Image of মো: জিহাদ হোসেন

নাম: মো: জিহাদ হোসেন

জন্ম তারিখ: ১৪ মার্চ, ২০০০

শহীদ হওয়ার তারিখ: ২১ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: বরিশাল

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্র শাহাদাতের স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ

শহীদের জীবনী

শহীদ জিহাদ হোসেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা সদরের মোল্লা পট্টি এলাকার নুরুল আমিন মোল্লা ও শাহিনুর বেগমের ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তাঁর জন্ম ২০০০ সালের ১৪ মার্চ। শহীদ দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। এরপর রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় স্যার সলিমুল্লাহ কলেজ থেকে ২০১৮ সালে এইচএসসি শেষে করেন। সরকারি কবি নজরুল কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক শেষ করে একই বিভাগে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরত ছিলেন শহীদ জিহাদ হোসেন। শাহাদতের প্রেক্ষাপট প্রত্যক্ষদর্শী সহপাঠী, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই ২০২৪ শুক্রবার বিকাল ৩.৩০ টায় কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ী এলাকায় দনিয়া কলেজ ও কাজলা ফুটওভার ব্রিজের মাঝামাঝি রাস্তায় বুকের ডান পাঁজরে গুলিবিদ্ধ হন জিহাদ। গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠী ও বন্ধুরা তাঁকে উদ্ধার করে ওই এলাকার সালমান হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণ পর বিকেল ৪.৪৫ এর দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢামেক মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ২০ জুলাই ২০২৪ শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আবৃত কফিনে শহীদ জিহাদের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হয়। পরবর্তীতে ২১ জুলাই রবিবার ভোরে দশমিনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে শহীদের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মেধাবী এই ছাত্রের মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কান্নার রোল যেন থামছেই না। ছেলের ছবি বুকে চেপে রেখেছেন মা। বাবা শোকে বাকরুদ্ধ। বড় এক ভাই ও দুই বোনও যেন শোকে পাথর। মা শাহিনুর বেগম (৫০) আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আক্ষেপ করে বলেন ‘বাবা জিহাদ, মৃত্যুর সময় তুমি কেমন করছিলা! আমাকে মা মা করে ডাকছিলা! বাবাগো আমিতো বাড়িতে ছিলাম। তোমার ডাকে সাড়া দিতে পারি নাই।’ জিহাদকে হারিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁর বাবা নুরুল আমিন (৫৭)। শোকে বাকরুদ্ধ বড় ভাই জিন্নাত হোসেন (২৮) এবং দুই বোন জান্নাতুল ফিরদাউস (৩৩) ও জয়নব (৩০)। তাঁকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ছিল পরিবারের। এমন মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না। অনুভূতি প্রকাশ কান্না জড়িত কণ্ঠে জিহাদের বাবা নুরুল আমিন মোল্লা বলেন, ‘আমার ছেলে জিহাদ মেধাবী ছাত্র ছিল। কেমনে কি হয়ে গেল জানি না। আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে আমি তাদের বিচারের দাবি জানাই।’ মা শাহিনুর বেগম বলেন, ‘আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’ বড় বোন জান্নাতুল বলেন, ‘দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমার ছোট ভাই জীবন উৎসর্গ করেছে।’ বড় ভাই জিন্নাত হোসেন বলেন, ‘১৯ জুলাই বিকেল ফোন করে বলে আমার বুকে গুলি লেগেছে বাবা-মাকে বলিস না। ওই ছিল ছোট ভাই জিহাদের সঙ্গে শেষ কথা। জিহাদ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছে। দেশে বিদ্যমান স্বৈর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, আন্দোলন করেছে। আগামীর বাংলাদেশ যেন সুন্দর হয়, দুর্নীতিমুক্ত হয়। যুগ যুগ ধরে আগামী প্রজন্ম যেন আমার ভাইয়ের এ অবদান মনে রাখে। যে স্বৈরতন্ত্র শেখ হাসিনা কায়েম করেছিল অন্য কোনো দল ভবিষ্যতে এ ধরনের চেষ্টা যেন না করে। তাহলেই আমার ভাই ভালো থাকবে। আমার ভাইয়ের আত্মাও শান্তি পাবে।’ এক নজরে শহীদ জিহাদ হোসেন নাম : শহীদ জিহাদ হোসেন জন্ম : ২০০০ সালের ১৪ মার্চ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা সদরের মোল্লা পট্টি এলাকা বর্তমান ঠিকানা : ঐ আহত হওয়ার তারিখ ও স্থান : ১৯ জুলাই, ২০২৪ শুক্রবার, বিকাল ৩.৩০টা, যাত্রাবাড়ী কাজলা ফুটওভার ব্রিজ শাহাদাতের তারিখ : ১৯ জুলাই, ২০২৪ শুক্রবার, বিকাল ৪.৪৫, ঢাকা মেডিকেল কলেজ দাফন ও কবরস্থান : ২১ জুলাই, ২০২৪ রবিবার, দশমিনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় পিতা : নুরুল আমিন মোল্লা (৫৭), অবসরপ্রাপ্ত মাতা : শাহিনুর বেগম (৫০), গৃহিণী ১. মো: জিন্নাত হোসেন (২৮), সম্পর্ক: ভাই, পেশা: চাকুরি ২. মোছা: জান্নাতুল ফিরদাউস (৩৩), সম্পর্ক: বোন, বিবাহিতা ৩. মোছা: জয়নব (৩০), সম্পর্ক: বোন, বিবাহিতা প্রস্তাবনা ১. শহীদ পরিবারে মাসিক সহযোগিতা করা প্রয়োজন ২. শহীদের বড় ভাইকে স্থায়ী কর্মসংস্থান করে দেয়া যেতে পারে

শহীদ সম্পকির্ত কুরআনের আয়াত

তারা তাদের রবের কাছে যা দিয়েছেন তাতে খুশি, এবং যারা তাদের পিছনে আসবে তাদের জন্যও তারা আনন্দিত। (সুরা আলে ইমরান ৩:১৭০)

শহীদ সম্পকির্ত হাদিস

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শহীদদের আত্মা সবুজ পাখির পেটে থাকে।” (সহীহ মুসলিম ১৮৮৭)

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image
Image
Image
Image
Image
Image
শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo