Image of মো: বাবু

নাম: মো: বাবু

জন্ম তারিখ: ২৯ নভেম্বর, ১৯৯৩

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: শ্রমিক , শাহাদাতের স্থান: দাউদকান্দি থানা , কুমিল্লা

শহীদের জীবনী

আমার ছোট দুইটা মেয়ে আছে। আমি তাদের নিয়ে এখন কোথায় যাব? ১৯৯৩ সালের ২৯ নভেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দির তুজারভাঙা এলাকায় জন্ম নেন মো: বাবু। তিনি গ্রামের মক্তব থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ফার্নিচার তৈরির কাজ শিখে একটি দোকানের কারিগর পদে যোগ দেন। পরিণত বয়সে বিয়ে করেন মোসা: মুন্নি আকতারকে। তাদের কোলজুড়ে আসে দুটি কন্যাশিশু। এভাবেই চলতে থাকে সুখের সংসার। আন্দোলনের দিনগুলো সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের এই আন্দোলনকে যৌক্তিক ভাবে সমাধানের পথে না গিয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থিত নরপিশাচ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে লেলিয়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি ঘাতক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিগত স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে কঠোর অবস্থানে থেকে শিক্ষার্থীদের উপরে চড়াও হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন। ওইদিন দেশব্যাপী ছয় জনের মৃত্যু হয়। যার ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সারা বাংলাদেশের ছাত্র জনতা ফুসে ওঠে। পর্যায়ক্রমে এ আন্দোলন এক দফায় রূপ নেয়। আন্দোলনকে দমন ও নির্মূল করতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কুখ্যাত ক্যাডার ও স্বৈরাচারী হাসিনার পালিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সহস্রাধিক মানুষ নির্মমভাবে গুলিতে নিহত হন। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হয়। যেভাবে শহীদ হলেন স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর সারাদেশে জনতার বিজয় মিছিল সংগঠিত হয়। তেমনি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার সামনে ৫ আগস্ট বিক্ষভকারী জনতা উল্লাস মিছিলের আয়োজন করে। একপর্যায়ে মিছিলরত মানুষের উপর বর্বর পুলিশ বাহিনী এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। হঠাৎ একটি বুলেট শহীদ বাবুর শরীরে এসে আঘাত হানে। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। লোকজন ধরাধরি করে কুমিল্লা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ডাক্তার ঢামেকে রেফার করে পাঠায়। ঢামেকে নেয়ার পথে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাবু। চিরদিনের জন্য রেখে গেলেন সাত মাসের অবুঝ শিশু কন্যার সাথে সাত বছর বয়সী এক কন্যা। ঘাতকের গুলিতে সারা জীবনের জন্য বিধবা পরিচয় বহন করতে হবে শহীদ স্ত্রীর। বাবু ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জন কারী। হঠাৎ তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে নেমেছে শোঁকের ছায়া। একমাত্র অবলম্বনকে হারিয়ে শহীদ পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ‘অনাহার-অনাদরে যাপিত জীবন পার করছে বিধবা স্ত্রী ও শহীদের অসহায় ফুটফুটে সন্তানেরা।’ কেমন আছে তার পরিবার শহীদ বাবু একটি ফার্ণিচারের দোকানে কাজ করতেন। অল্প উপার্জন ও টানাপড়েনের সংসার হলেও স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে মহাসুখেই বসবাস করতেন। শহীদ পরিবারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শহীদ পিতা একজন অটো চালক। দেশপ্রেমিক মহাবীর মারা যাওয়ার পর এই মুহূর্তে তাঁর পরিবারকে দেখাশোনার মত কেউ নেই। অনাহার-অনাদরে যাপিত জীবন পার করছে বিধবা স্ত্রী ও শহীদের অসহায় ফুটফুটে শিশু সন্তানেরা। স্বামীকে হারিয়ে তাঁর স্ত্রী বলেন- আমার ছোট দুইটা মেয়ে আছে। আমি তাদের নিয়ে এখন কোথায় যাব? তাদের পড়ালেখা, ভবিষ্যৎ সব অন্ধকার হয়ে গেল। ঘরে আর কোনো পুরুষ মানুষ নেই। সন্তানদের নিয়ে এই মানবেতর জীবন ভীষণ কষ্টের। এক নজরে শহীদ মোঃ বাবু নাম : মো: বাবু পেশা : শ্রমিক (ফার্নিচার দোকানের কারিগর) জন্ম তারিখ ও বয়স : ২৯-১১-১৯৯৩, ৩১ বছর আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ০৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবার, আনুমানিক বিকেল ৫ টা শাহাদাত বরণের স্থান : দাউদকান্দি থানা , কুমিল্লা দাফন করা হয় : বাড়ির পাশের কবরস্থানে স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: তুজারভাঙা উপজেলা: দাউদকান্দি জেলা: কুমিল্লা পিতা : মো: মান্নান মাতা : আনোয়ারা বেগম ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : কোনো সম্পদ নেই সন্তানের বিবরণ : ১. পিয়া আক্তার (৭), স্থানীয় মাদরাসায় পড়ে ২. মিম আক্তার, বয়স সাত মাস প্রস্তাবনা : ১. শহীদের সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়া যেতে পারে ২. শহীদের সন্তানদের স্থায়ী নিবাস করে দেয়া যেতে পারে ৩. শহীদ পত্নীকে মাসিক বা এককালীন সহযোগিতা করে দেয়া যেতে পারে

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: বাবু
Image of মো: বাবু

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: ফরিদ আহম্মদ ছৈয়াল

সাইফুল ইসলাম আলিফ

সৈকত চন্দ্র দে

মো: রুবেল

আল আমিন

মো: মাঈন উদ্দিন

মো: সাহাদাত হোসেন

মো: মনিরুল ইসলাম অপু

মো: তানজিল মাহমুদ সুজয়

মো: পারভেজ হোসেন

মো: জুয়েল

মো: জহিরুল ইসলাম

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo