জন্ম তারিখ: ৬ আগস্ট, ২০১২
শহীদ হওয়ার তারিখ: ২১ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা
পেশা :শিক্ষার্থী, শাহাদাতের স্থান :আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাভার এনাম মেডিকেল কলেজে যাওয়ার মাঝপথে।
শহীদ ছায়াদ মাহমুদ খান ২০১২ সালের ৬ আগস্ট মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত ধল্লা ইউনিয়নের ধল্লা খান পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করে। তাঁর পিতা মো: বাহাদুর খান ও মাতা মোছা: হালিমা আক্তারের দ্বিতীয় সন্তান ছিলো সে। ধলেশ্বরী নদীর কোল ঘেঁষা গ্রাম ধল্লাপাড়া। গাছ-গাছালির সমারোহ আর পাখ-পাখালির কিচিরমিচিরের মাঝেই প্রতিটি সকাল শুরু হতো ছোট্ট ছায়াদ মাহমুদের। সূর্য্যি মামার সাথে ঘুমের ঘোর ভাঙলে হয়তো, সে গ্রামেরই মেঠোপথে হারিয়ে যেত তাঁর দুরন্ত শৈশব। ছায়াদ মাহমুদের যখন জন্ম, তখন প্রবাসে ছিলেন তাঁর পিতা। তখন মমতাময়ী মায়ের আঁচল তলেই কেটেছে তাঁর মধুর দিন গুলো। একটা সময় পেরিয়ে, ছোট্ট ছায়াদকে দেখার প্রতিক্ষা শেষ হয়, তাঁর বাবার। ছোট্ট ছায়াদকে পেয়ে যেন, তিনিও শিশু হয়ে যান। নানা খুনসুটিতে মাতিয়ে রাখেন, তাঁর ছোট্ট সন্তান ছায়াদকে। তবে, অল্প কিছুদিন পরেই আবার জীবিকার তাগিদে প্রবাসে চলে যেতে হয় তাকে। ছায়াদ দ্বায়ী ইলাল্লাহ হতে চায়, ছড়িয়ে দিতে চায় ইসলামের মাধুর্য গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছায়াদের মনন জুড়ে স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে রাখলেও, একপর্যায়ে শহরে চলে আসতে হয় তাঁর পুরো পরিবারটিকে। মূলত তাঁর বড় বোন তাসলিমা খানম এসএসসি পরীক্ষার পর উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির সুযোগ পায় সাভার এলাকার একটি কলেজে। তাই ছোট দুই সন্তান ছায়াদ আর নুরসাতকে নিয়ে সাভারের মডেল কলেজ সংলগ্ন শাহীবাগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেয় তাঁর পরিবার। ছোট্ট থেকেই একমাত্র ছেলে সন্তানকে ইসলামের একজন দ্বায়ী হিসেবে দেখতে চেয়েছে তাঁর পরিবার। ছায়াদও দ্বিমত করেনি কারণ গ্রামে থাকতে খুব অল্প বয়স থেকেই মসজিদে আনাগোনা তাঁর। খেলাধুলা যতই থাকুক, আজান কানে পৌঁছানো মাত্র মসজিদে যেতে বিন্দু মাত্র সময় নষ্ট করতো না ছায়াদ। খেলার সাথীদের নিয়েই নামাজে দাঁড়িয়ে যেত সে। এসব কারণেই ছায়াদের হাতেখড়ি হয়, মাদ্রাসাতেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মারকাযুল উলুম আশরাফিয়াতে কুরআনের ২ পারা হিফজ্ শেষ করে ছায়াদ। তবে ছায়াদ চাইছিলো হিফজের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় গুলোতেও সমান পারদর্শী হতে। কারণ সে বিশ্ববরেণ্য নন্দিত আলেম মাওলানা মিজানুর রহমান আযহারীর মতো মাধুর্যতায় ইসলাম ছড়িয়ে দিতে চাইতো পৃথিবী জুড়ে। তাই পরবর্তীতে জাবাল-ই নুর মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেওয়া হয় তাকে। এখানেই স্বপ্নের চাষ হতে থাকে তাঁর। প্রভাতের আলোর কিরণ ছড়ানোর আগেই, ঘুম থেকে ওঠে ছায়াদ মাহমুদ। সুবহে সাদিকে সালাতুল ফজর আদায় করার পরপরই কুরআনের হিফজ্ শুরু হতো তাঁর। এরপর বাসায় অল্প কিছু সময়ের জন্য বিরতিতে আসলেও আবার দ্বিতীয় দফায় মাদ্রাসায় যেতে হতো ছায়াদকে। এভাবেই চলছিলো তাঁর দ্বায়ী ইলাল্লাহ হয়ে ওঠার স্বপ্নের বিনির্মাণ। ফুটবল যেন ছায়াদের প্রাণভোমরা ছায়াদ ছোট থেকেই ক্রীড়াপ্রেমী কিশোর। তবে ফুটবল যেন সে ভালোবাসাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলো। পড়াশোনার মাঝে অল্প কিছু সময় ফুরসত পেলেই ফুটবল নিয়ে মাঠে চলে যেত সে। যদি কখনো মাঠে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় না থাকতো, তবে বাড়ির কোন এক কোণে ফুটবল নিয়ে চর্চা চলতো তাঁর। প্রতিদিন বিকেলেও নিয়ম করে মাঠে যেত সে। ভালো খেলোয়াড় হওয়ার দরুন তাঁর বন্ধুরা যথেষ্ট সমাদরে রাখতো তাঁকে। আর প্রতি শুক্রবারের সাপ্তাহিক ছুটিতে, গ্রামের বাড়ি যাওয়া থেকে আটকানো যেত না তাকে। সাভার থেকে কখনো কখনো নিজেই চলে যেত, মানিকগঞ্জের নিজ গ্রামে। কারণ গ্রামের সে সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ মাঠ কি আর এই ঢাকা শহরে পাওয়া সম্ভব? স্বজনদের অনুভূতি ছায়াদ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তাঁর বাবা বলেন, "এই মাসখানেক আগে ফুটবল খেলার জন্য বুটজোড়া কিনার আবদার করলো সে। তখন আমি পরিবার সহ গ্রামের বাড়িতে। গ্রামের বাজারে ফুটবল বুট পাই কই! আশেপাশের কয়েকটি মার্কেটে তন্নতন্ন করে খোঁজার পর পাওয়া গেল সেই কাঙ্ক্ষিত বুট, পছন্দও হলো তাঁর। তবে বুটের দাম ১২০০ টাকা আর তখন বাড়িতে আসার ভাড়া ছাড়া আর কানাকড়িও নেই। তাই বুট কিনলেও এঙ্কলেট কেনার টাকা নেই আমার কাছে। তবে বুট পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছায়াদ বললো, এঙ্কলেট সে তাঁর জমানো টাকায় কিনে নেবে।" কথা গুলো বলতেই, কান্নায় ভেঙে পড়লেন শহীদ ছায়াদের পিতা। সেদিন মিছিল থেকে আর ফিরলো না ছায়াদ ২০ জুলাই তৃতীয় দিনের মতো সারা বাংলাদেশ ইন্টারনেটবিহীন ছিল। সেনাবাহিনীকে দেশের বিভিন্ন অংশে কারফিউর টহল দিতে দেখা যায়। আন্দোলন তখনও চলমান। সারাদেশে ইতোমধ্যে শহীদের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। আগের দিনও সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন কয়েকশ মানুষ। বিশেষ করে সেদিন ঢাকার বাড্ডা, রামপুরা, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও মোহাম্মদপুরে সংঘর্ষ তীব্র হয়। এরই প্রতিবাদে পরদিন ২১ জুলাই, আন্দোলনকারীরা সাভার থানাধীন সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সাভার নিউ মার্কেটের দক্ষিণ পূর্ব দিকের কোনায় চাঁপাইনগামী রাস্তায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা আরও পিশাচের দলের সাথে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের বেধড়ক পিটায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করে। সেই বর্বরোচিত হামলার নেতৃত্ব দেয় সাভারের চিহ্নিত সন্ত্রাস আর একাধিক হত্যা মামলার আসামি রানা ওরফে ব্যস্ত রানা, সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক সহ বেশ কয়েকজন। সেই নৃশংস হামলায় সকাল থেকেই সন্ত্রাসীদের সহায়তা করে খুনি হাসিনার শাসনামলের অধিকাংশ অপকর্মের দোসর বাংলাদেশ পুলিশ। একসময় আন্দোলনস্থল থেকে গোলাগুলির আওয়াজ তীব্র হতে থাকে, পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আন্দোলনকারীদের স্লোগান। তাদের ভাড়া নেওয়া বাড়িটির ছাদ থেকে সবটুকুই প্রত্যক্ষ করছিল সে ও তাঁর বড় বোন। একসময় চুপিচুপি ছাদ থেকে নেমে আসতে গেলে, ছায়াদের ১০ বছর বয়সী খালাতো ভাই হাসিব দেখে ফেলে। সে কই যাচ্ছে জানতে চাইলে ছায়াদ মাহমুদ বলে, "আন্দোলনে যাচ্ছি, বাসায় বলিস না যেন।" “দেশ ভাসছে শত শহীদের তপ্ত রক্তস্রোতে কিশোর ছায়াদ মিছিলে গেল, সঙ্গী তাঁদের হতে।” হাসিবকে জানিয়েই সাভার এলাকায় চলে যায়, ছায়াদ মাহমুদ। সেখানে দ্বিতীয় দফায় গোলাগুলি শুরু হলে, বিকাল ৫টার কিছুক্ষণ পর ছায়াদ মাহমুদ সহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম বয়োবৃদ্ধ শরবত বিক্রেতা শেখ শামীম (৬৫), প্রতিবন্ধী কুরবান শেখ (৫২), সাভারের একটি দোকান কর্মচারী ফারুক(৪০) সহ অসংখ্য মানুষ। ঘাতক সে বুলেটটি ছায়াদের বাম পায়ের উরুতে গভীর ক্ষত করে, অন্যপাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে একটু দূরে এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছায়াদ মাহমুদ। তখনও এলোপাথাড়ি গোলাগুলি চলছে। এর মধ্যেই রিকশা চালক রনির (২০) বুক বরাবর গুলি লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। তৎক্ষণাৎ তাকে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করতে গেলে তিনি জানান, “আমি হয়তো বাঁচমু না কিন্তু সামনে ছোট এক ছেলের পায়ে গুলি লাগছে। ওরে আপনারা বাঁচান।” ছায়াদকে উদ্ধার করতে যায় আন্দোলনরত অন্যান্য ছাত্র-জনতা। ছায়াদের হয়তো তখনও শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল, তবে তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে আরেক দফা গুলি শুরু হয়। গোলাগুলি কিছুটা কমে গেলেই, ছায়াদকে রাস্তা থেকে ভ্যানে তুলে স্থানীয় একটি হাসপাতালের দিকে নিয়ে যায় তারা। সময় তখন বিকাল ৫: ৪০ মিনিট, আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখান থেকে ছায়াদকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজের দিকে নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে শাহাদাত বরণ করে সে। সেদিন বেঁচে ফিরতে পারেনি ছায়াদ মাহমুদ, বেঁচে ফেরেননি মুমূর্ষ ছায়াদকে বাঁচানো জন্য অনুরোধ করা রিকশা চালক রনিও। জীবনের শেষ মুহূর্তেও বীরত্ব আর মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে শহীদ রনি ও নির্ভীক কিশোর ছায়াদ মাহমুদ অন্তর। মনুষ্যত্বহীনেরাই কলঙ্কিত করেছিলো আমার বাংলাদেশ ততক্ষণে এনাম মেডিকেলে পড়ে আছে শহীদ ছায়াদ মাহমুদের নিথর দেহ। অন্যদিকে তাঁকে খুঁজে দিশেহারা পরিবার। তন্নতন্ন করে তাকে খুঁজলো সাভারের অলিগলিতে। অবশেষে, স্থানীয় একজনের মুঠোফোনে আহত ছায়াদের শরীরের অর্ধাংশ আর একজন সাংবাদিকের ধারণ করা ভিডিও চিত্র দেখে তাকে শনাক্ত করেন পিতা বাহাদুর খান। সঙ্গে সঙ্গে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে চলে গেলেন, ছায়াদের মা-বাবা আর খালাতো ভাই নাহিদ। গিয়ে আর সন্তানকে জীবিত দেখতে পারলেন না, মা-বাবা। তাঁদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠলো এনাম মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ। ঘাতকের হিংস্রতা তখনো শেষ হয়নি, অল্প কিছুক্ষণ পর মেডিকেলে এসে কিছু পুলিশ সদস্য ছায়াদের লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে লাগলো আর দ্রুত লাশ না নিয়ে গেলে ঝামেলা তৈরী হবে বলে হুমকিও দেওয়া হলো তাদের। তখন দেশজুড়ে কারফিউ চলছে, জনমানবহীন এলাকায় পরিণত হয়েছে সাভারের আশপাশ। তবে এরমধ্যেও মুহুর্মুহু গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। অনেক চেষ্টা করার পরেও কোন অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে পারল না বাহাদুর খান। নিরুপায় পিতা শেষমেশ একটি অটো রিকশা জোগাড় করে, তাতেই ছায়াদের নিথর দেহ নিয়ে গ্রামের দিকে চললো তারা। রাত সাড়ে ১১টারও কিছু সময় পরে নিজ গ্রামে পৌঁছাতে সক্ষম হলো তারা। নরপিশাচদের বর্বরতার তখনও বাকি অনেক! একটু পরেই বাহাদুর খানের বাড়িতে এলো ধল্লা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান জাহিদ ভূঁইয়া, দেলোয়ার খান সহ বেশ কিছু চিহ্নত আওয়ামী সন্ত্রাসী। ওরা বাড়িতে এসে দ্রুতই রাতের অন্ধকারে ছায়াদের মরদেহ দাফনের জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকলো। ছায়াদের পরিবারের ধর্মীয় অনুশাসন পরখ করে জামায়াত-শিবিরের তকমা দিয়ে হুমকিও দিতে লাগলো। তবে সন্তান হারিয়ে তখন আর জীবনের মায়া নেই বাহাদুর খানের, সন্ত্রাসীদের মুখের ওপর বললেন, "গোসল-জানাজা ছাড়া, সন্তানকে দাফন করবেন না তিনি।" ছায়াদের পিতার এমন দৃঢ় মনোভাব, কিছু নিকটাত্মীয় আর প্রতিবেশীদের অনড় অবস্থানের কারণে দ্রুতই সেখান থেকে গা-ঢাকা দিলো ওরা। জানাজা ও দাফন পরদিন সকালে জানাজা হলো শহীদ ছায়াদ মাহমুদ অন্তরের। হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করলো তাঁর নামাজে জানাজায়। জানাজার পূর্বে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লো, ধল্লাখানপাড়া মসজিদের ইমাম আর মুসল্লিরা। এভাবেই সবার মনে মায়ার আবেশ আর অসংখ্য স্মৃতি রেখে, দুনিয়ার সফর শেষ হলো শহীদ ছায়াদ মাহমুদ অন্তরের। জানাজা শেষে ধল্লা বাজার কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। শহীদ পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদ ছায়াদের বাবা বাহাদুর খান জীবন যুদ্ধের এক সংগ্রামী যোদ্ধা। জীবনের বিরাট একটা অংশ কাটিয়েছেন প্রবাসে। সর্বশেষ ২০২২ সালে সৌদি আরব থেকে দেশে আসার পর, দেশেই পোল্ট্রি মুরগীর ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তবে প্রথম বারেই বিরাট একটি ধাক্কা খান তিনি, সেবার সব মিলিয়ে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকার অর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন তিনি। সে ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি এখনো। তাই নিরুপায় হয়ে, আবারও জীবিকার তাগিদে প্রবাসে যাওয়ার জন্য কাগজ-পত্র প্রস্তুত করছেন তিনি। গ্রামে নিজেদের বসতভিটা আর ছোট্ট একটা বাড়ি থাকলেও সব মিলিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের। পাশাপাশি শহীদের দুই বোনের পড়ালেখার খরচ, আর ঢাকায় বাড়ি ভাড়া দিতে যথেষ্ট হিমসিম খেতে হয় তাকে। এই পরিবারে শহীদের পিতা ছাড়া আর কোন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নেই। ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : মোঃ ছায়াদ মাহমুদ খান (অন্তর) জন্ম তারিখ : ৬ আগস্ট, ২০১২ পেশা ও প্রতিষ্ঠান : শিক্ষার্থী; জাবাল-ই নূর দাখিল মাদ্রাসা, সাভার, ঢাকা পিতার নাম : বাহাদুর খান পিতার পেশা ও বয়স : প্রবাসী, তবে বর্তমানে দেশেই বেকার অবস্থায় আছেন, ৪৮ বছর মাতার নাম : হালিমা আক্তার মাতার পেশা ও বয়স : গৃহিণী, ৩৫ বছর পরিবারের বর্তমান সদস্য সংখ্যা : ৪ জন সহোদর ভাই-বোনের নাম, বয়স, পেশা-প্রতিষ্ঠান ও সম্পর্ক ১. তাসলিমা খানম (২০), শিক্ষার্থী, গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদের বড় বোন ২. আফরোজা খানম নুসরাত (০৯), শিক্ষর্থী, জাবাল-ই নূর দাখিল মাদ্রাসা, সাভার, ঢাকা আহত হওয়ার স্থান : সাভার নিউমার্কেট এলাকায় আহত হওয়ার সময়কাল : ২০ জুলাই ২০২৪, বিকাল আনুমানিক ৫টা বাজার কিছু সময় পর নিহত হওয়ার স্থান : আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাভার এনাম মেডিকেল কলেজে যাওয়ার মাঝপথে নিহত হওয়ার সময়কাল : ২১ জুলাই ২০২৪, বিকাল ৫টা বেজে ৪০ মিনিটের সময় শহীদের কবরের অবস্থান : ধল্লা বাজার কেন্দ্রীয় কবরস্থান, সিংগাইর, মানিকগঞ্জ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: ধল্লাখানপাড়া, ইউনিয়ন: ধল্লা, উপজেলা: সিংগাইর, জেলা: মানিকগঞ্জ বর্তমান ঠিকানা : মহল্লা: জি১২/১, ব্যাংক কলোনী, উপজেলা: সাভার, জেলা: ঢাকা সহযোগিতা সংক্রান্ত এক বা একাধিক প্রস্তাবনা প্রস্তাবনা-১: শহীদ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পিতা বাহাদুর খানের জন্য আর্থিক সহযোগিতার দরকার, যাতে তিনি দেশেই কোন ব্যবসা করতে পারেন প্রস্তাবনা-২: শহীদের শিক্ষার্থী দুই বোনের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নিয়মিত কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা যেতে পারে