জন্ম তারিখ: ১৮ জুন, ২০০১
শহীদ হওয়ার তারিখ: ২০ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা_সিটি
পেশা : ব্যবসা ( ফিল্টার ও পানি সরবরাহকারী) শাহাদাতের স্থান : রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
শহীদ আব্দুর রহমান জিসান কুমিল্লার সন্তান। জন্মগ্রহণ করেছেন ১৮-০৬-২০০১ তারিখে। পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা হলেও তিনি জন্ম গ্রহণ করেছেন ঢাকায়। তার স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম : উত্তর পশ্চিমগাঁও, ইউনিয়ন: উত্তর পশ্চিমগাঁও, থানা : লাকসাম, জেলা কুমিল্লা। বর্তমান ঠিকানা: বাসা নম্বর ১৬৬, রায়েরবাগ, থানা: যাত্রাবাড়ি, জেলা: ঢাকা। বাবার নাম জনাব বাবুল মিয়া, মা মোসা: জেসমিন। তার মৃত্যুর পর স্বামী শোকে স্ত্রী মিষ্টি আক্তার আত্মহত্যা করে মৃত্যু বরণ করেন। কুমিল্লা জেলার লাকসাম বাজারে জিসানদের ৬.৫ কাঠার একটি প্লট আছে। জিসানের বাবা একজন প্রবাসী। ঢাকায় তারা ভাড়া বাসায় থাকেন। জিসানের আছে দুই বোন। মোসা: জান্নাতুল ফেরদৌস বিবাহিত। মাইমুনা আক্তার সুমাইয়া অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জুলাইর শুরুতেই ছাত্ররা তাদের ন্যায্য দাবী জানিয়ে আন্দোলন করতে থাকে। আন্দোলন জোরদার হয় পতিত প্রধানমন্ত্রীর একটি কথায়। আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিল সে। মুহূর্র্তে আন্দোলন জোরদার হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। সরকারও চলে যায় হার্ড লাইনে। আন্দোলন দমন করতে প্রয়োগ করে সর্বশক্তি। কার্ফিউ জারি করে। গুলি করে হত্যা করে আন্দোলনকারীদের। জনতা একাত্মতা ঘোষণা করে। রাজপথ থেকে, ভার্সিটির সকল হল থেকে বিতাড়িত হয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ। তবু সরকারের দমননীতি, হত্যানীতি থেমে থাকেনি। রাজপথে প্রতিদিনই বাড়তে থাকে জনতার সমাগম। আন্দোলনকারীদের পাশে থাকে সকল পেশাজীবি ও শ্রমজীবি মানুষ। যার যার অবস্থান থেকে সহায়তা করে প্রত্যেকেই। শহীদ আব্দুর রহমান শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবির যৌক্তিকতা উপলব্ধি করেন। তিনি আর নিজেকে আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেননি। প্রতিদিনই বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিতে থাকেন। তিনি ছিলেন পানি সরবরাহকারী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পানি সরবরাহ করতেন। আন্দোলনকারীরা রাজপথে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছেন। গরমে, ঘামে পানির প্রয়োজনিয়তা দারুণভাবে উপলব্ধি করেন জিসান। তিনি বিভিন্ন পয়েন্টে পানি সরবরাহ করেন বিনামূল্যে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাত্রাবাড়ির রশিদবাগ পয়েন্টে সেদিন তিনি নিজে থেকে পানি সরবরাহ করছিলেন। হাসিনার পুলিশ বাহিনী রশিদবাগ রোডের মাথায় এসে অতর্কিতে হামলা করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হন জিসান। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই শাহাদাত বরণ করেন। ২০ জুলাই বিকাল ৫:৩০ মিনিটই শহীদ আব্দুর রহমান জিসানের পৃথিবীর শেষ মুহূর্ত। তাকে মাতুয়াইল কবরস্থানে দাফন করা হয়। আত্মীয়দের অনুভূতি শহীদ আব্দুর রহমান জিসানের শ্বশুর মো: মতিউর রহমান। তিনি বলেন, “জিসান একজন ভালো মনের মানুষ। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করতেন। তিনি একজন পরোপকারী মানুষ ছিলেন। নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন। আমার মেয়ে জিসানকে খুব ভালোবাসতো। তার মৃত্যুতে আমার মেয়ে শোকে কাতর হয়ে যায়। বিষয়টি সে সহ্য করতে পারেনি। নিজেও আত্মহত্যা করে। আমি আমার মেয়ের জামাইর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” পারিবারিক অবস্থা শহীদ আব্দুর রহমানের বাবা ছিলেন প্রবাসী। বিদেশ থাকতে তার মাসিক আয় ছিল ৫০ হাজার টাকা। তিনি এখন দেশে আছেন। জিসান তার বাবার একমাত্র পুত্র। পুত্র শহীদ, পুত্র বধূ আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছেন। বাবা বিদেশ যেতে পারছেন না। পরিবারটি স্বভাবতই আর্থিক কষ্টে আছেন। পরিবারের ভরণপোষণ করতে পারছেন না। তারা এখন অসচ্ছল। ব্যক্তিগত প্রোফাইল নাম : আব্দুর রহমান জিসান জন্ম তারিখ : ১৮-০৬-২০০১ পিতা : মো: বাবুল মিয়া মাতা : মোছা: জেসমিন স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: উত্তর পশ্চিমগাঁও, ইউনিয়ন: উত্তর পশ্চিমগাঁও, থানা: লাকসাম, জেলা: কুমিল্লা পেশা : ফিল্টার ব্যবসায়ী (পানি সরবরাহকারী) আঘাতের ধরন : পুলিশের গুলিতে ডান চোখে গুলিবিদ্ধ সময় : ২০ জুলাই ২০২৪, বিকাল ৫:৩০ মৃত্যু : ২০ জুলাই ২০২৪, বিকাল ৫:৩০ ঘটনার স্থান : রশিদবাগ রোডের মাথায়, রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ি শহীদের কবর : মাতুয়াইল কবরস্থান প্রস্তাবনা ১. এককালীন অনুদান দেওয়া যেতে পারে ২. বাবার জন্য কোনো ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করে দিলে ভালো হবে ৩. ছোট বোনের লেখাপড়ার খরচের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে