জন্ম তারিখ: ২৯ আগস্ট, ১৯৮২
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: রাজশাহী
পেশা : দিনমজুর (কসাই), শাহাদাতের স্থান : শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
"কাজ থাকলে দৈনিক ২-৩ হাজার টাকা পেতো। আবার কাজ না থাকলে অনেকদিন না খেয়েও থাকতে হতো। কিন্তু কারো থেকেই বড় অংকের টাকা ধার নিতো না" - শহীদের দাদা আজহার আলী শহীদ মো: রিপন ফকির ১৯৮২ সালের ২৯ আগস্ট বগুড়া জেলার বানদিঘী ফকিরপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৃত আফজাল ফকির এবং মাতা মোসা সফেলা বেওয়া। শহীদ রিপন ফকির পেশায় ছিলেন একজন কসাই। ছোটবেলা থেকে তিনি এই পেশা বেছে নিয়েছিলেন। তিনি অন্যের দোকানে কাজ করতেন। শহীদ রিপন ফকির ৫ই আগস্ট বেলা আড়াইটায় বিজয় মিছিলের উদ্দেশ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যোগদান করেছিলেন। বিকাল তিনটায় মিছিল সিল্কি বান্দা মোড়ে (চারমাথা, বগুড়া সদর) পৌঁছালে পুলিশ টিয়ারসেল, রাবার বুলেট এবং গুলি ছুড়তে থাকে। একটা টিয়ারসেল সরাসরি তার উপরে এসে পড়ে এবং এর ধোয়া নাকে মুখে প্রবেশ করলে সে রাস্তার উপর পড়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে লোকজন তাকে দ্রুত শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার শরীরে গুলি বা রক্তের কোনো চিহ্ন ছিল না। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট ৫ আগস্ট ২০২৪ বাংলাদেশীদের জীবনে একটি বিশেষ দিন। এদিন কুখ্যাত সন্ত্রাসী সরকার প্রধান খুনি হাসিনা মসনদ ত্যাগ করে দিল্লি গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার আছড়ে পড়ে প্রতিটি বাংলাদেশীর অন্তরে। আবেগে উদ্বেলিত মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন বিজয় মিছিলের উদ্দেশ্যে। শহীদ মোঃ রিপন ফকিরা বিজয় মিছিলের উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে বের হন। বিকাল তিনটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি বগুড়া সদরের চারমাথায় প্রবেশ করলে পুলিশ গুলি, টিয়ারসেল এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় তার গায়ের উপর একটি টিয়ারসেল পড়ে এবং টিয়ারসেলের ধোয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। শহীদের মৃত্যুর পর বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতিক্রিয়া শহীদের দাদা আজহার আলী বলেন, "শহীদ রিপন পেশাগত জীবনে ছিল কসাই। যখন কাজ থাকতো তখন দৈনিক ৩-৪ হাজার টাকা আয় করত। আবার কাজ না থাকলে অনেকদিন না খেয়েও থাকতে হতো। কিন্তু কারো থেকেই বড় অংকের টাকা ধার নিতো না।" শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য শহীদ রিপন অন্যের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কসাইয়ের কাজ করতেন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। স্ত্রী ও ১৫ বছর বয়স্ক ছেলে রিফাত (১৫)-কে নিয়ে একটি ছোট মাটির ঘরে বাস করতেন। ছেলেটিও বর্তমানে বাসের হেলপারি শিখছে। তাদের পরিবারে আর কোনো আয়ের উৎস নেই। ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : মো: রিপন ফকির পিতা : মৃত আফজাল ফকির মাতা : মোসা: ছফেলা বেওয়া (মৃত) স্ত্রী : মোছা: মাবিয়া বেগম (৪০) জন্ম তারিখ : ২৯ শে আগস্ট, ১৯৮২ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: বান দিঘি ফকিরপাড়া, ইউনিয়ন: এরুলিয়া, থানা: বগুড়া সদর, জেলা: বগুড়া বর্তমান ঠিকানা : বানদিঘী ফকির পাড়া,এরুলিয়া, বগুড়া সদর, বগুড়া আহত হওয়ার স্থান : সিলকিবান্দা মোড়, চারমাথা বগুড়া আহত হওয়ার সময় কাল : ৫ আগস্ট, ২০২৪, দুপুর তিনটা শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ৫ আগস্ট, ২০২৪। সময়: বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিট : শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যাদের আঘাতে শহীদ : পুলিশের টিয়ারসেলের আঘাতে শহীদ পরিবারের জন্য করণীয় ১. শহীদের স্ত্রীর জন্য নিয়মিত মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা ২. ছেলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা