Image of মেহেদী হাসান

নাম: মেহেদী হাসান

জন্ম তারিখ: ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: বরিশাল

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : সাংবাদিক, শাহাদাতের স্থান : মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার, যাত্রাবাড়ী

শহীদের জীবনী

পেশাগত সাংবাদিক ও শহীদ মেহেদী হাসান ৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩ সালে হোসনাবা গ্রামে ধুলিয়া ইউনিয়নে বাউফল থানায় পটুয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। অসুস্থ বাবা-মার সেবায় কখনো অবহেলা করেনি শহীদ মেহেদী হাসান। এলাকাবাসীরা জানান মেহেদী হাসান একজন শিক্ষিত ও ভালো মানুষ ছিলেন। খুবই নম্র ও ভদ্রভাবে চলাফেরা করতেন। কখনো কারো সাথে খারাপ আচরণ করতেন না। মিশুক ও সদা হাসিখুশি ছিলেন তিনি। মেহেদী হাসান ঢাকা টাইমসের হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিটে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতেন। এর আগে তিনি বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ ২৪, দৈনিক কালের কণ্ঠ ও দৈনিক বাংলাদেশের আলোয় কাজ করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ও ঘাতক পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হন সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী সাংবাদিক মেহেদী হাসান।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার গুলোর কষ্ট ও বেদনা আজ পুরো দেশের জনগণের কষ্টে পরিণত হয়েছে। তাদের স্ত্রী’রা পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিকে দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন। আগামীর বাংলাদেশ যেন এই শহীদদের স্বপ্নের আলোকে গড়ে তোলা হয় সে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাদের ছোট ছোট সন্তানেরা পিতাকে হারিয়েছে, অসংখ্য স্বজন তার প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে আজ পাগল প্রায়। পরিবার গুলো আজ তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন। বর্তমান সরকার অবশ্যই এসব শহীদদের পাশে দাঁড়াবে। নতুন দেশ গঠনে গণ অভ্যুত্থানের শহীদেরা আগামী প্রজন্মের তরুণদের প্রেরণার উৎস। হত্যাকারীদের বিচারের ব্যাপারে প্রতিটি পরিবার জোর দাবি তুলছে। দেশ ও জাতির অগ্রগতির স্বার্থে অবশ্যই প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার হতে হবে। ন্যায়বিচার পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার উপায় নতুন প্রজন্ম জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন। জাতির যেকোনো প্রয়োজনে ও ক্রান্তিকালে তারা সবসময় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। তারা হাসিমুখে শাহাদাত বরণ করে শিখিয়ে গেলেন অন্যায় ও অসত্য কখনো চিরস্থায়ী হয়না স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে সবসময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে যেকোনো অসাধ্য সাধন করা সম্ভব, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তা আবারও প্রমাণ করেছে। মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার এই বিজয়ে কালিমা লেপন করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশ বিরোধী ফ্যাসিবাদ এবং আধিপত্য বিস্তারকারী অপশক্তি থেমে নেই। তাই গৌরবের বিজয়কে অক্ষুণ্ন রাখার জন্য সচেতন দেশবাসীকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে তা বিপ্লবী কলমযোদ্ধা শহীদ সাংবাদিক মো: মেহেদী হাসান বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে দেশে বসবাসরত নাগরিকদের বার্তা দিয়েছেন। শহীদের পরিচয় পেশাগত সাংবাদিক ও শহীদ মেহেদী হাসান ৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩ সালে হোসনাবা গ্রামে ধুলিয়া ইউনিয়নে বাউফল থানায় পটুয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। অসুস্থ বাবা-মার সেবায় কখনো অবহেলা করেনি শহীদ মেদহদী হাসান। এলাকাবাসীরা জানান মেহেদী হাসান একজন শিক্ষিত ও ভালো মানুষ ছিলেন। খুবই নম্র ও ভদ্রভাবে চলাফেরা করতেন। কখনো কারো সাথে খারাপ আচরণ করতেন না। মিশুক ও সদা হাসিখুশি ছিলেন তিনি। মেহেদী হাসান ঢাকা টাইমসের হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিটে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতেন। এর আগে তিনি বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ ২৪, দৈনিক কালের কণ্ঠ ও দৈনিক বাংলাদেশের আলোয় কাজ করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ও ঘাতক পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হন সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী সাংবাদিক হাসান মেহেদী। তার অকাল মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা সোহরাওয়ার্দী কলেজ। তার এই আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতেই বদলে দেওয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটরিয়ামের নাম। শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর করা আবেদনপত্রটি উপাধ্যক্ষের নিকট জমা দেওয়া হয়। যার ফলে সোহরাওয়ার্দী কলেজে অডিটোরিয়ামের বর্তমান নাম শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদী অডিটোরিয়াম। মেহেদী সোহরাওয়ার্দী কলেজের ডিগ্রির ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অডিটোরিয়ামের নামকরণের বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকবর চৌধূরী বলেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পাশে ছিলেন সাংবাদিক মেহেদী হাসান। প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি, প্রথম কার্যকরী পরিষদ এবং বর্তমান কার্যকরী পরিষদেরও উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। আমাদের যেকোন ধরনের সুবিধা অসুবিধায় সবসময় পাশে পেয়েছিলাম তাকে। সাংবাদিকতায় তার পথচলা আমাদের অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে। আশা করি তার দেখানো পথ অনুসরণ করেই এগিয়ে যাবে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি। এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের আমিরুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটোরিয়াম নামকরণের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকবে মেহেদীর নাম। সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি নবাগত যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসবে তারাও জানবে শহীদ মেহেদীর আত্মত্যাগের কথা। এটা আসলে শিক্ষার্থীদের আবেগের জায়গা। তরুণ প্রজন্ম চায় তার এই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকুক। তার সম্মানার্থে এ স্মৃতিকে ধরে রাখতে হবে। এমনকি বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও অনুপ্রাণিত করবে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে তার এই মহান আত্মত্যাগ। প্রসঙ্গত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই বিকেলের দিকে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ঘাতক পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার শরীরে ৯৮ টি বুলেট ও ৪ টি গুলি পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এভাবেই কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে একজন জাতির বিবেকখ্যাত সাংবাদিক মেহেদী শাহাদাত বরণ করেন। পরিবার সংক্রান্ত বিশেষ তথ্য পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামের বাড়িতে কথা হয় তার বাবা মোশারেফ হোসেন হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি বলেন আমি অসুস্থ ও অসহায়। আমার কোনো আয় রোজগার নেই। আমি চারবার স্ট্রোক করছি, মেহদী আমাকে ডাক্তার দেখিয়েছে। ছেলের স্বপ্ন ছিল বাবা-মারে ওমরা হজ করাইয়া ঘরের কাজ ধরবে। আস্তে আস্তে সব দেনা পরিশোধ করবে। এগুলোই ওর স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন তো ভেঙে গেল। বুকে গুলি ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবা। বিলাপ করছেন মা-বোন। বাড়ির উঠানেই মেহেদী হাসানের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। পাকা সড়কের পাশেই দোচালা টিনের ঘর ভেঙে কিছুদিন আগে মেহেদী তৈরি করেছেন আধা পাকা টিনশেড বাড়ি। তবে এজন্য মেহেদীকে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই অভাব অনটনে বেড়ে ওঠা মেহেদী ছিলেন পরিবারের সবার প্রিয়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মেহেদী সবার বড়। তাই তার প্রতি সবার যেমন বাড়তি ভালোবাসা তেমনি মেহেদীও ছিলেন পরিবারের প্রতি আন্তরিক। মেহেদীর বেড়ে ওঠা এবং তার বিভিন্ন স্মৃতি এখনো কাঁদাচ্ছে স্বজন ও এলাকাবাসীদের। মেহেদীর খালা শাহানুর বেগম বলেন মেহেদী হাসানের ছয় মাস ও তিন বছর বয়সী দুই কন্যা রয়েছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। শহীদ সম্পর্কে নিকটাত্মীয় ও বন্ধুর বক্তব্য মেহেদী খুব ভালো ছেলে ছিলো। তার বাবা মার দায়িত্বশীল ছিলো। সর্বশেষ ৮ বছর তার বাবার চিকিৎসার ভার বহন করে। মারা যাবার আগের দিনও তার বাবার চিকিৎসার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিল শহীদের মামাতো ভাই মোঃ হাসান। স্ট্রোকের রোগী আমি, তিনটা ব্লক আছে আমার হার্টে। মেহেদীর স্বপ্ন ছিল আমার হার্টের অপারেশন করাবে। আমার মেহেদীর সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। প্রতি মাসেই আমার ওষুধ লাগে। আমার ছেলেটাও নেই আমার ওষুধও নেই। কে আমারে ওষুধ কিনে দেবে? কে আমারে দেখবে? কে আমার সংসার চালাবে? এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এক নজরে শহীদ সাংবাদিক মেহেদী হাসান নাম : মেহেদী হাসান পেশা : সাংবাদিক পেশাগত পরিচয় ও কর্মরত প্রতিষ্ঠান : ঢাকা ট্রিবিউট জন্ম : ৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩ স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা : গ্রাম: হোসনাবাদ, ইউনিয়ন: ধুলিয়া, থানা : বাউফল, জেলা: পটুয়াখালী বর্তমান ঠিকানা : ঐ পিতা : মোশাররফ হোসেন পেশা ও বয়স : অবসরপ্রাপ্ত ও ৬০ মাতা : মাহমুদা বেগম পেশা ও বয়স : গৃহিণী ও ৪৫ পরিবারের সদস্য সংখ্যা : ৭ আহত হওয়ার স্থান, তারিখ ও সময় : মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার, যাত্রাবাড়ী; ১৮ জুলাই ২০২৪, বিকাল আক্রমণকারী : স্বৈরাচারী হাসিনার ঘাতক পুলিশ শাহাদাতের স্থান, তারিখ ও সময় : মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার, যাত্রাবাড়ী; ১৮ জুলাই ২০২৪, বিকাল প্রস্তাবনা ১। শহীদ পিতা মোশাররফ হোসেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ২। শহীদ সাংবাদিক মেহেদী হাসানের আদরের দুই মেয়ের দায়িত্বভার ও দেখাশোনা করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান
Image of মেহেদী হাসান

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

আশিকুর রহমান হৃদয়

মো: নয়ন

মো: দুলাল সরদার

মো: আল আমিন হোসেন আগমন

এম. ডি. ইলিয়াস হোসাইন

মো: শিহাব উদ্দিন

মো: জামাল হোসেন

মো: জিহাদ হোসেন

মো: শাহ জামাল ভূঁইয়া (জামাল)

মোঃ আসিফ

শাকিল

মো: আল-আমিন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo