জন্ম তারিখ: ২১ নভেম্বর, ১৯৮০
শহীদ হওয়ার তারিখ: ২১ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: রংপুর
পেশা: প্রকৌশলী, শাহাদাতের স্থান : ঢাকা মেডিকেল
১৫ বছর পর স্বৈরাচারী শাসকের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে সোনার বাংলাদেশ। রংপুর জেলার সদর থানার মহাদেবপুর চাওড়াপাড়া গ্রামের মো: আ: হাদী ভুঁইয়া, এ আলী ও হোসনে আরা বেগম ঘর আলোকিত করে ২১ নভেম্বর ১৯৮০ সালে মো: তৌফিক ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। বড় হয়ে নিজেকে একজন প্রকৌশলী হিসেবে তৈরি করেন। লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তিনি। বিএসসি শেষ করে পেডরোলা পাম্প লিমিটেডে কোম্পানিতে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে মোসা: ইসমাম জাহান ইলোরার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শহীদ তৌফিক ইসলাম পরিবারের একমাত্র সবেধন নীলমণি ছিলেন। যেভাবে শহীদ হলেন ১৯ জুলাই ২০২৪ দিনটি ছিলো শুক্রবার। কোটা সংস্কার এর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট সাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীর ঢাকায় ব্যপক সংঘর্ষ হামলা ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই আন্দোলনে শহীদ তৌফিক ইসলাম কোটা সংস্কার এর পক্ষে ছিলেন। এই দিন ঢাকা ও বিভাগীয় শহর গুলোতে নারকীয় তাণ্ডব ও নৈরাজ্য চালায় আওয়ামী দুর্বৃত্তরা। সে দিনটি ছিলো থমথমে। উত্তপ্ত ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে হাসিনা সরকার। আন্দোলনকে প্রতিহত করতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিটিভি ভবন, সেতু ভবন, দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ভবন, মিরপুর ১০, ও কাজি পাড়া মেট্রোরেল স্টেশন, উত্তরা এক্সপ্রেসওয়ে টোল সংগ্রহ বক্স ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একই দিনে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, রামপুরা, মোয়াখালী,বনানী , মিরপুর, মোহাম্মদপুরে ছাত্র জনতার উপর পৈশাচিক আক্রমণ চালায় চাঁদাবাজ পুলিশ ও দখলদার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। নিকৃষ্ট পুলিশের গুলিতে আহত হন শহীদ তৌফিক ইসলাম।তারপর তিনি একাই নিজের বাসার সামনে এসে পড়ে যায়। তখন তার বাসার দারোয়ান ও তার পরিবার তাকে বাসার কাছাকাছি এম ডেজ হসপিটালে নিয়ে যায় সেখানে পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় তার চিকিৎসা হয় না। পরবর্তীতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি ২ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর ২১ জুলাই ২০২৪ তারিখে সকাল ৬ টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কেমন আছে শহীদ তৌফিক এর পরিবার শহীদ তৌফিকের ছোট ২টি মেয়ে আছে। যাদের বয়স যথাক্রমে সাত ও দুই বছর। শহীদ তৌফিক বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেছিলেন। মায়ের জন্য ছিলেন আশ্রয় স্থল, সন্তানদের জন্য ছিলেন বটবৃক্ষের ছায়া। টোকাই পুলিশের কারণে হাজার হাজার পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে আজ। অসংখ্য মা সন্তানহারা হয়েছেন। অগনিত শিশু এতিম এবং অসংখ্য বোন বিধবা হয়েছেন। তাদের মধ্যে তৌফিক ইসলামের পরিবারও আছে। রেখে যাওয়া স্মৃতি শহীদ তৌফিক ইসলাম ছিলেন অত্যন্ত মিশুক প্রকৃতির মানুষ।তিনি সকলের সাথে সুন্দর ব্যাবহার করতেন। সকালের বিপদে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতেন। তিনি শান্তিপূর্ণ জীবন পছন্দ করতেন। বাবাকে হারিয়ে অবুঝ শিশুদের আর্তনাদ যেন কোনভাবেই থামছে না। এক নজরে শহীদের তথ্য নাম : মো: তৌফিক ইসলাম ভূঁইয়া পেশা : প্রকৌশলী জন্ম তারিখ : ২১-১১-১৯৮০ পিতার নাম : মো: আ: হাদী ভুঁইয়া মাতার নাম : হোসনে আরা বেগম আহত হওয়ার সময় ও তারিখ : ১৯-৭-২০২৪, সকাল: ১১ টা মৃত্যুর তারিখ, সময় ও স্থান : ২১-৭-২০২৪, ভোর: ৬ টা কবরের (জি পি এস) লোকেশন : স্থায়ী ঠিকানা : জেলা-রংপুর, থানা-রংপুর সদর, ইউনিয়ন-হরিদেবপুর, গ্রাম-মাহাদেবপুর প্রস্তাবনা ১. মাসে ১০ হাজার পরিমাণ আর্থিক অনুদান দেওয়া যেতে পারে ২. শহীদ স্ত্রীকে কর্মসংস্থান করে দেওয়া যেতে পারে ৩. শহীদ সন্তানদেরকে এতিম প্রতিপালনের আওতাধীন করা যেতে পারে