Image of মো: আহমাদ আব্দুল্লাহ

নাম: মো: আহমাদ আব্দুল্লাহ

জন্ম তারিখ: ১০ অক্টোবর, ২০১০

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা_সিটি

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: ছাত্র, প্রতিষ্ঠান: দারুল উলুম পাথরঘাটা মাদরাসা মুন্সিগঞ্জ শাহাদাতের স্থান : কাজলা, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা

শহীদের জীবনী

"যে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার নয়" মেধাবী ছাত্র আহমদ আব্দুল্লাহ ১৩ অক্টোবর ২০১০ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার দারুল উলুম পাথরঘাটা মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। তার পৈত্রিক নিবাস রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে। বর্তমানে শহীদ পরিবার যাত্রাবাড়ী থানার গোবিন্দপুর এলাকার হক টাওয়ারে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। তার পিতা মনিরুজ্জামান পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বছরের বিভিন্ন সময় অনুযায়ী তার ব্যবসার ধরন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। কখনও কসমেটিকসের ব্যবসা করেন তো আবার কখনও বা ফলের ব্যবসা। তার মা আমেনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে স্পাইনাল সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়াও তার ছোট ভাই আজিজুল হক আনাসের হার্নিয়া ধরা পড়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ মতে চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মধ্যেই তার অপারেশন করাতে হবে।আলেম হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলো না, মাদ্রাসার একাডেমিক কাজ শেষ করে বাসায় ফেরা ছিল শহীদ আহমদ আব্দুল্লাহর নিয়মমাফিক রুটিন। কখনও বাবা গিয়ে তাকে নিয়ে আসতেন আবার কখনও একাই বাসায় ফিরতেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮ জুলাই রোজ বৃহস্পতিবার বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল দেখতে পান। অন্যান্য ছাত্র-জনতার মতো প্রবল আগ্রহ অনুপ্রেরণা এবং আবেগ নিয়ে তিনি মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। তখনও তিনি জানতেন না যে আর কিছুক্ষণ পরেই তার ওপর চলবে স্বৈরাচারী হায়না সরকারের ঘাতক পুলিশের পাশবিক নির্যাতন। দিনব্যাপী ছাত্র জনতা এবং সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনীর সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় পুলিশ সন্ধ্যার পরে পূর্ণ শক্তি নিয়ে সাজোয়া যান থেকে উপুর্যুপরি সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুড়তে ছুড়তে সামনে অগ্রসর হয়। ছাত্রজনতা একে একে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকেন। রাত ৯ টার দিকে হায়েনা পুলিশ বাহিনীর রাইফেলের দুটিগুলি ও শটগানের তিনটি গুলি আব্দুল্লাহর গায়ে লাগে। তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। তিনি রাস্তায় পড়ে যান। আহত আব্দুল্লাহ নিজের শরীর বাঁচানোর চেষ্টা করেন কিন্তু হায়েনা পুলিশ বাহিনীর পাশবিক নির্যাতন এতটাই নির্মম ছিল যে তার ওপর দিয়ে তারা সাঁজোয়া যান চালিয়ে দেয়। এতে তার বাম হাত পিষ্ঠ হয়ে হাড় থেকে মাংস আলাদা হয়ে যায়। তাজা রক্তে পিচ ঢালা রাস্তা রঞ্জিত হয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাকে রাস্তার পাশেই অনাবিল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা এতটাই মর্মান্তিক ছিল যে তাকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। যে স্মৃতি অম্লান- তার বাবা মনিরুজ্জামান যখন তার স্মৃতি বর্ণনা করছিলেন তখন তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমার বড় ছেলে আব্দুল্লাহ অনেক মেধাবী এবং শান্তশিষ্ট ছিল। খুবই নম্র-ভদ্র এবং চঞ্চল ছিল। যেকোনো কাজ খুব দ্রুত করতে পারত। তাকে নিয়ে আমাদের অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। একদিন বড় হয়ে আমার ছেলে দ্বীন এর খেদমত করবে, আমার সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। আমি এই পাশবিক হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।” এক নজরে শহীদের ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : শহীদ মো: আহমাদ আব্দুল্লাহ, পেশা: ছাত্র পিতা : মনিরুজ্জামান, পেশা : ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাতা : আমেনা বেগম, পেশা : গৃহিনী ভাই : আজিজুল হক আনাস (৮), পেশা: ছাত্র, মাদরাসাতুল আবরার, ১ম শ্রেণি বোন : মারিয়াম (২০), গৃহিণী জন্মতারিখ ও বয়স : ১০ অক্টোবর ২০১০, ১৪ বছর আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৮ জুলাই ২০২৪ , রাত : ৯:৩০, স্থান: কাজলা, যাত্রাবাড়ী শহীদের কবরের স্থান : মাতুয়াইল কবরস্থান স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: রসুলপুর, ইউনিয়ন: রানীপুকুর, থানা: মিঠাপুকুর, জেলা: রংপুর

শহীদ সম্পকির্ত কুরআনের আয়াত

আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনোই মৃত মনে করো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকা-প্রাপ্ত হয়ে থাকে। (সুরা আল-ইমরান ৩:১৬৯)

শহীদ সম্পকির্ত হাদিস

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শহীদদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।” (সহীহ বুখারী ২৮০০)

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image
Image
Image
Image
Image
Image
Image
Image
Image
শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo