জন্ম তারিখ: ১ ডিসেম্বর, ২০০১
শহীদ হওয়ার তারিখ: ২০ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা
পেশা : শ্রমিক, শাহাদাতের স্থান : জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যূত্থানের একজন শহীদ মো: জুনায়েত হোসেন। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার বিল দেউনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় শহীদ মো: জুনায়েদ হোসেন ছিলেন একজন লেদ শ্রমিক। ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদের পিতা শাহ আলম ফরাজি একজন কৃষক এবং তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। জুনায়েত হোসেনের মাতা ডলি আক্তার গৃহিনী। অসুস্থতার কারণে শাহ আলম ফরাজি কৃষিকাজও ঠিক মতো করতে পারেন না। মূলত পরিবারের ব্যয় মেটানোতে অসমর্থ হওয়ায় জুনায়েত হোসেনকে কাজের উদ্দেশ্যে ঢাকায় পাঠায় তার পরিবার। জুনায়েদ কাজ নেন লেদ শ্রমিক হিসেবে। এই অল্প বয়সে সংসারের বোঝা কাঁধে তুলে নিতে হয় তাকে। তার মৃত্যুতে পরিবারটি আর্থিকভাবে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছে। যেভাবে শহীদ হন মো: জুনায়েত হোসেন দুপুরের খাবার শেষ করে ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় রাস্তায় বের হয় জুনায়েদ হোসেন। উদ্দেশ্য ছিল কর্মক্ষেত্রে যেয়ে কাজে যুক্ত হওয়া। সেদিন রাজপথে ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবস্থান। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ ও আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালায়। অনবরত টিয়ারশেল, ছররা গুলি, হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে রাজপথ থেকে ছাত্রদের সরাতে চেষ্টা করে সরকারী বাহিনী। এমনই এক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন জুনায়েত হোসেন। শুরুতে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসতে ব্যার্থ হয় সবাই। কিছু সময় পরে সাহসী কিছু ছাত্রের সহযোগিতায় তাকে নেয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতালে। তারপর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। হাসপাতাল গুলোয় পুলিশ ও বিজিবি বাহিনীর অনুসন্ধানের ফলে এবং তাদের নিষেধাজ্ঞার কারনে ডাক্তারেরা জুনায়েতের মত আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে অক্ষমতা প্রকাশ করে। কিছু কিছু ছাত্র ফাইলে ভিন্ন রোগের কথা লিখে গোপণে চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টা করে। উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় পরদিন (২০ জুলাই) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ সম্পর্কে তার বড় চাচার প্রতিক্রিয়া বড় চাচা শহীদ সম্পর্কে বলেন: জুনায়েত আমার সাথে সব সময় সম্মান দিয়ে কথা বলতো। দেখা হলেই সালাম দিতো। কোন খারাপ ছেলেদের সাথে মিশতো না; বরং পরিবারের কথাই চিন্তা করতো। কিন্তু পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে পড়ালেখা করতে পারেনি। এক নজরে শহীদ জুনায়েত পিতা : শাহ আলম ফরাজি মাতা : ডলি আক্তার জন্ম তারিখ : ১৮ ডিসেম্বর ২০০১ পেশা : শ্রমিক আহত হওয়ার তারিখ : ১৯ জুলাই ২০২৪ শহীদ হওয়ার তারিখ : ২০ জুলাই ২০২৪ শাহাদাৎ বরণের স্থান : ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : বিল দেউনিয়া, নড়িয়া, শরীয়তপুর ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : নিঃস্ব
তাদের প্রতিদান তাদের রবের কাছে রয়েছে, জান্নাত, যার নিচ দিয়ে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। (সুরা আল-ইমরান ৩:১৪৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শহীদদের জন্য জান্নাতে ৭০ জন আত্মীয়কে সুপারিশ করার অধিকার থাকবে।” (সুনান আবু দাউদ ২৫২০)

