জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ২০০১
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: চট্টগ্রাম
পেশা : ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : জালকুড়ি, নারায়ণগঞ্জ
শহীদ মো: পারভেজ ১১ জানুয়ারি ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ভুঁইঘর এলকায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সোহরাব মিয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। মায়ের নাম পারভীন বেগম। তিনি একজন গৃহিণীর পাশাপাশি গার্মেন্টস কর্মী। শহীদ পারভেজ ছিলেন পরিবারের একমাত্র ছেলে। তার দুইজন বোন রয়েছে। তারা দুজনই কলেজের শিক্ষার্থী। তিনি মামুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে পিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ২০১৭ সালে আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরে সিসিআরই মডেল কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পাশ করে শাহাদাত বরণকালীন পর্যন্ত তোলারাম কলেজে ডিগ্রী ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। শহীদের পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলায়। শহীদ জননী পারভিন বেগম বলেন, একটু ভালো থাকার আশায় নারায়ণগঞ্জ শহরে এসেছিলাম।যেভাবে শহীদ হলেন তিনি ১৯ জুলাই ২০২৪, জুমাবার। স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী পারভেজ তার দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নারায়ণগঞ্জ জালকুড়ি এলাকায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ হঠাৎ আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ছুড়ে। এসবি গাার্মেন্টস থেকে ছোড়া গুলি মো. পারভেজকে বিদ্ধ করে । ঘটনাস্থলে থাকা দলীয় নেতা কর্মীরা পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। পারভেজ এর বন্ধু রনি জানান, শুক্রবার জুলাই ১৯ স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে আমরা ছাত্রদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে জালকুড়িতে আন্দোলন করছি। হঠাৎ জালকুড়িস্থ এসবি গার্মেন্টস থেকে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষণ করে। শহীদ পারভেজ এর মত অনেকেই আহত হন। এবং ঘটনাস্থলে কয় একজন মারা যান। এঘটনায় এসবি গার্মেন্টসের কতৃপক্ষ ও যারা জড়িত তাদের বিচার সহ দেশের সকল শহীদের বিচার দাবি করছি। ঘাতকরা আমার বুক খালি করে দিল। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। অসহায় শহীদ পরিবার শহীদ মো: পারভেজকে হারিয়ে এখন তার পরিবার খুবই অসহায় হয়ে পড়েছে। শহীদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই নাজুক। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন শহীদের বাবা সোহরাব মিয়া। তিনি এখন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী । মা গার্মেন্টেসে চাকরি করে পরিবার চালায়। দুই বোন পড়াশোনা করছে। শহীদের পিতার গ্রামে একটি বসতি জমিতে টিনের বাড়ি রয়েছে। পরিবারের সকল ভবিষ্যৎ ছিল একমাত্র ছেলে পারভেজকে ঘিরে। জালিমরা এই পরিবারটির সকল ভবিষ্যৎ এখন বুলেটের আঘাতে উড়িয়ে দিল। পরিবারের কথা শহীদের বোন পাপিয়া বলেন, আমাদের পরিবারের আলোর প্রদীপটা নিভিয়ে দিল পুলিশ । আমরা এখন খুবই অসহায় অবস্থায় আছি। আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। শহীদ জননী পারভিন বেগম বলেন, ঘাতকরা আমার বুক খালি করে দিল। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি খুনি হাসিনার ফাসি চাই। প্রেরণায় শহীদ পারভেজ শহীদ মো: পারভেজ আমাদের পেরণা। এই তরুণ জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে জালিমের বিরুদ্ধে লড়েছেন। তাঁর সহপাঠীরা তাঁকে ভুলতে পারছেনা। তার বন্ধু আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের বন্ধূ পারভেজ ছিল অত্যন্ত বিনয়ী একজন ছেলে। সবার সাথে মিলে মিশে জীবন যাপন করতো। আমরা পারভেজকে হারিয়ে খুবই শোকাহত হয়ে পড়েছি। এখন আর কেউ আমাকে ফোন করে বলেনা- ‘বের হবি? চল একটু বাইরে ঘুরে আসি? নামাজের জন্য কেউ আর ডাক দেয় না। ও শুধু আমার বন্ধু ছিল না, ও ছিল আমার ভাই। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। এক নজরে শহীদ মো: পারভেজ নাম : মো: পারভেজ পেশা : ছাত্র, তোলারাম কলেজ নারায়ণগঞ্জ, ডিগ্রি শেষ বর্ষ জন্ম তারিখ ও বয়স : ১১-০১-২০০১, ২২ বছর আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৯ জুলাই ২০২৪, জুমাবার শাহাদাত বরণের স্থান : জালকুড়ি, নারায়ণগঞ্জ দাফন করা হয় : নিজ গ্রামে স্থায়ী ঠিকানা : আমিননগর, ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ পিতা : সোহরাব মিয়া মাতা : পারভীন বেগম ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : একটি টিনের বাড়ি আছে ভাইবোনের বিবরণ : দুই বোন পড়াশোনা করে প্রস্তাবনা ১. শহীদের পরিবারে মাসিক বা এককালীন সহযোগিতা করা যেতে পারে ২. শহীদের বোনদেরকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া যেতে পারে ৩. শহীদ পিতাকে কর্মসংস্থান করে দেয়া যেতে পারে (মুদি দোকান)