জন্ম তারিখ: ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: ময়মনসিংহ
পেশা: বাবুর্চি শাহাদাতের স্থান : ধানমন্ডি ৩২ নং রোড, ঢাকা
শহীদ মো: কামাল হোসেন ১৯৯৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার খুলিয়ার চরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । পিতা হাশিম উদ্দিন (৬০) একজন কৃষক এবং মা মজিদা খাতুন (৫০) একজন গৃহিণী । কঠোর পরিশ্রমী ও শান্ত স্বভাবের শহীদ কামাল হোসেন ছিলেন একজন বাবুর্চি। স্বৈরাচার খুনি হাসিনা পালানোর দিন অর্থাৎ ৫ আগস্ট সন্ধ্যার সময় বাবুর্চির কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার রোডে পুলিশের আক্রমণে ঘটনাস্থলেই শাহাদাত বরণ করেন।শাহাদতের প্রেক্ষাপট ৫ আগস্ট ভারতের সেবাদাসী খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে দিল্লি গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। হাসিনা পালালেও তার প্রেতাত্মা সারা দেশে তৎপর ছিল। তখনো তার প্রভাবে বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল ঘাতকের দল। শহীদ কামাল হোসেন প্রতিদিনের মতো বাবুর্চির কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার রোড দিয়ে যাওয়ার সময় আকস্মিক সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনর কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল। এ সময়ই শহীদ কামাল হোসেন সেই সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান। তিনি নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন কিন্তু পুলিশের আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেননি। ঘাতক পুলিশের গুলিতে তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃতদেহ রাস্তায় পড়েছিল। তবুও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারছিলেন না। পরবর্তীতে একজন সাধারণ পথিক শহীদ মো: কামাল হোসেনের পকেটে থাকা মোবাইল ফোন থেকে পরিবারকে মৃত্যুর সংবাদ জানান। ডেমরায় বসবাসরত আপন তিন ভাই তাৎক্ষণাৎ ছুটে আসেন। দ্রুত তারা লাশটি সংগ্রহ করেন। ৬ আগস্ট সকালে শহীদ কামাল হোসেনের মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে যান এবং কবরস্থ করেন। শহীদের মৃত্যুর পর বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতিক্রিয়া শহীদের স্বজনেরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত বিচার কামনা করেন। তারা শহীদ কামাল হোসেনকে অতি শান্ত স্বভাবের এবং কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে উল্লেখ করেন। ইলিয়াস উদ্দিন বলেন, " কামাল হোসেন খুব ভালো ছেলে ছিল বড়দের সাথে বেয়াদবি করত না এবং আদর্শবান ছিলেন। " শহীদের কর্মস্থলের সহকর্মীরা বলেন, " কামাল হোসেন ছিল অতি শান্ত স্বভাবের। " শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য শহীদ কামাল হোসেনরা আট ভাইবোন। তিনি ছিলেন চতুর্থ। বিবাহিত শহীদ কামাল হোসেন স্ত্রী কে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। স্বামীকে হারিয়ে বিধবা স্ত্রী অসহায় হয়ে পড়েছেন। সদ্য বিবাহিত এই নারীর আয়ের কোন নির্ভরযোগ্য উৎস নেই। শহীদ পরিবারের জন্য করণীয় ১. শহীদের স্ত্রীর জন্য নিয়মিত মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা। ২. শহীদের বৃদ্ধ পিতা-মাতার জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা। এক নজরে শহীদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী নাম : শহীদ মো: কামাল হোসেন জন্ম তারিখ : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ পিতার নাম : হাশেম উদ্দিন (৬০) মাতার নাম : মজিদা খাতুন (৫০) স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: খুলিয়ারচর, ইউনিয়ন: রাজিবপুর, থানা: ঈশ্বরগঞ্জ, জেলা: ময়মনসিংহ বর্তমান ঠিকানা : খুলিয়ারচর, রাজিবপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ আহত হওয়ার স্থান : ধানমন্ডি ৩২ নং রোড, ঢাকা আহত হওয়ার সময় কাল : ৫ আগস্ট, ২০২৪, সন্ধ্যা শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ৫ আগস্ট, ২০২৪। সময়: সন্ধ্যা, ধানমন্ডি ৩২ নং রোড, ঢাকা যাদের আঘাতে শহীদ : পুলিশের গুলি