Image of মো: রশীদ

নাম: মো: রশীদ

জন্ম তারিখ: ৬ জুন, ১৯৮৪

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ব্যবসা (পুরাতন মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতেন) , শাহাদাতের স্থান : উত্তরা ১ নং সেক্টর

শহীদের জীবনী

শহীদ মো: রশিদ একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। তিনি ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যা আহরণ করে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে জীবিকা নির্বাহের লক্ষ্যে ঢাকা পাড়ি জমান। তিনি টঙ্গী বাজার ফায়ার সার্ভিসের পাশে টিআইসি গেট এর পার্শ্বে পুরাতন মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতেন। তার পরিবার বর্তমানে ছেলেকে দিয়ে ব্যবসা চালানোর চেষ্টা করছে। তার গ্রামে কোন ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি নেই। পরিবার চালানোর মত উল্লেখযোগ্য কোন আয় বর্তমানে নেই বললেই চলে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন ক্রমেই জনসাধারণের আন্দোলনে রূপ নেয়। এটি বৈষম্যবিরধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন হিসেবে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। শুরুতে সাধারণ ছাত্রদের অহিংস আন্দোলন ধীরে ধীরে ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী অভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত হতে থাকে। পর্যায়ক্রমে এ আন্দোলন শুধু ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না; হয়ে উঠে দেশের আপামর জনতার এক বিশাল গণঅভ্যুত্থান। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এই অভ্যুত্থানে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজপথে বেরিয়ে আসে। ক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে স্বৈরাচার সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু পদত্যাগের পূর্বে তিনি রেখে যান তার ঘৃণ্য ও বিকৃত মস্তিষ্কের অজস্র কীর্তি। এরই অংশ হিসেবে আন্দোলনকারী সহ অনেক নিরীহ নিরস্ত্র জনতার উপর লেলিয়ে দেয়া হয় ভয়ংকর বেপরোয়া হয়ে উঠা সশস্ত্র বাহিনী। তাদের গুলিতে শহীদ হয় মুক্তিকামী জনতা। সামগ্রিক ঘটনার বিবরণ ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন কেবল বাংলাদেশ নয় বিশ্ব ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ঘটনা হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। এ আন্দোলনে তরুণ থেকে বৃদ্ধ হাতে হাত রেখে অংশগ্রহণ করে যা বিশ্বে বিরল। দুর্নীতি আর অপশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কেবল জনসাধারণ নয়, ছাত্র সমাজের ভিতরেও তৈরি করে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও হতাশা। অধিকার আদায়ে সচেতন শিক্ষিত ছাত্রসমাজ এক সময় স্বৈরশাসন আর কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে থাকে এবং সর্বশেষ মহা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার ছিনিয়ে নেয়। ক্ষোভ আর হতাশা যখন নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সুরাহা হয় না তখন বিপ্লবই হয়ে ওঠে অপরিহার্য নিয়তি। ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলন তেমনি দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করে বিপ্লবী পরিবর্তন নিয়ে আসে। এ আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট রিজিম পরিবর্তন করে সফল হয় ছাত্র আন্দোলন। তবে এ আন্দোলনের প্রভাব অনেক গভীর ও ব্যাপক। জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলন সবচেয়ে বড় অর্জন মানুষে মানুষে সংহতিবোধ। ছাত্র-জনতা দল তৈরি করে বাড়িঘর ও উপাসনালয় পাহাড়া দেয়। বীর শহীদ মো: রশিদ ঢাকা জেলার অন্তর্গত কদমতলার শ্যামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ছিল। অভাবের তাড়নায় ৮ম শ্রেণীর পর তিনি আর পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেনি। পরিবারের হাল ধরতে বাধ্য হয়ে বেছে নেয় টাকা উপার্জনের পথ। পরিবারের হাল ধরতে বিভিন্ন কাজ করে অবশেষে টঙ্গীতে একটি দোকান ভাড়া করে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেন। মৃত্যুকালে তার পুরাতন মালামাল কেনা বেচার এই ব্যবসাটিই উপার্জনের অন্যতম উপায় ছিল। যা দিয়ে পরিবার চালাতেন। তার ১৫ বছরের একজন ছেলে আছে। সে মরকুন নতুন কুঁড়ি স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। তার ৭ বছরের ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া আরেকটি মেয়ে আছে। তিনিও পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ সোমবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ১ দফা দাবির প্রেক্ষিতে ডাকা ঢাকা লং মার্চ এ যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে সকাল ৮ টায় বের হন। তখন ঘড়ির কাটা আনুমানিক বিকাল ৪ টার দিকে ছাত্র-জনতার মিছিল উত্তরা ১ নং সেক্টরের মসজিদের সামনে আসলে স্বৈরাচারী হাসিনার ঘাতক পুলিশ বাহিনী তাদের উদ্দেশ্য করে ছাদের উপর থেকে গুলি বর্ষণ করে। মো: রশিদ তখন মিছিলের একেবারে সম্মুখ দিক দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন। ঘাতক বাহিনীর একটা গুলি এসে হঠাৎ তার মাথায় বিঁধে। তখনই তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়নে। ছাত্র-জনতা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে আগারগাঁও নিউরো সাইন্স হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পর্যবেক্ষণ করে মৃত ঘোষণা করেন। জানাযা ও দাফন শহীদের নামাজে জানাযা শেষে জুরাইন কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। মৃত্যুর সময় তাঁর একজন ছেলে ও মেয়ে ছিলো। সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে প্রত্যক্ষ সূত্রের মারফত জানা যায় যে শহীদ মো: রশিদ ব্যবসায়ী হিসেবে একজন ভালো মানুষ ছিলেন। গ্রাহকদের নিকট তাঁর আচরণ ও লেনদেন ছিল অমায়িক। আশেপাশের লোকজন তাঁকে খুবই ভালো জানতেন। প্রস্তাবনা ১। এককালীন ৫ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান। ২। মাসিক ১০০০০ টাকা হারে বার্ষিক পরিবারের প্রতি তদারকি করা। একনজরে শহীদের প্রোফাইল নাম : শহীদ মো: রশীদ বয়স : ৩৯ বছর, পেশা: ব্যাবসা পেশাগত পরিচয় : টঙ্গী বাজার ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন টিআইসি গেট এর পার্শ্বে পুরাতন মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতেন জন্ম : ৬ জুন ১৯৮৪ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: শ্যামপুর, থানা: কদমদলা, জেলা: ঢাকা বর্তমান ঠিকানা : মরকুলমধ্য পাড়া, টঙ্গী থানা এবং গাজীপুর জেলায় বাস করেন পিতা : ইসমাইল, পেশা ও বয়স : শ্রমিক ও ৬০ মাতা : রাশিদা বেগম। পেশা : গৃহিণী বয়স : ৫৫ পরিবারের সদস্য : ৩ ঘটনার স্থান : উত্তরা ১ নং সেক্টর মসজিদের সামনে আক্রমণকারীর সুনির্দিষ্ট নাম ও তথ্য : পুলিশ ও ছাত্র লীগ আহত হওয়ার সময়কাল : আনুমানিক ৫ আগস্ট বিকাল ৩.০০টা মৃত্যুর তারিখ ও সময় : ৫ আগস্ট বিকাল ৫.৩০ টা উত্তরা ১ নং সেক্টর মসজিদের সামনে শহীদের কবরের অবস্থান : জুরাইন

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: রশীদ
Image of মো: রশীদ
Image of মো: রশীদ

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান

মোহাম্মদ ফিরোজ তালুকদার

মোঃ বাবুল মিয়া

মো: মেহেদী হাসান

মোশারফ

আবদুল্লাহ আল রোমান

আল আমিন ইসলাম (সেলিম)

ইমরান হাসান

মোহাম্মদ নুরু

আহনাফ আবির আশরাফুল্লাহ

মো: হাছান মিয়া

পারভেজ হাওলাদার

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo