Image of  মোঃ ফজলু

নাম: মোঃ ফজলু

জন্ম তারিখ: ২০ জানুয়ারি, ১৯৯৩

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৪ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: বরিশাল

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : গার্মেন্টস কর্মী, শাহাদাতের স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

শহীদের জীবনী

শহীদ মো: ফজলু ১৯৯৩ সালে ভোলা শশীভূষন উপজেলার জাহানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকে নম্র, ভদ্র এবং একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন। পেশায় তিনি ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি ছিলেন। তার বাবা জনাব আমিনুল হক (৬৫) বার্ধক্যজনিত কারণে কোন কর্ম করতে পারেন না। মা ছালেহা খাতুন (৫৫) গৃহিনী। এই ভঙ্গুর পরিবারে শহীদ ফজলু তাঁর পেশাগত আয় দিয়ে ভাইবোনদের সকলকে আগলে রেখে বড় করেন। ফজলুর স্ত্রী সুরাইয়া বেগম (২৩) তার ভরনপোষণ, ছোট মেয়ে ফারজানা খাতুন (০৭) তার পড়ালিখার খরচ সুন্দরভাবে চলতো কিন্তু নির্মম পরিহাস ফজলু শহীদ হওয়ার পর গোছালো পরিবার অগোছালো হয়ে গেল, কোন আয় নেই পরিবারের সবকিছু স্থবির হয়ে গেল। পরিবারের প্রতি তার যেমন আন্তরিকতা ছিলো তেমনি দেশের প্রতি তার ভালোবাসা কোনঅংশে ঘাটতি ছিলো না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা ছিলেন সোচ্চার। ঘটনা সংক্রান্ত বিবরণ শুরু থেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতেন শহীদ ফজলু দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলনের জন্য তারা জীবন দিতে প্রস্তুত। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার গণহত্যা, বিভিন্ন দুর্নীতি ভোট জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মত বড় বড় অপরাধ রাসেল গাজী এবং তার ভাইকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তাই তিনি নিজের পরিবারের চাইতেও আন্দোলনকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পক্ষ থেকে যখন ৩ তারিখ রাতে ৪ তারিখ থেকে ঢাকাতে অসহযোগ আন্দোলেনের ঘোষণা দেয় ঘটনার দিন ০৪/০৮/২০২৪ বিকাল ৪ টায় শহিদ ফজলু মিরপুর ষ্টাফ কলেজের সামনে মিছিলে অংশগ্রহন করে। চারিদিকে পুলিশ ও হেলমেট বাহিনী এলোমেলোভাবে ব্যাপক গুলি ছুড়তে থাকে। বেলা ৪ টায় তা তীব্র আকার ধারণ করে। ছাত্র জনতা খালি হাতে আন্দোলন করে অন্যদিকে পুলিশলীগ এবং ছাত্রলীগ মিলে ছাত্র-জনতার উপর দেশীয় অস্ত্র সশ্র নিয়ে মুহুর্মুহু হামলা চালায়। তখন বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ কর্তৃক গুলি এসে ফজলুর পেটে লেগে যায় এবং পেট দিয়ে ঢুকে পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। সাথে সাথে শহীদ ফজলু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন তাকে ছাত্র-জনতা মেডিকেলে নিয়ে যায় এবং রাত ৮ টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত বলে ঘোষনা দেন। শহীদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদের পিতা বৃদ্ধ আমিনুল হক (৬৫) ৮ সন্তানসহ দশ সদস্য বিশিষ্ট পরিবার নিয়ে জীবনের শেষ সময় পার করেছেন। বার্ধক্য জনিত কারনে আমিনুল হক সাহেব কিছুই করতে পারেন না কিন্তু এতো বড় সংসার পরিচালনায় একমাত্র উপার্জকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন শহীদ মো: ফজলু। গার্মেন্টসে কাজ করে ফজলু সামান্য উপার্জন দিয়ে ঢাকায় তার পরিবার নিয়ে সুন্দর জীবিকা নির্বাহ করতেন এবং তার পিতা মাতাকে গ্রামের বাড়ীতে সংসার খরচ দিতেন। যা আজ পরিবারের কাছে স্মৃতিতে অম্লান। শহীদ ফজলুকে হারিয়ে নিরুপায় হয়ে পড়ে তার বৃদ্ধ বাবা মা. বাবা বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ফজলুর শাহাদাতের পরপরই তাদের সংসারের জীবন থেমে যায়, তার বৃদ্ধ বাবা মা হয়ে যায় বাকরুদ্ধ। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে যেন সব হারিয়েছে পরিবারটি। শহীদ সম্পর্কে নিকটাত্মীয়র অনুভূতি আমিও যখন আন্দোলনে আসি তখন আমার কাছে ফোন আসে আপনার ভাই ফজলু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং আমার ভাই ফজলুকে হসপিটালে নিয়ে যাই। হাসপাতালে চিকিৎসরত অবস্থায় দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়। মো: সবুজ (শহীদের ভাই) আমার জানা মতে তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি দেশদ্রোহী কাজে লিপ্ত ছিলেন না। (জিহাদুল ইসলাম প্রতিবেশি) পরিবার সংক্রান্ত বিশেষ তথ্য শহীদ ফজলুর বৃদ্ধ পিতা মাতা যে ঘরে থাকে সেখানে কোনভাবে বসবাস করাও কঠিন। জীর্ণ শীর্ণ বাড়ীতে পরিবারের সবাই একসাথে বসবাস করছে। শীর্ণ শহীদ ফজলু একমাত্র পরিবারে উপার্জনকারী ছিলেন। একমাত্র মেয়ের পড়াশুনা করার জন্যও কোন আয় উপায় নেই। একনজরে শহীদ মোঃ ফজলু শহীদের পূর্ণ নাম : মোঃ ফজলু জন্ম তারিখ : ২০-০১-১৯৯৩ জন্মস্থান : ৮ নং জাহানপুর, শষীভূষণ, ভোলা পেশা : গার্মেন্টস কর্মী বর্তমান ঠিকানা : বাসা/মহল্লা: ২৪/৫ উত্তর ইব্রাহিমপুর, কাফরুল ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : ৮ নং জাহানপুর, চরফ্যাশন ভোলা পরিবার: পিতার নাম : আমিনুল হক(৬৫) কৃষক মাতার নাম : ছালেহা খাতুন (৬০) গৃহিণী ভাই বোন : ৮ জন বৈবাহিক অবস্থা : বিবাহিত শহীদের মেয়ে : ফারজানা খাতুন (৭) ১ম শ্রেণি আঘাতকারীর : পুলিশ আহত হওয়ায় ও সময় : পুলিশ কলেজের সামনে, মিরপুর ১৪ , ঢাকা ০৪-০৮-২০২৪ বিকেল ৪:০ মৃত্যুর তারিখ ও সময়, স্থান : ৪-০৮-২০২৪ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রাত ৪টা কবরস্থান : জাহানপুর শষীভূষন, ভোলা প্রস্তাবনা: ১.নিয়মিত মাসিক আর্থিক সহায়তা ২. ব্যবসায়িক কাজে মূলধন সহায়তা ৩. বাড়ি করে দেওয়া

শহীদ সম্পকির্ত কুরআনের আয়াত

তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও সন্তুষ্টি লাভ করবে এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী জান্নাত। (সুরা আল-ইমরান ৩:১৫)

শহীদ সম্পকির্ত হাদিস

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শহীদদের আত্মা সবুজ পাখির পেটে থাকে।” (সহীহ মুসলিম ১৮৮৭)

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image
Image
Image
Image
Image
Image
শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo