিপিনের জুয়ার আসরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঐ ঘটনাকে এই মূহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে । বড় ব্যাংক তহবিল চুরির একটি বলে ধরা হয়। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা অবহেলা অথবা ইচ্ছাকৃত যোগসাজশেই এই ভয়াবহ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে বলেও পর্যবেক্ষণে প্রমানিত হয়। এদিকে চুরির কয়েক বছর পার হলেও এখনো এই ঘটনায় ব্যাংকের ভেতরে কারা জড়িত তা বের করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। চুরি হওয়ার সেই ঘটনা সেসময় প্রায় একমাস তা গোপন রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেষ পর্যন্ত এর দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হয় তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে। অর্থ চুরি নিয়ে সেসময় সরকারিভাবে একটি তদন্তও হয়। তবে সেই তদন্ত প্রতিবেদনটি পরে আর আলোর মুখ দেখেনি। আওয়ামী আমলের লুটপাট- দূর্নীতির ফলে দেশপ্রেমিক জনতা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ছিল। দেশে আন্দোলনের জন্য বিভিন্ন ইস্যু তৈরী হলেও ঐক্যবদ্ধভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সম্ভব হচ্ছিলনা। আওয়ামী আমলের শুরু থেকে যত গুলো প্রতিবাদী আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তার সবগুলো আওয়ামীলীগ দমণ করেছিল খুবই নির্মমভাবে। তারপরেও ছাত্র-জনতা অপেক্ষায় ছিল পরিবর্তনের। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনটি দমন করতে শেখ হাসিনা অতীতের মতো গনহত্যার নির্দেশ প্রদান করে। ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করে। তাদের ইচ্ছা ছিল সাধারণ ছাত্র-জনতাকে রাজপথে জামায়াত-শিবির অভিযোগ তুলে নির্মমভাবে খুন করবে। জুলাই মাস জুড়ে সরকারী বাহিনীর হাতে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ এবং শত শত মানুষ নিহত হলেও আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। ছাত্র-জনতা আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেনি। ১ আগস্টে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়ায় গণহত্যার কথা জেনে যায় মানুষ। ৪ আগস্ট দেশব্যাপী প্রতিরোধ শুরু হয়। ছাত্র নেতারা মার্চ ফর ঢাকা কর্মসূচী ঘোষণা করে। দেশবাসীকে বঙ্গভবন ঘেরাও করতে অনুরোধ জানায়। ৫ আগস্ট দেশবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে রাজপথে নেমে পড়ে। অনেকে বাসায় বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখে আসে। শহীদ হলে যাতে সবাই তাকে ক্ষমা করে দেয়। ছাত্র-জনতার কেউ কেউ কাগজে ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখে তা পকেটে রেখে রাস্তায় নেমে আসে। রাজপথের বিপ্লবীরা জানে হাসিনার খুনি বাহিনীর বুলেট যেকোন সময় তাদের শরীরে এসে বিদ্ধ হতে পারে। ভয়-ডরহীন এমন জনতাকে রুখে দেয়ার সাহস ঘৃণিত মুজিব কন্যা হাসিনার ছিলোনা। সকাল সকাল সেনাপ্রধান ওয়াকারের সহায়তায় শেখ হাসিনা তার অপর দূর্নীতিবাজ ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ভারতে পালিয়ে যায়। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে তার খুনি বিভিন্ন বাহিনী যেমন- পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি প্রভৃতিকে গণহত্যার নির্দেশ দিয়ে যায়। একারণে ৫ আগস্ট হাসিনার পলায়নে সারাদেশে ছাত্র-জনতা খুশিতে বিজয় মিছিলে বেরিয়ে এলে স্বৈরাচারী সরকারকে যারা ১৫ বছর টিকিয়ে রেখেছিল সেসব খুনি বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়। রক্তাক্ত হয় রাজপথ। খুন হয় জনতার একাংশ। আহত জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা খুনি হাসিনার সন্ত্রাসী ও চাটুকারদের আস্তানায় হামলা চালায়। আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন অফিসে আগুন দেয়। শহীদুল খান মার্চ ফর ঢাকা কর্মসূচীতে অংশ নিতে মাদারিপুর থেকে ঢাকায় ছুটে আসেন। তিনি কোথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা তার পরিবার জানতে পারেনি। ঢাকা মেডিকেল থেকে ফোন যায় বাড়িতে। শহীদুল খানের পরিবার জানতে পেরে ঢাকায় ছুটে আসেন। ঢাকা মেডিকেল থেকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পপুলার মেডিকেলে স্থানান্তর করেন। ১০ আগস্ট আইসিইউ তে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অর্থনৈতিক অবস্থা নিজেদের বাড়ি ছাড়া আর কোন জমি নেই। ছোট সন্তান বেকার। বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আর্থিক অবস্থা দূর্বল থাকায় যেতে পারছেননা। ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : শহিদুল খান জন্ম : ১৭ জানুয়ারি ১৯৬৮ পেশা : কৃষি কাজ পিতা : লালু খান মাতা : চাহেরন স্ত্রী : মাহমুদা বেগম সন্তানদের তথ্য : ১. সুমন খান- প্রবাসী, ২. আব্বাস খান, প্রবাসী, ৩. হাফিজ খান, বেকার, ৪. লায়লা বেগম, গৃহিনী স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা : খান বাড়ি, গ্রাম: নতুন চর দৌলত খান, ডাকঘর: চর দৌলত খান, উপজেলা: কালকীনি, মদারিপুর ঘটনার স্থান : ঢাকা আক্রমণকারী : পুলিশ আহত হওয়ার সময় : ৫ আগস্ট, বিকাল ৩ টা (আনুমানিক) আঘাতের ধরন : বুকে গুলি মৃত্যুর তারিখ ও সময়, স্থান : ১০ আগস্ট ২০২৪, আইসিইউ, পপুলার মেডিকেল কলেজ শহীদের কবরের বর্তমান অবস্থান : খানবাড়ি কবরস্থান প্রস্তাবনা ১. মাসিক ও এককালীন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা ২. ছোট ছেলেকে চাকুরী প্রদানে সহযোগিতা করা