Image of মো: রাকিব হোসাইন

নাম: মো: রাকিব হোসাইন

জন্ম তারিখ: ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: বরিশাল

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্র, শাহাদাতের : স্থান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

শহীদের জীবনী

শহীদ মো: রাকিব হোসাইন ১৯৯৬ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মো: আলমগীর হোসেন, পেশায় একজন কৃষক, এবং মাতা মোছা: রাশিদা বেগম একজন গৃহিণী। রাকিব বাবুগঞ্জের খানপুরা আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে বরিশালের ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন। এরপর তিনি বিএসসি পড়ার জন্য সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব আন্দোলনের সময় ঘাতকের গুলিতে শহীদ হন রাকিব। পারিবারিক অবস্থা রাকিবের বাবা কৃষি জমিতে চাষাবাদ করতেন এবং খেয়ে না খেয়ে পাঁচ সন্তানকে বড় করেছেন। শহীদ রাকিব ছিলেন পরিবারের সবচেয়ে ছোট সন্তান। তিনি পরিবারের সকল চাহিদা নিজেই চালাতেন। রাকিব কখনও বাবা-মাকে বুঝতে দিতেন না কিভাবে পরিশ্রম করে সংসারের খরচ মেটাতেন। বাড়িতে আসার সময় তিনি এক মাসের বাজার নিয়ে আসতেন যাতে বাবা-মা পরবর্তীতে সমস্যায় না পড়েন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি একটি কুরিয়ার অফিসে চাকরি নিয়েছিলেন সংসারের হাল ধরার জন্য। রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন যাতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাস করে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে পারেন। আর মাত্র এক বছর বাকি ছিল। বাবা-মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল যে তাদের ছেলে লেখাপড়া শেষ করবে। সমাজের তাচ্ছিল্যভরা মন্তব্য, “কি হবে এত লেখাপড়া করে?” এর উত্তরে তিনি ভালো কিছু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাসের অপেক্ষাও আর সম্ভব হলো না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয়ে সব ঋণ পরিশোধ করলো। স্বৈরাচার যুগ যুগ ধরে একই কাজ করে এবং অসংখ্য নিরীহ মা, বাবা, ভাই, বোনের বুক খালি করে যায়। ভাষা নেই এই কষ্টের কথা লেখার, স্বজন হারানোর বেদনা কি আর স্বৈরাচারীরা বুঝবে? শহীদের বর্ণনা 'বিজয় অথবা শহীদ মৃত্যুর ঠিক কিছুক্ষণ আগে রাকিব এই তিন শব্দের একটি ছোট্ট পোস্ট দেন ফেসবুকে। পোস্ট দিয়ে তিনি মিছিলে অংশ নেন। আকাশ থেকে তখন বৃষ্টি ঝরছিল। বৃষ্টিতে ভিজেই প্রায় ৩০০ ছাত্রের মিছিলটি সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে রওনা দেয়। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। মিছিলটি যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আসে, তখন পুলিশ কোনো উস্কানি ছাড়াই আচমকা গুলিবর্ষণ শুরু করে। মিছিলের অগ্রভাগে থাকা রাকিবসহ কয়েকজন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হন। রাকিবের দুই বন্ধু সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অক্সিজেন মাস্ক লাগানোর কয়েক মিনিট পরই নিজের কথাকে সত্যি করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দশম ব্যাচের ছাত্র রাকিব হোসেন রাজিব। হাসানুল বান্না, রাকিবের সহপাঠী ও বন্ধু, বলেন, "রাকিব ছিল মেধাবী ও সাহসী। সবসময় মিছিলের সামনের সারিতে থাকতে পছন্দ করত।" বিলাপ করতে করতে রাকিবের বড় ভাই আবুল কালাম বলেন, "আমার ভাইকে দুইটি গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ।" স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুস সালাম জানান, রাকিব একজন প্রতিবাদী যুবক হিসেবে এলাকায় সুপরিচিত ছিলেন। দাফন-কাফন ৬ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে মানিককাঠি বাজারে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে রাকিবের লাশ দাফন করা হয়। শহীদ সম্পর্কে নিকটাত্মীয়ের অনুভূতি: বাবা মো: আলমগীর হোসেন বলেন, "কৃষিকাজ করে আমি আমার সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। রাকিবকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আরেকটি বছর পর সে চাকরিতে ঢুকবে। অনেকের কথা শুনে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। আজ আমি সব ভুলে গেছি, তার চিন্তায়।" বড় ভাই মো: আবুল কালাম বলেন, "রাকিবকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সে শহীদ হয়। এখন বাবা-মার সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।" একনজরে শহীদ মো: রাকিব হোসাইন নাম : মো: রাকিব হোসাইন পেশা : ছাত্র প্রতিষ্ঠান : সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি জন্ম : ২৩-০২-১৯৯৬ বয়স : ২৭ বছর পিতা : মো: আলমগীর হোসেন মাতা : মোসা: রাশিদা বেগম আহত হওয়ার তারিখ ও স্থান : ০৫-০৮-২০২৪, ঢাকা মেডিকেলের সামনে শাহাদাতের তারিখ ও স্থান : ০৫-০৮-২০২৪, ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: মানিককাঠি, ইউনিয়ন: রহমতপুর, থানা: বিমানবন্দর, জেলা: বরিশাল

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: রাকিব হোসাইন
Image of মো: রাকিব হোসাইন
Image of মো: রাকিব হোসাইন
Image of মো: রাকিব হোসাইন
Image of মো: রাকিব হোসাইন
Image of মো: রাকিব হোসাইন
Image of মো: রাকিব হোসাইন

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: আখতারুজ্জামান নাঈম

মো: আতিকুর রহমান

মো: আল আমিন হোসেন আগমন

মো: শিহাব উদ্দিন

মো: ওমর ফারুক

মোঃ মামুন

 মোঃ ফজলু

মো: রাকিব বেপারী

মো: আবুল বাশার

মো: সাগর হাওলাদার

মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন

মো: সুজন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo