Image of ইমন মিয়া

নাম: ইমন মিয়া

জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ২০০৫

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্র, নরসিংদী আইডিয়াল কলেজ। শাহাদাতের স্থান : নরসিংদী জেলখানা মোড়।

শহীদের জীবনী

আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪-এ এই রোদবৃষ্টির বর্ষা-শরৎ ঋতুতে সূচিত হলো নতুন আরও এক অধ্যায়ের। এ দেশের তারুণ্য আমাদের দিশা দেখাতে চাইছে। জুলাইয়ের খরতাপে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পতন ঘটে কর্তৃত্ববাদী সরকারের। শুরু হয় নতুন বাংলাদেশ গঠনের কর্মযজ্ঞ। ইতিমধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে দক্ষ, যোগ্য ও গুণীজনদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অনেক মৃত্যু ও রক্তপাতের মধ্য দিয়ে অর্জিত এ নতুন সময়ে সকল বৈষম্য ও ভয়ের অন্ধকার দূর হবে। সব দুর্নীতি, প্রতিহিংসা, দমন-পীড়ন অতিক্রম করে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে মানবিক রাষ্ট্র। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দূর করা হবে বেকারত্ব। এই ধরনের চিন্তা চেতনা নিয়ে স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই বুক ভরা আশা লালন করছিলেন শহীদ মো: ইমন মিয়া পেশায় কৃষক পিতা কায়েম মিয়ার ঘরেই জম্ম গ্রহণ করছিলেন নরসিংদী আইডিয়াল কলেজের মেধাবী ও চৌকস শিক্ষার্থী শহীদ মোহাম্মদ ইমন মিয়া। পড়াশোনা শেষ না হতেই তিনি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে সত্য, সাম্য ও বৈষম্যহীন জাতি গঠনে জনতার এক দফা এক দাবি স্বৈরশাসক ও খুনি হাসিনা তুই কবে যাবি এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে জনতার কাতারে দাঁড়িয়েছিলেন। শহীদ মোঃ ইমন মিয়া গত ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে নরসিংদী জেলখানা মোড় শান্তি সমাবেশে অংশ নেয়। ছাত্র-জনতার এই গণআন্দোলনে স্বৈরাচারের নির্বিচার গণহত্যায় মৃত্যুর মিছিলে সর্বশেষ নাম মোঃ ইমন মিয়া ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি সচেতন ও দেশপ্রেমিক একজন মেধাবী তরুণ হিসেবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ইসলামী আদর্শের একজন ত্যাগী ও একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে মোঃ ইমন মিয়া জীবনের শেষ সীমা পর্যন্ত ন্যায্যতার আন্দোলনে ও দেশমাতৃকার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিরলস ভূমিকা পালন করে গেছেন। জীবন দিয়ে শহীদ ইমন দেশমাতৃকার প্রতি তার অপরিসীম ভালবাসা প্রমাণ করে গেল। শহীদ পরিচিত ও ঘটনা সংক্রান্ত বিবরণ দড়িচর গ্রামে কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণকারী মেধাবী ও চৌকস শহীদ ইমন মিয়া ছিলেন এক প্রতিবাদী ছাত্র। অভাব অনটনে থেকে নিজেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে ভর্তি হয়েছিলেন নরসিংদী আইডিয়াল কলেজে। স্বপ্ন পূরণে ছিল খুবই উদ্যমী ও কৌশলী। কোটা আন্দোলনের কারণে লালিত স্বপ্ন ভেঙে গেল। যা খুব হতাশা জনক। কেননা ১৮ জুলাই ২০২৪ বৃহস্পতিবার সকালে ইমন মিয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। নরসিংদী জেলখানা মোড়ে শান্তি সমাবেশে অংশ নেয়। হঠাৎ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসী ঘাতক পুলিশ বাহিনী কোনরকম সতর্কতা ছাড়াই শান্তিপ্রিয় ছাত্র জনতার উপর অনবরত গুলি ছুঁড়তে থাকে। ইমন মিয়া ছাত্রদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে এবং সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানায়। ছাত্ররা নিজেদের রক্ষার পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাৎক্ষণিক আহত ছাত্রদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করাসহ মারাত্মক আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর জন্য একদল ছাত্র বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ইমন পুলিশের নিক্ষিপ্ত টিয়ারশেল থেকে রক্ষা করতে ছাত্র-জনতাকে এছাড়া পুলিশের নিক্ষিপ্ত টিয়ারশেল গুলো দ্রুত পুলিশের অবস্থানের দিকেই ছুঁড়ে মারতে উপায় বাতলে দেয়। হঠাৎ সন্ত্রাসী পুলিশ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের থেকে নিক্ষিপ্ত একটি গুলি তার বুকে লাগে। ইমন মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। প্রচন্ড গোলাগুলির ভেতর ছাত্র জনতা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানাযা ও দাফন শহীদের মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯ জুলাই শুক্রবার বাড়ির পাশে তাঁর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। শহীদ পরিবারের পারিবারিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদ ইমন মিয়ার পিতা কায়েম মিয়া একজন কৃষক ও মাতা মর্জিনা বেগম গৃহিণী। শহীদ ইমন মিয়া পিতামাতার ছোট সন্তান ছিলেন। আদরের সন্তানকে তারা পড়ালেখা করাতেন এবং স্বপ্ন দেখতেন এই ছেলে বড় হয়ে তাদের দেখাশোনা করবে। পরিবারে দরিদ্রতা দূর হবে। ইমন মিয়ার অকাল মৃত্যুতে তার পুরো পরিবার ভেঙে পড়েছে। ইমন মিয়ার বাবা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অর্থনৈতিকভাবে তিনি অসচ্ছল। তার মাসিক আয় কমবেশি ৮ হাজার টাকা। জনাব কায়েম মিয়া বড় ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তিনি পরিবার নিয়ে ৪.৫ শতাংশ জমিতে একটি টিনের ঘরে বসবাস করেন। শহীদ সম্পর্কে নিকটাত্মীয় ও বন্ধুর অনুভূতি শহীদ ইমন মিয়া, আবু সাঈদের শহীদ হওয়ার পর থেকে এক-প্রকার অস্থির থাকতেন। বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বলতেন এগুলো দেখে বসে থাকা যায় না। আমি আন্দোলনে যামু এবং ১৮ তারিখ আন্দোলনে যুক্ত হলেন। একপর্যায়ে আঘাত পুলিশ ও গুন্ডা ছাত্রলীগ কতৃক নিক্ষিপ্ত গুলির আগাতে তিনি শাহাদাত বরণ করে। প্রস্তাবনা ১। মাসিক ১০০০০ টাকা করে অনুদান প্রদান করা। ২। বাৎসরিক ২ লক্ষ টাকা প্রদান করা। একনজরে শহীদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি নাম : ইমন মিয়া বয়স : ১৯ বছর পেশা : ছাত্র কলেজ : নরসিংদী আইডিয়াল কলেজ জম্ম : ১ জানুয়ারি ২০০৫ ঠিকানা : গ্রাম: দড়িচর, ইউনিয়ন: গজারিয়া, থানা: পলাশ, জেলা: নরসিংদী পিতা : কায়েম মিয়া পেশা: কৃষক আয়: ৮০০০ টাকা আয়ের উৎস : কৃষিকাজ মাতা: মর্জিনা বেগম পেশা : গৃহিণী ঘটনার স্থান : জেলখান মোড়, নরসিংদী আক্রমণকারী : স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনী আহত হওয়ার সময়কাল : ১৮ জুলাই ২০২৪ বিকাল ৪.০০টা মৃত্যুর তারিখ ও সময় : ১৮ জুলাই ২০২৪ বিকাল ৪.০০টার সময় শহীদের কবরের অবস্থান : নিজগ্রাম দড়িচর এলাকায়

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of ইমন মিয়া
Image of ইমন মিয়া
Image of ইমন মিয়া
Image of ইমন মিয়া

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: দুলাল

মোঃ সুজন খাঁন

মো: মেহেদী হাসান

মো: সুজন মিয়া

আক্কাস আলী

মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান

আশরাফুল হাওলাদার

মো: মনির হোসেন

মো: নজরুল ইসলাম

নাদিমুল হাসান এলেম

আবু মুজাহিদ মল্লিক

মেহেদী হাসান

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo