Image of রাকিব হাওলাদার

নাম: রাকিব হাওলাদার

জন্ম তারিখ: ২৯ আগস্ট, ১৯৮২

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: বরিশাল

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : চাকরীজীবী (কাজল প্লাস্টিক), শাহাদাতের স্থান : বোরহান উদ্দিন কলেজ, চানখারপুল, ঢাকা

শহীদের জীবনী

রাকিব হাওলাদার ২২ মে ২০০৮ সালে বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ও মা শিল্পী বেগমের সংসারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঝালকাঠী জেলার কৃতি সন্তানদের সারিতে নাম লিখিয়েছেন। তার রক্তক্ষরণের মধ্য দিয়ে এশিয়ার ফেরাউন সরকার স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। রাকিব হাওলাদার তার চেতনা, বিপ্লবী চিন্তা ও কর্মের মাধ্যমে এদেশের মানুষের কাছে অমর হয়ে থাকবেন। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আবহমান ঐতিহ্য রক্ষা করে একই সাথে নানা ধর্মের মানুষ বসবাস করে আসছে। সাধারণ মানুষদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে ব্যর্থ হয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। এতিম, ধর্মভীরু মানুষদের আশার প্রদীপ এ দেশের দ্বীনি চর্চা কেন্দ্র মাদ্রাসাগুলো। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই অসংখ্য মাদ্রাসা দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা দিয়ে আসছে। দেশের মাদ্রাসাগুলোকে ধ্বংস করার জন্য বিগত পতিত আওয়ামী লীগের সরকার সকল ধরনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছিল। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম আন্দোলন হলেও দেশবাসী সেসব সংগ্রামে একতাবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে পারেনি। আওয়ামী লীগ কেউ অধিকারের কথা তুললে তাদের রাজাকার ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী বলে কঠোরতার সাথে নির্মূল করতো। জুলাইয়ের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে টালমাটাল অবস্থায় হাসিনা সরকার আবার ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার প্রয়াস পায়। তার অংশ হিসেবে তারা ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারা চেয়েছিল প্রতিবাদী জনতাকে জামায়াত-শিবির আখ্যা দিয়ে খুন করবে। অতীতের আন্দোলন গুলো তারা এভাবেই দমন করেছিল। ইসলাম, মাদরাসা ও আলেম সমাজের উপর ছিল তাদের চরম নিষ্ঠুরতা। মাদ্রাসার ছাত্রদের সকল প্রকার সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুধু গুটিকয়েক আওয়ামীপন্থী চাটুকার মাওলানা ছাড়া সবাই ছিল খুনি সরকারের অন্যায় আচরণের স্বীকার। তাই তাওহীদবাদী জনতা তার প্রধান শত্রু আওয়ামী লীগকে চিনতে ভুল করেনি। জুলাই আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মাধ্যমে ঝেটিয়ে বিদায় করা হয় সমস্ত অপরাধের কারিগর আওয়ামী লীগ সরকারকে। রাকিব হাওলাদার ছিলেন এই আন্দোলনে অগ্র সেনানী হিসেবে। যেভাবে শহীদ হয় শহীদ রাকিব বাল্যকাল থেকে ছিলেন অত্যন্ত পরিশ্রমী। তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকায় ব্যবসা করতেন। তিনি বাবার ব্যবসা দেখতেন এবং পাশাপাশি চানখারপুল এলাকায় একটি প্লাস্টিক কোম্পানীতে চাকুরী করতেন। রাকিব দেশ সম্পর্কে সজাগ ছিলেন। সরকারের অব্যবস্থাপনা, লুটপাট, দূর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার, আইনের শাসন ধ্বংস করে আলেমদের আটক ও খুন করা, বিদ্রোহীদের আয়নাঘরে আটকে রাখাসহ প্রভৃতি কারণে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। রাকিব হাওলাদার বুঝতে পেরেছিলেন এদেশে থাকতে হলে অধিকার বঞ্চিত হয়ে থাকতে হবে। অথবা অন্যায়কারীদের সাথে আপোষ করে তাদের চাটুকারীতা করে জীবন অতিবাহিত করতে হবে। তার মূল্যবোধ, ধর্মীয় চেতনা ও আত্বসম্মানবোধ তাকে ন্যায়ের পক্ষে থাকতে বাধ্য করে। তিনি দিনে দিনে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়লেও সুন্দর দেশ গঠনের স্বপ্ন দেখতেন এবং উপায় খুঁজতেন। খুনি হাসিনা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে গালি দেয়ার ফলে সারাদেশের মানুষ তীব্র প্রতিবাদ করে। জুলাই মাস জুড়ে স্বৈরাচারের সমস্ত পদক্ষেপকে ঘৃণা জানায়। নিষ্পাপ ছাত্র-ছাত্রীরা আহত ও নিহত হওয়ার পরেও সাহসের সাথে রাজপথে অবস্থান নেয়। ৫ আগস্ট উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকা লং মার্চ কর্মসূচীতে রাকিব হাওলাদার অংশ নিলেন। রাজপথে নেমে পরিবারের কাছে আন্দোলনে আছি বলে দোয়া চায়। বাবা-মা আপত্তি করে। তাকে ঘরে থাকার জন্য উপদেশ দেন। রাকিব হাওলাদার জাবাবে বলেন, ‘আমরা যদি আন্দোলন না করি তাহলে এই খুনি স্বৈরাচারের পতন হবেনা’ সকাল ১১ টা, বুরহান উদ্দিন কলেজ, চানখারপুল, ঢাকা। খুনি হাসিনার নির্দেশ ছিল গণহত্যা চালাতে। দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত মেরুদন্ডহীন পুলিশ সেই ভয়ানক আদেশ পালন করে। রাজপথে গুলি চালিয়ে জনতাকে হত্যা করতে থাকে। বিশ্বের সমস্ত ভয়ংকর অস্ত্র যা শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার হয় সেসব অস্ত্র প্রয়োগ করা হয় ছাত্র-জনতার উপর। রাকিব হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন। সাথে সাথেই তার মৃত্যু ঘটে। শহীদ সম্পর্কে মন্তব্য চাচাতো ভাই বলেন, আমরা দুইজন একসাথে খেলতাম, ঘুরতাম। রাকিব মাঝে মাঝে মসজিদে যেয়ে নিজে আজান দিতো। মানুষের বিপদে এগিয়ে যেতো। ধর্মপরায়ন ছিল। তাবলীগের চিল্লায় গিয়েছিলো। শহীদের ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : রাকিব হাওলাদার পেশা : চাকরীজীবী (কাজল প্লাস্টিক) স্থায়ী ঠিকানা : মহিষকান্দি, রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ, কাঠালিয়া, ঝালকাঠী জন্ম তারিখ : ২২ মে ২০০৮ পিতা : মো: জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৬) পেশা : ব্যবসা মাতার নাম : শিল্পী বেগম (৪২) ভাই-বোন : ৩ ভাই, ১ বোন (ভাইয়েরা সবাই চাকুরী ও ব্যবসায়ের সাথে জড়িত) ১. সাইদুল হাওলাদার, ২. রাহাত হাওলাদার, ৩. রাব্বী হাওলাদার ৪. জান্নাতি হাওলাদার, দশম শ্রেণি, চুনকুটিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পারিবারের সদস্য সংখ্যা : ৭ জন পারিবারিক আয় : ১৫০০০ টাকা আক্রমণকারী : পুলিশ আহত হওয়ার সময়কাল : ৫ আগস্ট ২০২৪, সময়: সকাল ১১টা মৃত্যুর তারিখ ও সময় : ৫ আগস্ট ২০২৪, সময়: সকাল ১১টা শহীদের কবরের অবস্থান : দক্ষিন পূর্ব কাজীর চর গোরস্থান প্রস্তাবনা ১. মাসিক ও এককালীন সহযোগিতা করা ২. ছোটবোনের লেখা পড়ায় সহযোগিতা করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of রাকিব হাওলাদার
Image of রাকিব হাওলাদার
Image of রাকিব হাওলাদার
Image of রাকিব হাওলাদার

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: শাহিন

মো: নাহিদুল ইসলাম

সাইদুল ইসলাম

মো: সেলিম তালুকদার

 মো: জামাল হোসেন শিকদার

আবদুল্লাহ আল আবীর

মো: সুজন

মো. মনির

মো: কামাল হোসেন

মো: নয়ন

মো: রাকিব বেপারী

মো: মিলন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo