Image of সুমাইয়া বেগম

নাম: সুমাইয়া বেগম

জন্ম তারিখ: ১০ জানুয়ারি, ২০০৪

শহীদ হওয়ার তারিখ: ২০ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : গার্মেন্টস কর্মী, শাহাদাতের স্থান : ৩৭৮, রোড-৪, ১ নং ওয়ার্ড পাইনাদি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

শহীদের জীবনী

শহীদ সুমাইয়া বেগম বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতা মৃত সেলিম মাদবর এবং মাতা আসমা বেগম। পিতৃহীন আসমা বেগমের দু'বছর পূর্বে বিবাহ হয়েছিল জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। বিবাহের পর থেকে স্বামী জাহিদ সুমাইয়া বেগমের কোনো খোঁজ খবর নিতেন না ফলে বাধ্য হয়ে সুমাইয়া গার্মেন্টসে চাকরি নেন। পরবর্তীতে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়। এ পর্যায়ে সুমাইয়া গর্ভবতী হলে স্বামী জাহিদ হোসেন যৌতুক হিসেবে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। শহীদ সুমাইয়া বেগম টাকা দিতে অপারগ হলে স্বামী জাহিদ হোসেন আবারো তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। খোঁজ খবরই আর নিতেন না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে এক পর্যায়ে পুলিশ-র‌্যাব আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার হতে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় একুশে জুলাই নিজ বাড়ির ছাদে শহীদ সুমাইয়া বেগম গুলি বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সুমাইয়াকে খোঁজে তাঁর সন্তান ২০ জুলাই সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে সুমাইয়া আক্তার (২০) বাসার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তাঁর আড়াই মাস বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তিনি পরিবারের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদিতে একটি ভবনের ছয়তলায় বাস করতেন। সুমাইয়ার মা আসমা বেগম গত রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় বাইরে সংঘর্ষ চলছিল। র‌্যাবের হেলিকপ্টার আকাশে উড়ছিল। তিনি হেলিকপ্টার দেখতে বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলেন। ওই সময় মেয়ে সুমাইয়া শিশু সন্তানকে ঘুম পাড়িয়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান। হঠাৎ করেই সুমাইয়া ঢলে পড়তে থাকেন। আসমা বেগম বলেন, তিনি ভেবেছিলেন মেয়ে হয়তো ভয় পেয়েছে। সুমাইয়াকে জড়িয়ে ধরার পর দেখেন তাঁর মাথা থেকে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। সুমাইয়ার স্বামী জাহিদ হোসেন কাঁচপুরে একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। সুমাইয়া মায়ের কাছে গিয়েছিলেন সন্তান হওয়ার আগে। আসমা বেগম বলেন, সুমাইয়ার মেয়ে সোয়াইবা এখন তাঁর কাছেই আছে। সে মায়ের স্পর্শ খোঁজে, বুকের দুধ খোঁজে। ঘুমানোর সময় বুকের দুধের জন্য ছটফট করতে থাকে। আসমা বেগমের প্রশ্ন, ‘মেয়ে হত্যার বিচার কার কাছে দেব?’ শাহাদাতের প্রেক্ষাপট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে নিজ দেশের জনগণের ওপর কি জঘন্যই না নারকীয় তান্ডব চালিয়েছিল ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার সরকার। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হাসিনা সরকার নিজ দেশের জনগণের ওপর হেলিকপ্টারের ওপর থেকে গুলি বর্ষন করবে তা মানুষের কল্পনারও বাইরে ছিল। একই ভাষাভাষী নিজ দেশের শাসকগোষ্ঠী আন্দোলন দমাতে কত ভয়ানক পন্থা অবলম্বন করতে পারে তার অন্যতম একটি উদাহরণ হল শহীদ সুমাইয়া বেগমের হত্যাকাণ্ড। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য তৎকালীন সরকারের অনুগত পুলিশ ও র‌্যাব বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করতে থাকে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সুমাইয়া তার বাসার ছাদে গেলে হঠাৎ হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া একটি গুলি তার মাথায় ঢুকে পেছন দিক থেকে বের হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শহীদ সুমাইয়া বেগম। শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য নাম : শহীদ সুমাইয়া বেগম পিতার নাম : মৃত সেলিম মাদবর মাতার নাম : আসমা বেগম স্থায়ী ঠিকানা : আলিমাবাদ, ইউনিয়ন: আলিমাবাদ, থানা: মেহেন্দিগঞ্জ, জেলা: বরিশাল বর্তমান ঠিকানা : ৩৭৮, রোড-৪, ১ নং ওয়ার্ড পাইনাদি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ বৈবাহিক অবস্থা : বিবাহিত আহত হওয়ার স্থান : ৩৭৮, রোড-৪, ১ নং ওয়ার্ড পাইনাদি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ আহত হওয়ার সময়কাল : ২০ জুলাই, ২০২৪ সময়: সন্ধ্যা ৬:০০ টা (নিজ বাসার ছাদে) শহীদ হওয়ার সময় : সন্ধ্যা ৬টা (নিজ বাসার ছাদে) যাদের আক্রমনে শহীদ : পুলিশ এবং বিজিবি প্রস্তাবনা ১. শহীদ পরিবারের জন্য একটি স্থায়ী আবাসন তৈরি করে দেওয়া ২. শহীদের পরিবারের জন্য নিয়মিত ভাতার ব্যবস্থা করা ৩. শহীদের মাতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ৪। সন্তানের ভরণপোষণ ও শিক্ষার সকল দায়িত্ব গ্রহণ করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of সুমাইয়া বেগম
Image of সুমাইয়া বেগম
Image of সুমাইয়া বেগম

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

শাখাওয়াত হোসেন শাহাদাত

মোহাম্মদ সাইফুল হাসান

মো: নজরুল ইসলাম

আহসান কবির (শরিফ)

তাহমিদ আব্দুল্লাহ অয়ন

মো: আবদুর হান্নান

মো: ইসমাইল মোল্লা

মো: রশীদ

রমজান মিয়া জীবন

মোস্তফা জামান সমুদ্র

আবদুল্লাহ আল রোমান

মো: মোহসীন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo