জন্ম তারিখ: ১ অক্টোবর, ১৯৯৮
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা
পেশা : শিক্ষার্থী, শাহাদাতের স্থান : ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স হাসপাতাল
সুদৃঢ় আত্মবিশ্বাস এবং অসীম সাহস নিয়ে প্রথমে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল শহীদ মামুন মিয়া তার মধ্যে একজন। অকুতোভয় এ বীর সন্তান জন্মগ্রহণ করেন শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার চরচিকন্দি গ্রামে। ১৯ জুলাই রাত ২টায় তিনি রামপুরার ওয়াপদা রোড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এবং ঐদিনই ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় শাহাদাতবরণ করেন। (১ অক্টোবর ১৯৯৮-১৯ জুলাই ২০২৪) ব্যক্তিগত জীবন কৃষক পিতা আবদুল গণি মাদবর (৬০) এবং গৃহিনী মাতা মোসা. হেনা বেগমের সন্তান তিনি। সরকারি তিতুমীর কলেজের এমএ (রাষ্টবিজ্ঞান) বিভাগের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন শহীদ মামুন মিয়া। অনেক স্বপ্ন নিয়ে এতোদূর এগিয়ে ছিলেন, বিদেশ যাবেন এবং সংসারের হাল ধরবেন। সেই স্বপ্ন এতো দ্রুত ধ্বংস হয়ে যাবে তা কেউ পাবেনি। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদ মামুন মিয়া কৃষক পরিবারের সন্তান। তাঁর পিতা আবদুল গণি মাদবর একজন কৃষক। সংসার চালিয়ে তার পক্ষে শহীদ মামুন মিয়ার পড়াশোনার খরচ চালানো কঠিন হয়ে উঠেছিল। সংসারের ওপর চাপ কমাতে মামুন টিউশনি করত এবং বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যেভাবে শহীদ হন মামুন মিয়া শহীদ মামুন মিয়া সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র। তিনি থাকতেন রামপুরার কাঁচাবাজার এলাকায়। ‘আমাজান ডট কম’ এর কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সকালে তিনি ব্রাক ইউনিভার্সিটি এলাকা আন্দোলনে গিয়েছিলেন এবং রাতে তার রুম থেকে বের হয়েছিলেন। এ সময় রামপুরা এলাকায় ব্যাপক ভাণ্ডব চালায় পুলিশ এবং সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ-যুবলীগ। রামপুরার ওয়াপদা রোডে রাত ২টায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সহযোদ্ধারা তাকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তারপর মুগদা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্সে। সেখানে তার অপারেশন হয়। কিন্তু অপারেশন সফল হয় না। ১৯ জুলাই ২০২৪ মধ্যরাত ২.৪০ মিনিটে শাহাদাত বরণ করেন মামুন। শহীদ সম্পর্কে তার বন্ধুর প্রতিক্রিয়া আতিকুর রহমান শহীদ মামুন মিয়ার সহকর্মী এবং রুমমেট। তিনি বলেন, “তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ মামুনের ফোন থেকে একটা ফোন আসে কিন্তু অন্য একজনের কণ্ঠস্বর। আমাকে জানানো হলো মামুন গুলিবিদ্ধ। আমি যেন যতদ্রুত সম্ভব মুগদা হাসপাতালে যাই। তখনো চারদিকে গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আমি বের হলাম। নিজের শরীর থেকে তাকে রক্ত দিলাম কিন্তু আফসোস তাকে বাঁচাতে পারলাম না। নিউরো সাইন্সে সে মারা গেল। তার যে বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করত, তা হচ্ছে সে কখনো নামাজ বাদ দিত না এবং বিশ্বাসী ছিল। আমেরিকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ভিসাও পেয়েছিল। কিন্তু তার আর যাওয়া হলো না!” এক নজরে শহীদ মামুন মিয়া পিতা : আবদুল গণি মাদবর মাতা : মোসা. হেনা বেগম পেশা : শিক্ষার্থী জন্ম তারিখ ও বয়স : ১ অক্টোবর ১৯৯৮ আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৯ জুলাই ২০২৪ শাহাদাৎ বরণের স্থান : ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স হাসপাতাল দাফনের স্থান : চরচিকন্দি গ্রাম, শরীয়তপুর স্থায়ী ঠিকানা : চরচিকন্দি গ্রাম, পালং মডেল থানা, শরীয়তপুর ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : নিম্নবিত্ত পরিবার প্রস্তাবনা ১. শহীদ পরিবারকে এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদান ২. শহীদের বাবাকে সমবায় কৃষি খামার করে দেয়া