Image of মো: রেজাউল হক সরকার

নাম: মো: রেজাউল হক সরকার

জন্ম তারিখ: ৯ নভেম্বর, ১৯৬১

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৭ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: রাজশাহী

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, শাহাদাতের স্থান : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ

শহীদের জীবনী

রেজাউল হক সরকার ১৯৬১ সালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক শহর রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন সক্রিয় পরিশ্রমী নেতা। সমাজের ও দেশের জন্য কাজ করার শপথ নিয়েছিলেন। দেশদ্রোহী, খুনি ও দূর্নীতিবাজদের সংগঠন আওয়ামী বাকশালীদের চোখে দেশপ্রেম ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করা ছিল তার অপরাধ! আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় দেশ থেকে পলায়নের আগে ইসলামী নেতৃবৃন্দের উপরে হামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আওয়ামী নির্মমতার নিষ্ঠুর বলি হলেন শহীদ রেজাউল হক সরকার। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট শহীদ রেজাউল হক সরকার তার জ্ঞান হওয়ার পরে থেকে পাকিস্তান আমল দেখেছেন। দেখেছেন ১৯৭১ সালে ভারতের চক্রান্তের ফলে শক্তিশালী পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়া। তিনি দেখেছেন আওয়ামীলীগ অবৈধভাবে ৭২ থেকে ৭৫, ৯৬ থেকে ২০০১ এবং ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় ছিল। ১৯৭৪ সালে বাকশালীদের নেতা শেখ মুজিবের এমপি-মন্ত্রীদের লুটপাটের ফলে দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছিল। সেই দূর্ভিক্ষে দেশের মানুষের না খেতে পেয়ে হাজারে হাজারে মৃত্যু খুব কাছ থেকে সরাসরি অবলোকন করেছেন। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের ২০০৮ পরবর্তী বছর গুলোয় অত্যাচারের মাত্রা এতো তীব্র হয় যে সরকারের সমালোচনা করলেই জেল-জুলুম, গুম-খুন শুরু হয়ে যেত। রেজাউল হাসিনা বাহিনীর নির্মমতার ফলে জেলে গিয়েছেন। সেখানে দেখেছেন অগণিত নিরীহ ইসলামী ব্যক্তিদের আহাজারি! ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে শত শত আলেম-মুফাসসিরদের গুম ও খুন করেছে। যা ইতিহাসের ফেরাউন বা নৎসি বাহিনীর অত্যাচারের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এমন অবস্থায় দেশের সচেতন সাধারণ মানুষ অত্যাচারের বিরুদ্ধে কিছু বলার সুযোগ না পেলেও মনে ছিল তীব্র ঘৃণা। জনতা সময়ের অপেক্ষায় ছিল। যার দেখা পেল কোটা আন্দোলনে। কোটা পদ্ধতি ২০১৮ সালে আন্দোলনের মুখে বাতিল করেছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে দলীয় সন্ত্রাসী, চাটুকার ও ভারতীয়দের সরকারি চাকুরীতে নিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী সাবেক ধর্ষক ও সন্ত্রাসী আ ক ম মোজাম্মেল হক অর্থের বিনিময়ে নিজ দলের কর্মীদের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট প্রদান করতেন। ২৫ জুন ২০১৯ সালের ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় দেশে ৮০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। দেশের মানুষ বুঝেছিলেন হাসিনার পরিকল্পনা। তাই জুলাই মাস জুড়ে দফায় দফায় ছাত্র জনতার আন্দোলন কোটা থেকে পরিণত হয় ৯ দফার আন্দোলনে। এরপরে তা এক দফায় পরিণত হয়। ১ আগস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারা বুঝতে পেরেছিল এ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে আছে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীবাহিনী। পুলিশকে নির্দেশ দেয় গণহত্যা চালানোর। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এসময় বেছে বেছে জামায়াত-শিবির নেতাদের হত্যা করতে থাকে। ৪ আগস্ট সর্বত্র নিরিস্ত্র ছাত্র-জনতা অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। স্বৈরাচারী সরকার এদিন বুঝতে পারে বিপদ ঘনিয়ে এসেছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার শেখ হাসিনা ও তার ঘৃণিত বাহিনীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। তিনি তাদের দেশ ত্যাগের সুযোগ করে দেন। হাসিনা ও তার সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও আগের নির্দেশনানুযায়ী রাজপথে পুলিশ জনতার উপরে নির্মমভাবে গুলি বর্ষণ শুরু করে হত্যা করতে থাকে। খুনি হাসিনার পলায়নে ৫ আগস্ট দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়। এদিন সন্ধ্যায় বড় বোনের বাসা থেকে মাগরিবের নামাজ শেষ করে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় আগে থেকে ঘাপটি মেরে অপেক্ষায় থাকা আওয়ামী গুন্ডারা দা, কিরিচ, ছুরি নিয়ে তার উপরে ঝাপিয়ে পড়ে। মারা গেছে ভেবে তারা রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট তিনি শাহাদাত বরণ করেন। জানাজা শেষে শিবপুর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। কেমন আছে তার পরিবার রেজাউল হক সরকারের মৃত্যুর পর শোকাচ্ছন্ন তার পরিবার। তার পরিবার এই হত্যার বিচার চায়। শহীদ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন। আওয়ামী লীগ দেশ থেকে পালানোর সময় ইসলামী ঘরানার ব্যক্তিদের উপর হামলা করা শুরু করে। রেজাউল হক তাদের হিংস্রতার বলি হলেন। একনজরে ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : মো: রেজাউল হক সরকার পেশা : অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা জন্ম তারিখ : ০৯/১১/১৯৬১ পিতা : মৃত জব্বার সরকার মাতা : রাহেলা খাতুন স্ত্রী : মোসা: নাজমা আক্তার লাবণী আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবার, মাগরিবের নামাজের সময়, ৭ আগস্ট ২০২৪, সকাল ১১ টা ঘটনার স্থান : হাট শিবপুর শাহাদাত বরণের স্থান : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ দাফন করা হয় : বানেশ্বর-সারদা রোডের শিবপুর বটমুল নামক স্খানের দক্ষিণে গিয়ে পশ্বিমে ২০০-২৫০ গজ পশ্চিমে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: শিবপুর, সীমারপাড় থানা/উপজেলা: চারঘাট , জেলা: রাজশাহী ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : বাড়িতে ঘর আছে, সামান্য জমি আছে। সন্তান : ছেলে ৩ জন ১. মো: নাজমুস সাকিব, বয়স: ৩৭, পেশা: চাকুরী ২. মো: নাজমুল হাসান, বয়স: ৩২, পেশা: ব্যবসা ৩. মো: নাজমুন নুর, বয়স: ২৮, পেশা: চাকুরী প্রস্তাবনা : ১. স্ত্রীকে মাসিক বা এককালীন সহযোগিতা করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: রেজাউল হক সরকার
Image of মো: রেজাউল হক সরকার
Image of মো: রেজাউল হক সরকার
Image of মো: রেজাউল হক সরকার
Image of মো: রেজাউল হক সরকার

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: মিনহাজ হোসেন

মো: সুজন মাহমুদ

মো. শরিফুল ইসলাম মোহন

মো: বিপ্লব মণ্ডল

 মো: সোহানুর রহমান রঞ্জু খান

 ইয়াছিন

মো: শাকিল হাসান

মো. শাখিল আনোয়ার

 মো: সাব্বির হাসান

মো. মেহেদী হাসান রবিন

জুনাইদ ইসলাম রাতুল

মো: আব্দুল আলীম

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo