Image of একরামুল হক সাজিদ

নাম: একরামুল হক সাজিদ

জন্ম তারিখ: ১ মার্চ, ১৯৯৯

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৪ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা :ছাত্র, শাহাদোতের স্থান :ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল।

শহীদের জীবনী

জন্ম ১৯৯৯ সালের ১ মার্চ। পৈতৃক নিবাস টাঙ্গাইল জেলার বানিয়া জান ইউনিয়নের ধনবাড়ী থানার বিল কুকড়ি গ্রামে। অবসরপ্রাপ্ত বিমানবাহিনী কর্মকর্তা জিয়াউল হক এবং লিপি বেগম দম্পতির এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের মধ্যে শহীদ সাজিদ দ্বিতীয়। মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ সাজিদ ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এসএসসি, ২০১৮ সালে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে। যেমন ছিলেন শহীদ সাজিদ ছোটকাল থেকেই মেধাবী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী একরামুল হক সাজিদ (২৫) টিউশনি করে চলতেন। বহুদিন থেকে তাঁর ইচ্ছা ছিল, নিজের টাকায় তাঁর সব আত্মীয়স্বজনকে একদিন টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়িতে দাওয়াত করে খাওয়াবেন। সে কথা বলেছিলেন বাবা জিয়াউল হককে। বলেছিলেন স্বজনদের তালিকা করতে। তালিকা করেও ফেলেছিলেন জিয়াউল হক। তারিখ ঠিক করে গ্রামে আসতে চেয়েছিলেন সাজিদ। আজ বৃহস্পতিবার স্বজনদের প্রায় সবাই এসেছিলেন সাজিদের গ্রামের বাড়িতে। তবে দাওয়াত খেতে নয়, তাঁরা চোখের জলে চিরবিদায় জানালেন সাজিদকে। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই আন্দোলনের মাঠে সক্রিয় ছিলেন শহীদ সাজিদ। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি উক্ত কর্মসূচিতে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র স্নাইপার দিয়ে গুলি বর্ষণ করলে গুলিবিদ্ধ হন সাজিদ। মাথার পেছনে গুলি লেগে ডান চোখ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়ার পর ওই রাতেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। তারপর ১০ দিনেও আর জ্ঞান ফেরেনি। ১৪ই আগস্ট বুধবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে তিনি মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার সংক্ষিপ্ত জীবনের সফর শেষ করেন। ঢাকা সিএমএইচ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। শহীদ সম্পর্কে মন্তব্য সাজিদের মামা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘গ্রামে এসে আমাদের সবাইকে দাওয়াত করে এনে সাজিদ খাওয়াতে চেয়েছিল। সে গ্রামে এল, আমরাও ওদের বাড়িতে আসলাম। কিন্তু দাওয়াত খেতে নয়, তাকে চিরবিদায় জানাতে।’ হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার বলেন, ‘সাজিদ আমার সরাসরি ছাত্র ছিল। ক্লাসেও খুব সক্রিয় ছিল। নতুন বাংলাদেশ গঠনে সে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে, তা অনুমেয় ছিল। আজ সাজিদ বেঁচে থাকলে পরীক্ষা দিতে আসত। তাই তাকে স্মরণ করেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই উদ্যোগ নেওয়া। সাজিদকে আমাদের বিভাগ আজীবন মনে রাখবে।’ সাজিদের সহপাঠীরা জানান, ‘সাজিদ দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। এটা আমাদের বিভাগের জন্য গৌরবের। আমরা সাজিদের স্মরণে আজ তার আসনে ফুল ও পতাকা রেখেছি। কিন্তু আমরা চাই সাজিদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কিছু করা হোক। আমাদের নতুন একাডেমিক ভবন সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাজিদের নামে করেছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই নামকরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করুক, যাতে এই নাম কেউ মুছে ফেলতে না পারে।’ এক নজরে শহীদ সাজিদ নাম : শহীদ একরামুল হক সাজিদ পিতা : জিয়াউল হক মাতা : লিপি বেগম ভাই-বোন : এক ভাই, এক বোন অবস্থান : ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় স্থায়ী ঠিকানা : বিল কুকড়ি, বানিয়াজান, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল শাহাদাতের স্থান : সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) শাহাদাতের তারিখ : ৪ আগস্ট আহত হয়ে হাসপাতালে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ১৪ আগস্ট ২০২৪ আঘাতের ধরন : ভারী আগ্নেয়াস্ত্র স্নাইপারের বুলেটের আঘাত প্রস্তবনা : মাসিক অথবা এককালীন সহযোগিতা প্রদান করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of একরামুল হক সাজিদ
Image of একরামুল হক সাজিদ
Image of একরামুল হক সাজিদ
Image of একরামুল হক সাজিদ

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

আরাফাত মুন্সি

মো: আদিল

রিয়া গোপ

হযরত বিল্লাল

মো: কামরুল ইসলাম সেতু

মো: মিরাজুল ইসলাম অর্নব

মো: শুভ

ডা: সজিব সরকার

বাঁধন

আহসান কবির (শরিফ)

মো: অহিদ মিয়া

রাইফা

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo