Image of শহীদ জাকির হোসেন

নাম: শহীদ জাকির হোসেন

জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ২০০০

শহীদ হওয়ার তারিখ: ২১ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ময়মনসিংহ

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: ওয়াসার লাইন শ্রমিক , শাহাদাতের স্থান : চিটাগাং রোড, ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন ।

শহীদের জীবনী

শহীদ জাকির হোসেন ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা মৃত মো: ফজলু মিয়া এবং মা রোকিয়া শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তার এক পা অচল। শহীদ ওয়াসার লাইন শ্রমিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম মানুষ। ২১ জুলাই ২০২৪ সারাদিন দেশ উত্তাল। মাগরিবের ঠিক আগে চিটাগাং রোডে পুলিশের সাথে ছাত্র জনতার তুমুল সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। জাকির হোসেনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ পুলিশের ছোড়া একটি গুলিতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। শাহাদতের প্রেক্ষাপট শহীদ জাকির হোসেন ছিলেন একজন খেটে খাওয়া মানুষ। শ্রমিক জাকির হোসেনরাই এদেশের মানুষের যথার্থ প্রতিচ্ছবি। কতদিন পাতে মাছ মাংস উঠেনি তা নিজেও হয়ত বলতে পারবেন না। দ্রব্যমূল্যের যে উগ্রগতি তাতে মাছ মাংস তো দূরে থাক ঠিকমতো মানুষ সবজিও কিনতে পারে না। অথচ আওয়ামী দুর্নীতিবাজরা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে সামান্য কর্মী পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি হাজার কোটি টাকার মালিক। নরপিশাচ শেখ হাসিনার বাড়ির চাকর পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে গিয়েছিল এবং হেলিকপ্টার ছাড়া যাতায়াত করত না। মন্ত্রী এমপি থেকে শুরু করে অভিনেতা পাতিনেতা, আওয়ামী সমর্থক চোর ছেচঁড় লুটেরা বাটপাররা এদেশের সিংহভাগ সম্পত্তির দখল নিয়েছিল। দেশটা তাদের বাপের সম্পত্তি মনে করে সবকিছু ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছিল। কানাডা, আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ভারতের ধনীদের সাথে টেক্কা দিয়ে জায়গা জমি সম্পদ বাড়াতে ব্যস্ত ছিল। অথচ দেশের সাধারণ মানুষ সবজি বাজারে গিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়তো। মুরগির বাজারে গিয়ে সন্তানের কথা মনে করে কান্না করতো দিত। আওয়ামী সিন্ডিকেট পণ্য সামগ্রীর দাম ইচ্ছেমতো বাড়াতো। অথচ সন্ত্রাসের জননী, মিথ্যুক, প্রতারক জীঘাংসা বাস্তবায়নকারী মাদার অফ মাফিয়া খ্যাত খুনি হাসিনা দশ টাকা কেজি চাল আর ঘরে ঘরে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু বাজারের কি অবস্থা করে ফেলেছিল? ষাট থেকে সত্তর টাকা কেজি আলু, দুইশ বা তিনশ টাকা কেজি ধরে রসুন, পেঁয়াজ, যেকোনো সবজির দাম শতাধিক টাকার কাছাকাছি আর মাছ-মাংসের দামের কথা তো বলাই বাহুল্য। এ অবস্থায় কোন বিবেকবান মানুষ আদালত কর্তৃক রং হেডেড ঘোষিত অসুস্থ খুনি হাসিনার কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা না করে থাকতে পারেন না। খুনি হাসিনা, তার কুপুত্র জয়, হাসাও মাহমুদ খ্যাত হাসান মাহমুদ, রাজাকারের দোসর কামরুল, মিথ্যুক প্রতারক আরাফাত এ রহমান, বাংলা ভাষার প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শনকারী ব্যাংক ও শেয়ার বাজার লুণ্ঠনকারী দরবেশ হিসেবে খ্যাত সালমান এফ রহমান,শাহরিয়ার কবির, ওবায়দুল , বিপ্লব কুমার,মমতাজ, অহংকারী সাকিব জাতির সাথে তামাশা করতে বিন্দুমাত্র অবহেলা করত না। মাদার অফ মাফিয়া খুনী হাসিনা দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ না করে জনগণের সাথে নিষ্ঠুর তামশা করত। বেগুনের পরিবর্তে মিষ্টি কুমড়া খাও, খেজুরের পরিবর্তে বড়ই, কাঁচা মরিচ ডিম ফ্রিজে রেখে খাও, মাংসের বদলে কাঁঠাল খাও, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেব যেন লোডশেডিং এর মজা পাও, মোবাইল তো আমরা দিয়েছি, আমরা তোমাদের বয়স বাড়িয়ে দিয়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি অবান্তর হাস্যকর বাক্যবাণ নিক্ষেপ করে জাতির কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিত। এইসব নিষ্ঠুর রসিকতা একজন অতি সাধারণ নাগরিকও বুঝতে পারতেন। তাই তো হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে এত গণজোয়ার। এই গণজোয়ারে কাউকে অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়নি, কাউকে ডান্ডার ভয় দেখানো লাগেনি কিংবা চাকুরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে কর্মসূচি পালনে বাধ্য করা হয়নি। নিজের স্বীয় পবিত্র দায়িত্ব মনে করে সবাই এ আন্দোলন অংশগ্রহণ করেছিল। অতি দরিদ্র ঘরের নিঃস্ব সন্তান, রাস্তার ছিন্নমূল পথ শিশুসহ একেবারে নিম্ন শ্রেণির মানুষও ছাত্র জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল। শহীদ জাকির হোসেন ছিলেন ওয়াসা লাইন শ্রমিক। প্রতিবন্ধী মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান ছিলেন তিনি। বাবা মৃত। সহায় সম্বলহীন এই মানুষটি চিটাগাং রোডে গত ২১ জুলাই ২০২৪ পুলিশের ছোড়া বুলেটে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যান। একটি বুলেট জাকির হোসেনের পেট ভেদ করে বেরিয়ে যায়। প্রচন্ড রক্তক্ষরণের এক পর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। শহীদের মৃত্যুর পর আত্মীয়স্বজনের প্রতিক্রিয়া শহীদের খালাতো ভাই এন্তাজ মিয়া বলেন, "জাকিরের আচরণ ভালো ছিল। সে নিয়মিত নামাজ পড়তে পড়তো।" শহীদের মা বলেন, "আমি বেঁচে থাকতে ঘাতক খুনির শাস্তি দেখতে চাই। " শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য শহীদের বাবা মৃত। মা শারীরিক প্রতিবন্ধী (এক পা অচল )। বাড়িঘর নেই, জমি অন্যের দখলে। শহীদের মা তার বোনের বাসায় বসবাস করেন। শহীদ ছিলেন মায়ের একমাত্র সম্বল। অসুস্থ হলেও ছেলেকে কোলে পিঠে মানুষ করেছিলেন শহীদ জননী। আশা ছিল শেষ বয়সে একটু আশ্রয় পাবেন সন্তানের কাছে। কিন্তু ঘাতকরা সে আশা আজ নিরাশা করে দিয়েছে। শহীদ প্রোফাইল নাম : জাকির হোসেন পিতা : মো: ফজলু মিয়া (মৃত) মাতা : রোকিয়া জন্ম তারিখ : ১ জানুয়ারি ২০০০ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: বাকল জোড়া, ইউনিয়ন: বাকলজোড়া, থানা: দুর্গাপুর, জেলা: নেত্রকোনা বর্তমান ঠিকানা : বাকলজোড়া, দুর্গাপুর, নেত্রকোনা আহত হওয়ার স্থান : চিটাগাং রোড,ঢাকা আহত হওয়ার সময়কাল : ২১ জুলাই ২০২৪, মাগরিবের আগে শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ২১ জুলাই ২০২৪, চিটাগাং রোড, ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন । যাদের আঘাতে শহীদ : পুলিশের গুলি শহীদের কবরস্থান : বাকলজোড়া, দুর্গাপুর, নেত্রকোনা শহীদ পরিবারের জন্য করণীয় ১. প্রতিবন্ধী মাকে মাসিক অথবা এককালীন সহায়তা করা যেতে পারে ২. শহীদদের জমিটি উদ্ধারে সাহায্য করা যেতে পারে

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of শহীদ জাকির হোসেন
Image of শহীদ জাকির হোসেন

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: জিন্নাতুল ইসলাম খোকন

মো: রাহুল

মো: আনারুল ইসলাম

মো:  শাকিবুল হাসান সাজু

মো: মাছুম বিল্লাহ

 মো: রাব্বী মিয়া

আ: আজিজ

 মো: সাইফুল ইসলাম

মো: এ কে এম শহীদুল ইসলাম

মো: রুবেল

আব্দুল্লাহ আল মাহিন

মো. শাহিন মাহমুদ শেখ

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo