Image of মো: সাজ্জাদ হোসেন

নাম: মো: সাজ্জাদ হোসেন

জন্ম তারিখ: ১০ এপ্রিল, ১৯৯৫

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: রংপুর

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: ফল বিক্রেতা, শাহাদাতের স্থান: রংপুর সিটি বাজারের সামনে

শহীদের জীবনী

মো: বাবু মিয়া ও মোসা: ময়না বেগম দম্পত্তির ঘরে প্রথম পুত্র সন্তান হিসেবে ১০ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে রংপুরের কামাল কাছনা এলাকার শিক্ষাঙ্গনে জন্মগ্রহণ করেন মো: সাজ্জাদ হোসেন। শিক্ষাজীবন: সাজ্জাদের পিতা পেশায় ছিলেন একজন ফল বিক্রেতা। ইচ্ছে ছিল ছেলেকে পড়াশোনা করিয়ে অনেক বড় করবে, ছেলে মানুষের মতো মানুষ হবে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! খুবই অল্প সময়ের মাঝেই ইহকালীন মায়া ত্যাগ করে চলে যান মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে। শৈশব কালে পরিবারের বটবৃক্ষ নামক পিতা হারানোর ব্যথা বয়ে বড় হয় সাজ্জাদ। সাজ্জাদের ভাই বোন সহ পরিবারের মোট সদস্য ৮ জন। সম্পত্তি বলতে কেবল পিতার রেখে যাওয়া ২ শতক বাড়ির জায়গা রয়েছে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ৫ম শ্রেণির বেশি পড়াশুনা করা সম্ভব হয়নি। কর্মজীবন: বাল্যকাল হতেই কঠিন জীবন সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করেন। পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণের ভার আসলে সাজ্জাদ যোগ দেন বাবার পুরোনো সেই ফল বিক্রির ব্যবসায়। স্বৈরাচার সরকার নিত্য পণ্যের দাম যে হারে বাড়িয়েছে, সাজ্জাদের সামান্য উপার্জন দিয়ে ৮ সদস্যের পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। যার ফলে ছোট ভাইকে পড়াশোনা না করিয়ে কাজে দিতে বাধ্য হয়। দুই ভাইয়ের সামান্য উপার্জনের টাকা দিয়ে এত বড় একটি পরিবার কোনোমতে চলতো। অভাব অনটন নিয়েও আনন্দ আর ভালোবাসায় ছোট একটি পরিবার নিয়ে সাজ্জাদ বসবাস করতো রংপুর সিটি কর্পোরেশন এর শিক্ষাঙ্গন রোডে। সাজ্জাদের পরিবার: সাজ্জাদের স্ত্রী সহ ফুলের মতো সুন্দর নিষ্পাপ একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। খুবই অল্প বয়সে মেয়েটি এতিম হয়ে গিয়েছে। তাকে বাবার কথা জিজ্ঞাসা করলে মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। বাবা হারিয়ে তার ভেতরে প্রচণ্ড ব্যথা কাজ করছে। স্বামী হারিয়ে নির্বাক সাজ্জাদের স্ত্রী। শাহাদাতের ঘটনা: প্রতিদিনের ন্যায় সাজ্জাদকে সকাল থেকেই ব্যবসার নানান কাজ করতে হয়, সে হিসাবে ১৯ জুলাই শুক্রবার বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। দৈনন্দিন কাজ করে আবার বাসায় জুমার নামাজ পড়ার জন্য বাসায় ফিরে আসেন। জুমার নামাজ পড়ে খেয়েদেয়ে তিনি ফল বিক্রি করার জন্য পুনরায় সিটি বাজারে ফিরে আসেন। এসেই দেখতে পান পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নিরীহ শিক্ষার্থীদের উপর মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এ সময় সাজ্জাদ শিক্ষার্থীদের সাথে স্বৈরাচারী সরকারের বৈষম্যদূরীকরণের মিছিলে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলে পুলিশের ছোঁড়া একটি গুলি এসে বাম পাঁজর দিয়ে ঢুকে তার ডান পাঁজর দিয়ে বের হয়ে যায়। তার ডান হাত গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী শাহ আলমের ভাষ্যমতে, সাজ্জাদকে রংপুর সিটি বাজারের সামনে আনুমানিক ৪.৩০ মিনিটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তিনি সামনে গিয়ে দেখেন সাজ্জাদ শহীদ হয়েছেন। সেখানে কতিপয় লোকজন সাজ্জাদ হোসেনকে নিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সাজ্জাদের লাশের প্রতি স্বৈরাচারীদের নির্যাতন: লাশ বাড়িতে আনা হলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা করতে গেলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাধা দেয়। পরদিন সকাল ১১ টায় লাশ দাফন করা হয়। এবং স্থানীয় কবরস্থানে তাকে কবর দেয়া হয়। রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান: পিতৃহীন পরিবারের দায়িত্বশীল সৎ ভাবে উপার্জন করে খেটে খাওয়া সাজ্জাদকে নির্মমভাবে প্রকশ্যে দিবালোকে আওয়ামী সন্ত্রাসী, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ আওয়ামী মদদপুষ্ট পুলিশ বাহিনী গুলি করে হত্যা করে। এলাকাবাসী ও শহীদের পরিবার এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন। মহান আল্লাহ তার শাহাদাতকে কবুল করুন। এক নজরে শহীদের ব্যক্তিগত তথ্য শহীদের পূর্ণ নাম : মো: সাজ্জাদ হোসেন জন্ম তারিখ : ১০ এপ্রিল ১৯৯৫ পেশা : ফল বিক্রেতা পিতা : মৃত বাবু মিয়া মাতা : মোসা: ময়না বেগম (৫২), পেশা: গৃহিণী পরিবারের সদস্য সংখ্যা : ৮ জন ১. বাবলি আক্তার (৩৫) গৃহিণী: বোন ২. লাবনী আক্তার (৩০) গৃহিণী: বোন ৩. সুবর্না খাতুন (২৮) গৃহিণী ৪. শহীদ মো: সাজ্জাদ হোসেন (২৯) ব্যবসায়ী ৫. মো: শাফিন হোসেন (২৫) দোকানের কর্মচারী ভাই স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা : শিক্ষাঙ্গন রোড-০৪, পূর্ব কামাল কাছনা, কতোয়ালী থানা, রংপুর

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: সাজ্জাদ হোসেন
Image of মো: সাজ্জাদ হোসেন
Image of মো: সাজ্জাদ হোসেন
Image of মো: সাজ্জাদ হোসেন

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: আসাদুল হক বাবু

মো: মঞ্জু মিয়া

মো: শাহাবুল ইসলাম ( শাওন )

মো: শাহরিয়ার আল আফরোজ শ্রাবন

মো: সাহান পারভেজ

মো: রাকিবুল হাসান রকি

মো: তৌফিক ইসলাম ভূঁইয়া

হাফেজ মো: নাসির ইসলাম

আবু সাঈদ

আব্দুল্লাহ আল তাহির

শাকিনুর রহমান

মো: রবিউল ইসলাম রাহুল

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo