Image of মো: শাহাদাত হোসেন শাওন

নাম: মো: শাহাদাত হোসেন শাওন

জন্ম তারিখ: ১৪ জুন, ২০১০

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : যাত্রাবাড়িতে

শহীদের জীবনী

শহীদ শাহাদাত হোসেন শাওন ঢাকার পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকার বাসিন্দা মো: বাছির আলম ও সামছুন নাহার বেগমের কনিষ্ঠ পুত্র। তিনি নূরে মদিনা আল আরাবিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। তিনি কোরআনে হাফেজ হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে নাজেরা ক্লাসে পড়তেন। ‘আমার ছেলে শাওন পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল। আমার পাঁচ সন্তান। চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে শুধু শাওনই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল’। ছেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত পিতা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘শাওনের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছিল। আমরা আশা করেছিলাম যে তার মাধ্যমে আমাদের ভাগ্য পাল্টে যাবে। রাজপথে নেমে আসে জনগণ বাঁধভাঙা উল্লাসে। বিজয় মিছিল বের হয় সারাদেশে। তখনও দেশের কোন কোন অংশে বর্বরতা চালায় খুনি হাসিনার পরাজিত শক্তি। ৫ আগস্টের বিজয় মিছিলে নির্মম গুলি চালায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। উত্তরা আজমপুর বিএনএস সেন্টার, সাভার থানা, আশুলিয়ায় অনেক মানুষ নিহত হয়। যাত্রাবাড়ির পুলিশেরা এই দিন ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালায়। পাখির মতো গুলি করে মানুষ মারতে থাকে। ৫ আগস্টে প্রায় দুইটার সময় লাখে লাখে জনতা খুনি হাসিনার গণভবন ঘেরাও করে ফেলে। হাসিনা তার আগেই পালিয়ে যায়। বাছির আলম বের হন বিজয় মিছিলের সাথে। তার সঙ্গে তার পুত্র শাহাদাত হোসেন শাওন। মিছিল যাত্রাবাড়ি পৌছে। যাত্রাবাড়ি আসতেই পড়ে যান পুলিশের গুলির মুখে। সেদিন পুলিশের নির্মমতায় যাত্রাবাড়িতে অসংখ্য মানুষের প্রাণ ঝরে। শহীদ হন শাহাদাত হোসেন শাওন। শাওন ছাড়াও বহু মানুষ খুন করেন যাত্রাবাড়ির পুলিশবাহিনী। শাওনদের মিছিল যাত্রাবাড়ি থানার সামনে আসতেই পুলিশ গুলি ছুঁড়তে থাকে। সময় তখন বেলা ২.৩০ টা। বুলেটবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন শাওন। গুলিবিদ্ধ হন আরও অনেকে। যাত্রাবাড়ি ছিল সেদিন মৃত্যুপুরি। পরে ওখান থেকে লাশ আনেন পরিবারের সদস্যরা। গ্রামের বাড়িতে নিয়ে নিজ গ্রামে তাকে দাফন করা হয়। পারিবারিক অবস্থা শাহাদাত হোসেন শাওনের পরিবার খুবই অসচ্ছল। একটি নিম্নবিত্ত পরিবার। তার বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ফুটপাতে হালিম, ফুচকা এসব বিক্রি করে কোন মতে সংসার চালায়। ৭ সদস্যের সংসার চালানো খুবই কষ্টের। শাওন তার বাবার সাথে ব্যবসায় সময় দিত। ঢাকায় একটি গিঞ্জি বাসায় ভাড়া থাকতেন। পরিবারের ছোট সন্তানকে হারিয়ে তারা মানসিক যাতনায় আছেন। শাওনের শোকে তার মা বারবার মূর্ছা যান। বাবা কাজে মন বসাতে পারছেন না। দুঃখ, দারিদ্রতার ভিতর সুখের সংসারে তার পুত্র শোক দুঃখকে দ্বিগুণ করে দিল। অনুভূতি শাওনের ভাই হানিফ। তার মতে শাওন ছোট বয়সেই সবার সাথে মিশে যাওয়ার স্বভাব গড়ে তুলেছিল। খুব ভালো ছেলে ছিল। কারও সাথে কটু কথা বলতো না। জাবেদ প্রতিবেশী। তার মতে খুব ভাল ছেলে ছিল শাওন। ভদ্র, নম্র, শান্তশিষ্ট ছেলে। তার মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। এক নজরে শহীদ শাহাদাত হোসেন শাওন নাম : শাহাদাত হোসেন শাওন জন্ম : ১৪-০৬-২০১০ পিতা : বাছির আলম মাতা : সামছুন নাহার বেগম স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম : খেজুরিয়া (সরদারবাড়ি), ইউনিয়ন: খেজুরিয়া থানা : সেনবাগ, জেলা: নোয়াখালী অস্থায়ী ঠিকানা : ধোলাইপাড়, শ্যামপুর ঢাকা পরিবারের সদস্য : ৬ জন নিহত হওয়ার সময়কাল, আঘাতকারী : যাত্রাবাড়িতে পুলিশের গুলিতে ৫ আগস্ট শহীদ হন কবর : নিজ এলাকায় প্রস্তাবনা ১. শহীদের পিতাকে এককালীন অনুদান দিলে ব্যবসা করতে পারতো ২. মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করলে সংসার চালাতে সহজ হত ৩. বাসস্থানের ব্যবস্থা করা ৪. ভাইদের চাকুরি, ব্যবসায় পুঁজি দিয়ে সহায়তা করা

শহীদ সম্পকির্ত কুরআনের আয়াত

আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত বলো না; বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পার না। (সুরা আল-বাকারা ২:১৫৪)

শহীদ সম্পকির্ত হাদিস

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শহীদদের আত্মা সবুজ পাখির পেটে থাকে।” (সহীহ মুসলিম ১৮৮৭)

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image
Image
Image
Image
শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo