জন্ম তারিখ: ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: চট্টগ্রাম
পেশা : ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : কক্সবাজার শহর
শহীদ আহসান হাবীব ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ তারিখে কক্সবাজার জেলার আসাদ আলী পাড়া, ফাসিয়ারখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তার জীবন ছিল উদ্যম ও প্রেরণায় পূর্ণ। মেধা ও নেতৃত্বের গুণাবলী তার চরিত্রের অঙ্গ ছিল। সবসময় তিনি ছিলেন এলাকার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের অগ্রদূত। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলেন অগ্রসেনানী। তার নৈতিকতা ও কর্তব্যবোধ ছিল অদ্বিতীয়, যা তাকে সবার কাছে প্রশংসিত করে তুলেছিল। শহীদ আহসান হাবিব একটি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা একজন উদ্যমী তরুণ। তার পিতা গ্রামের হাটে সবজি বিক্রি করেন, কিন্তু সীমিত পুঁজির কারণে তার ব্যবসা পরিবার চালানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। শহীদ আহসান হাবিব পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল এবং পরিবারও তার উপর আশাভরসা করেছিল। তিনি নিজের খরচের পাশাপাশি টিউশনি করে পরিবারের জন্য অর্থ পাঠাতেন, যা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতে সহায়তা করেছিল। তাদের সামান্য চাষাবাদের তেমন জায়গা জমিন নেই। সেমিপাকা একটি বসত বাড়ী রয়েছে শিক্ষা ও মেধা শহীদ আহসান হাবীব ছিলেন শিক্ষার প্রতি গভীর আগ্রহী। পড়াশোনায় তার ছিল অসাধারণ প্রতিভা এবং সর্বদা ভালো ফলাফলের জন্য পরিশ্রম করতেন। বিদ্যালয়ে তার শিক্ষকেরা তার মেধার প্রশংসা করতেন এবং তাকে ভবিষ্যতের একজন সফল মানুষ হিসেবে দেখতে পেতেন। তার শিক্ষা জীবন শুধু একাডেমিক নয়, বরং তার ব্যক্তিত্ব গঠনে এবং সমাজে তার ভূমিকা পালনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নেতৃত্ব ও নৈতিক গুণাবলী শহীদ আহসান হাবীবের নেতৃত্বের গুণাবলী তাকে সবসময় সমাজের অগ্রভাগে দাঁড় করিয়ে রাখত। তিনি ছিলেন সকল ছাত্র-জনতার বন্ধু ও পরামর্শদাতা। তাঁর নৈতিকতা ও সাহসিকতা তাকে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য করে তুলেছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা তাকে একটি আইকনিক চরিত্রে পরিণত করেছিল। শহীদ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিত ১৮ জুলাই ২০২৪, শহীদ আবু সায়েদসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে উত্তপ্ত পরিবেশের মধ্যে, কক্সবাজার শহরে ছাত্র-জনতা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এই মিছিল ছিল শান্তিপূর্ণ, কিন্তু পূর্ব প্রস্তুত অবস্থায় থাকা অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের ক্যাডাররা গুলিবর্ষণ করে। গুলির আঘাতে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সাধারণ পথচারীরা শহীদ আহসান হাবীবের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার হাসপাতালে নিয়ে যায়। একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর, ১৯ জুলাই বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়, এম্বুলেন্সে শহীদ আহসান হাবীব শাহাদাত বরণ করেন। ১৮ জুলাই ২০২৪, কক্সবাজার শহরে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ মিছিল চলাকালে, শান্তিপূর্ণ মিছিলে আগে থেকেই উপস্থিত অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের ক্যাডাররা গুলিবর্ষণ করে। এই ঘটনায় মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং আহসান হাবীব গুলিবিদ্ধ হন। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সাধারণ পথচারীরা তার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায়, ১৯ জুলাই বিকেলে শহীদ আহসান হাবীব শাহাদাত বরণ করেন। পরিবারের অচলাবস্থা শহীদ আহসান হাবীবের পরিবার ছিল একজন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সদস্য। তার পিতা গ্রামের হাটে সবজি বিক্রি করতেন, কিন্তু সীমিত পুঁজির কারণে তার ব্যবসা পরিবার চালানোর জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। শহীদ আহসান হাবীব নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে পরিবারের জন্য অর্থ পাঠাতেন, যা তাদের জীবনে কিছুটা সহায়তা করেছিল। তার মৃত্যুতে পরিবারটি গভীরভাবে অভিভূত ও অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে। শহীদ আহসান হাবীবের জীবন ও তার শাহাদাত দেশের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য তার অবদানকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে। তার আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করবে। শহীদ আহসান হাবিব ছোট বেলা থেকে পরহেজগার এবং সহজসরল। পরিবারের প্রতি অত্যন্ত দায়িত্ববান ছিলেন তিনি। সে চকরিয়া কলেজে ডিগ্রী-৩য় বর্ষ অধ্যয়নরত ছিলেন, আমরা তার হত্যার বিচার চাই। এক নজরে শহীদ আহসান হাবীব নাম : আহসান হাবিব পেশা : ছাত্র জন্ম তারিখ ও বয়স : ২৮-০২-১৯৯৯, ২৫ বছর, ১৯ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার, আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ টা শাহাদাত বরণের স্থান : কক্সবাজার শহর দাফন করা হয় : চরারকুল কেন্দ্রীয়জামে, কক্সবাজার কবরের জিপিএস লোকেশন : ২১ক্ক.ঘ৯৭৩০১৬৯৪৯২ক্ক০৮৪২২৭৯"ঊ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: আছদ আলীপাড়া, ফাঁসিয়াখালী থানা/উপজেলা: ফাঁসিয়াখালী জেলা: কক্সবাজার পিতা : হেলাল উদ্দীন মাতা : হাসিনা বেগম ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : আছে ভাইবোনের বিবরণ : শহীদেরা মোট ৩ জন সহযোগিতা প্রস্তাবনা ১. শহীদের পিতাকে যেকোন ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেয়া যেতে পারে ২. শহীদের ভাইকে চাকরীর ব্যবস্থা করে দেয়া যেতে পারে