Image of হামিদুর রহমান

নাম: হামিদুর রহমান

জন্ম তারিখ: ২ মার্চ, ২০০৪

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা :ছাত্র, শাহাদাতের স্থান :কুমিল্লার বংশাল থানার সামনে।

শহীদের জীবনী

হামিদুর রহমান ছিলেন সি এন এন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের একজন নিবেদিত কর্মী। তার জীবনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের অসংগতি দূর করা এবং মানুষের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন তাকে আন্দোলনের মাঠে নিয়ে আসে, যেখানে তিনি সাহসিকতার সাথে নিজের বিশ্বাস রক্ষার জন্য লড়াই করেছেন। পারিবারিক জীবন হামিদুর রহমানের পিতা মো: ইকবাল মজুমদার সৌদিতে প্রবাসী হিসেবে কাজ করেন। তার মা কাজী শারমিন আক্তার গৃহিণী। শহীদের দুই ভাই রয়েছে। রাজনৈতিক পরিচিতি শহীদ হামিদ এর পরিবার বিএনপি করে। কুমিল্লায় তারা প্রভাবশালী বিএনপি পরিবার। হামিদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীম হাসান এনি। পরিবারের আর্থিক অবস্থা হামিদুর রহমানের পরিবার আর্থিকভাবে মোটামুটি স্বচ্ছল। তার পিতা সৌদিতে কাজ করে পরিবারের আয় বৃদ্ধি করেন, এবং তাদের নিজস্ব সম্পত্তি রয়েছে যা তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবুও, শহীদের মৃত্যুর পর পরিবারটি মানসিকভাবে এবং আর্থিকভাবে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। সহায়তার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে, বিশেষ করে শহীদের সন্তানদের শিক্ষা ও পরিবারের অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে। শহীদ সম্পর্কে বিশেষ তথ্য হামিদুর রহমানের শাহাদাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। তার মৃত্যু আন্দোলনকারীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা এবং শক্তি এনে দেয়। শহীদের মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গনে গভীর প্রভাব ফেলে, এবং তাকে আন্দোলনের নায়ক হিসেবে স্মরণ করা হয়। তার আত্মত্যাগ আন্দোলনের গুরুত্ব এবং ন্যায়ের প্রতি জনগণের দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করেছে। আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে জনগণ নানান অন্যায়, শোষণ, নিপীড়ন ও জুলুমের নির্মম ভুক্তভোগী। এদেশের মুক্তিকামী জনতা সময়ের দাবিতে সাড়া দিয়ে এহেন অত্যাচারের বিরুদ্ধে বারংবার রুখে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে হুংকার দিয়ে সংগ্রামী জনতার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ছাত্রবৃন্দ। উপরুন্তু গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস সাক্ষী, দেশের ক্রান্তিকালে বরাবরই ছাত্রদের মাধ্যমে আন্দোলন সংগ্রামের সূত্রপাত ঘটে। বাংলাদেশ নামক গাড়িটা যখন এমনভাবে ব্রেক ফেইল করলো আর বাংলাদেশী নামক যাত্রীরা যখন আতঙ্কিত; চারদিকে যখন কষ্ট, বেদনা, চিৎকার, আহাজারি আর নিশ্চিত ধ্বংসের সুস্পষ্ট লক্ষণ, তখন রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন বর্বরতা তরুণ প্রতিবাদী সমাজ সচেতন হামিদুর রহমানের মনে আচঁড় কাটে। কেননা সবকিছু তো তার সামনেই ঘটছে। তিনি নিজের কানেই শুনছেন মানুষের নিদারুণ আর্তনাদ; ব্যথিত মনের হাহাকার। নিজের চোখে দেখছেন কিভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে শাসক নামধারী শোষক গোষ্ঠী। দীর্ঘ ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসন, ভোটচুরি, দুর্নীতিন, খুন, অন্যায়, অত্যাচার জনমনে ফেলেছিল বিরূপ প্রতিক্রিয়া। কোটা প্রথা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আবার ষড়যন্ত্র শুরু করে আওয়ামী সরকার। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন শুরু হয়েছিল। অহিংস এই আন্দোলন ১৫ জুলাই থেকে সহিংস হয়। আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র জনতার ওপর সশস্ত্র ঘাতক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ,পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা হামলা চালাতে থাকে। রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের শাহাদাতের পর থেকেই আন্দোলন গণমানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ক্রমেই জনসাধারণের আন্দোলনে রূপ নেয়। এটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন হিসেবে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। শুরুতে সাধারণ ছাত্রদের অহিংস আন্দোলন ধীরে ধীরে ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী অভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত হতে থাকে। পর্যায়ক্রমে এ আন্দোলন শুধু ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না; হয়ে উঠে দেশের আপামর জনতার এক বিশাল গণঅভ্যুত্থান। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এ অভ্যুত্থানে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজপথে বেরিয়ে আসে। ক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে স্বৈরাচার সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। যেভাবে শহীদ হলেন ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে হামিদুর রহমান কুমিল্লার বংশাল থানার সামনে অনুষ্ঠিত বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ করছিলেন। এই সময় সংঘর্ষে তার ওপর হঠাৎ গুলি ছোঁড়া হয়। বিকাল ৪টার দিকে এই ঘটনা ঘটে, যা তাকে গুরুতর আহত করে। সহকর্মীরা তাকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যায়, কিন্তু চিকিৎসকরা এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যু আন্দোলনের সঙ্গী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোক ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। প্রেরণায় শহীদ হামিদুর রহমান হামিদুর রহমানের আত্মত্যাগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি শক্তিশালী প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তার সাহসিকতা, সংকল্প ও আত্মত্যাগ আন্দোলনকে নতুনভাবে উদ্দীপিত করেছে এবং জাতির মাঝে একতা ও শক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। হামিদুরের জীবন ও মৃত্যু আন্দোলনের একটি শক্তিশালী উদাহরণ হিসেবে কাজ করে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য উৎসাহ এবং প্রেরণার উৎস। এক নজরে শহীদ হামিদুর রহমান সম্পর্কিত বিশেষ তথ্য নাম : হামিদুর রহমান জন্ম : ২ মার্চ ২০০৪ জন্মস্থান : কুমিল্লা আক্রমণকারী : স্বৈরাচারী সরকারের ঘাতক পুলিশ বাহিনী ঘটনার সময় : বিকাল ৪টা আহত হওয়ার ধরন : বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণকালে গুলিবিদ্ধ মৃত্যুর তারিখ : ৫ আগস্ট ২০২৪ মৃত্যুর স্থান : কুমিল্লার বংশাল থানার সামনে চিকিৎসার পরিস্থিতি : গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠান : সি এন এন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পেশা : ছাত্র পিতা : মো: ইকবাল মজুমদার (প্রবাসী) মা : কাজী শারমিন আক্তার (গৃহিণী) প্রস্তাবনা ১. শহীদ পরিবারকে এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদান ২. শহীদের ছোট ভাইয়ের পড়াশুনার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান
Image of হামিদুর রহমান

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: হোসাইন

ইউনুছ আলী শাওন

মো: আব্দুর রহমান (পারভেজ)

 মোহাম্মদ ওয়াসিম

মো: ইউসুফ

 কাউছার হোসেন

মোঃ মজিদ হোসেন

তানভীর হোসেন মাহমুদ

মো: তুহিন আহমেদ

মো: রাসেল বকাউল

আব্দুর রাজ্জাক রুবেল

মাসুম মিয়া

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo