Image of মো: মাহিন

নাম: মো: মাহিন

জন্ম তারিখ: ১০ আগস্ট, ২০০৯

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: মুদি দোকানের কর্মচারী , শাহাদাতের স্থান : বহদ্দারহাট চাক্তাই থানার সামনে চট্টগ্রাম।

শহীদের জীবনী

মো: মাহিন, জুলাই বিপ্লবের গর্বিত শহীদ, ১০ আগস্ট ২০০৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মৃত আমিন রসুল এবং মাতা রহিমা বেগম। মাহিনের স্থায়ী ঠিকানা হলো হারামিয়া গ্রাম, হারামিয়া ইউনিয়ন, সন্দ্বীপ থানা, চট্টগ্রাম জেলা। দেশের জন্য যিনি আত্মত্যাগ করেছেন ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি। মাহিনের সাহসিকতা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে একটি আলাদা জায়গায় অধিষ্ঠিত করেছে। ঘটনার বিবরণ ১৮ জুলাই ছাত্রদের ঘোষণা অনুসারে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু হয়। সারাদেশ আন্দোলনে উত্তপ্ত। ছাত্রদের উপর আগের দিন নির্মম হামলা করে আওয়ামী হানাদার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ বাহিনী। ছাত্ররাও রুখে দাঁড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে বিতাড়িত হয় আওয়ামী গুণ্ডালীগ। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে আসে রাস্তায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অগ্নিগর্ভ শ্লোগান। যে মানুষ নীরব ছিল সেও মনে মনে প্রস্তুতি নেয়। ছাত্রদের বুকের রক্তে জেগে ওঠে বাংলাদেশ। অভিভাবক, নাগরিক, পেশাজীবি পাশে দাঁড়ায় ছাত্রদের। আওয়ামীলীগ কার্যত গর্তে চলে যায়। ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বিভাগীয় শহরগুলোও ঢাকার মতো তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলন গণ আন্দোলনে রূপ নেয়। আওয়ামী দলীয় ক্যাডাররা আত্মগোপনে চলে যায়।তারা আগের মতো সরাসরি সামনে আসতে ভয় পায়। পুলিশের সাথে মিশে যায়। পুলিশ প্রটেকশনে সশস্ত্র হামলা চালায়। এই দিনসারাদেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিলে হানাদার আওয়ামী পুলিশ বাহিনীর হামলা হয়। শত শত মানুষ আহত হয়। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা এদিন আন্দোলনের মূল হাল ধরে ১৮ জুলাইয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে মীর মুগ্ধের শাহাদাত। মুগ্ধসহ মোট ৪০ জন শাহদাতবরণ করেন। এদিন সংঘর্ষ বেশি হয় ঢাকায়। চট্টগ্রামের মূল পয়েন্ট ছিল বহদ্দারহাট। সেখানেও তুমুল উত্তেজনা চলতে থাকে। বহদ্দারহাটেই মাহিন কাজ করে। সে মুদি দোকানের কর্মচারী। ছাত্রদের বয়সী। প্রতিদিন ছাত্রদের আন্দোলনে নানাভাবে অংশ নেয়। নির্যাতিত ছাত্রদের দেখে মাহিন আন্দোলনে নেমে পড়ে। আওয়ামীলীগ, পুলিশের বর্বরতা তাকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। শাহাদাত বরণ ১৮ জুলাই দিনভর মাহিন ছাত্রদের সাথে থাকে। বিকেলে পুলিশ মিছিলে হামলা করে। গুলি করে। সময় আনুমানিক ৪ টা। একটি বুলেট মাহিনকে এফোঁড় ওফোঁড় করে। লুটিয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত ছাত্ররা তাকে হাসপাতালে নিতে চায়। পথেই তার মৃত্যু হয়। দুঃখিনী মা দুঃখের সাগরে ডুবে যান। দেশ তার এক সন্তানের রক্তে রঞ্জিত হল। জানাজা শেষে প্রিয় গ্রামে স্থানীয় গোরস্থানে তাকে কবর দেওয়া হয়। মাহিন হয়ে যান জুলাই বিপ্লবের গর্বিত যোদ্ধা। পারিবারিক অবস্থা শহীদের পিতা মারা গেছেন। তার এক ভাই আছেন বেকার। তাদের আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। শহীদ মাহিন ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের থাকার ঘর নাই। পরিবারটি একেবারেই অসচ্ছল। তার মা বিধবা, পুত্রহারা, একজন দুঃস্থ, অসহায় নারী। পরিবারটি দেখার কেউ নাই। অনুভূতি মাহিন শৈশব কাটিয়ে উঠার আগেই তার বাবা মারা যান। শৈশবে যে চাঞ্চল্য থাকে তা আর রয়নি। অতি শৈশবেই ধরতে হয় সংসারের হাল। সে একটি মুদির দোকানে চাকরি করত। খুব শান্ত ও ভদ্র ছিল। মাত্র পনের বছরের কিশোর। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার মৃত্যুতে শহীদের মা নির্বাক। তিনি পুত্র হত্যার বিচার চান। বন্ধুরা বলেন, মাহিন খুব ভদ্র ছেলে। আমরা তার হত্যার বিচার চাই। এক নজরে শহীদের তথ্যাবলি নাম : মো: মাহিন জন্ম : ১০-০৮-২০০৯ সালে পিতা : মৃত আমিন রসুল মাতা : রহিমা বেগম স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: হারামিয়া ইউনিয়ন: হারামিয়া। থানা: সন্দ্বীপ, জেলা: চট্টগ্রাম বর্তমান ঠিকানা : গ্রাম: হারামিয়া, ইউনিয়ন: হারামিয়া থানা : সন্দ্বীপ, জেলা: চট্টগ্রাম পরিবারের সদস্য : ২ জন পেশা : চাকরি (মুদির দোকানে) অর্থনৈতিক অবস্থা : অসচ্ছল শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৮ জুলাই, বহদ্দারহাট চাক্তাই থানার সামনে চট্টগ্রামে কবর : হারামিয়া কবরস্থান প্রস্তাবনা ১. শহীদের পরিবারের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া। ২. মায়ের জন্য মাসিক ভাতা দেওয়া। ৩. এককালীন অনুদান দেওয়া। ৪. ভাইকে চাকরি দেওয়া।

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: মাহিন
Image of মো: মাহিন
Image of মো: মাহিন
Image of মো: মাহিন
Image of মো: মাহিন

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মাসুম মিয়া

মো: আবদুল কাদির

মো: হাসান

মো: পারভেজ

মো: কামরুল মিয়া

মো: মাঈন উদ্দিন

মো: রুবেল

মো: ফরিদ আহম্মদ ছৈয়াল

মো: তানভীর ছিদ্দিকী

ইশতিয়াক আহমেদ

মো: সরোয়ার জাহান মাসুদ

মো: সাইফুল ইসলাম আরিফ

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo