Image of সাইফুল ইসলাম (সেকুল)

নাম: সাইফুল ইসলাম (সেকুল)

জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ১৯৮৭

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ময়মনসিংহ

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: প্রবাসী শাহাদাতের স্থান : উত্তরা, ঢাকা

শহীদের জীবনী

শহীদ মো:সাইফুল ইসলাম (সেকুল) ১৯৮৭ সালের ১ জানুয়ারি নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বারইকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতা মো: তৈয়ব আলী এবং মা রোকেয়া খাতুন। জীবিকার তাগিদে প্রবাসী হিসেবে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন সেকুল। মালয়েশিয়া থেকে এক বছর পর ৩ আগস্ট রাত বারোটা এয়ারপোর্টে নেমে উত্তরায় এক আত্মীয়র বাসায় উঠেন। ৪ আগস্ট সারাদিন মিছিলে অংশ নেন। ৫ আগস্ট দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পর বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। শাহাদতের প্রেক্ষাপট জীবিকার তাগিদে শহীদ সাইফুল ইসলাম সেকুল মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন। তার মাসিক আয় ছিল ৫০ হাজার টাকারও বেশি। ইচ্ছে করলেই তিনি সেখানে সুখী জীবন যাপন করতে পারতেন। কিংবা বাংলাদেশে এসেও নিজেকে আন্দোলন সংগ্রাম হতে দূরে রাখতে পারতেন। কিন্তু দেশের এই বিপদের দিনে স্বার্থপরের মতো তিনি নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চাননি। তাইতো মাত্র রাত বারোটায় বিমান থেকে নেমেই পরেরদিন সকালে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। জানা ছিল না কবে হাসিনা সরকারের পতন হবে, জানা ছিল না কবে স্বৈরাচার মুক্ত হবে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। তবুও তিনি অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলনে। বাড়িতে অপেক্ষারত স্বজন, প্রিয়জন, শুভাকাঙ্ক্ষী তবে সব কিছুর চেয়ে দেশ এবং দেশের জনগণ তার কাছে বড় হয়ে দেখা দেয়। দেশের এই সংকটে গ্রামের ফিরে যাওয়ার চেয়ে আন্দোলনকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বোনকে সাথে নিয়েই ৪ আগস্ট যোগদান করেছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। ৫ আগস্ট বিজয়ের মুহূর্তে বিকালে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার সামনে গুলি বিদ্ধ হন সেকুল। এরপর মুহূর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। বোনসহ সাথে থাকা লোকজন সেকুলকে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই লাশ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বড়ইকান্দি গ্রামে। পরদিন সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শহীদের স্বজনদের প্রতিক্রিয়া শহীদের আন্দোলন সংগ্রামের সাথী ছোট বোন লিমা আক্তার রিমু বলেন, "চোখের সামনে গুলিতে ভাইয়ের মৃত্যু দেখেছি। এ দৃশ্য ভোলার মত নয়। দুজন একসাথে বাসা থেকে বের হলাম, চোখের সামনে ভাইয়ের শরীরে গুলি লাগলো। মাটিতে লুটিয়ে পড়ল,মৃত্যু ও হলো চোখের সামনে। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যেভাই আর নেই। ভাই বাড়ি ফিরবে সবাই অপেক্ষা করছে। কত আনন্দ হবে। অথচ ফিরতে হলো ভাইয়ের লাশ নিয়ে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।" শহীদের মা রোকেয়া খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, "সেকুল আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিল ঢাকার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। কিন্তু চিন্তা করিও না আমি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরব। এভাবে বাড়ি ফিরবে কল্পনাও করিনি। বাড়ি ফেরার কথা বলে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল ছেলেটা। এই মৃত্যুতে দায়ীদের কঠিন শাস্তি চাই এবং আমি আমার ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।" শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য সাইফুল ইসলাম সেকুল নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে। দুই ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সেকুল দ্বিতীয়। হাল ধরতে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়া। তার আয়েই চলত পরিবারের সকলের ভরণ পোষণ। বড় ভাই খাইরুল ইসলাম কৃষক। বোন হিমু আখতার (২৭) বিবাহিত এবং ছোট বোন লিমা আক্তার রিমু (২২) অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। শহীদ প্রোফাইল নাম : মো: সাইফুল ইসলাম (সেকুল) পিতা : তৈয়ব আলী মাতা : রেকেয়া খাতুন। জন্ম তারিখ : ০১ জানুয়ারি ১৯৮৭ স্থায়ী ঠিকানা : নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরের বারইকান্দি শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ৫ আগস্ট, ২০২৪, উত্তরা পূর্ব থানার সামনে যাদের আঘাতে শহীদ : পুলিশ শহীদের কবরস্থান : পারিবারিক কবরস্থান, দুর্গাপুর, বারইকান্দি, নেত্রকোনা শহীদ পরিবারের জন্য করণীয় ১. শহীদের পরিবারকে এককালীন অনুদান দেওয়া যেতে পারে ২. শহীদের পিতামাতাকে মাসিক আর্থিক সহায়তা করা দরকার। তাদের শারীরিক এবং আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of সাইফুল ইসলাম (সেকুল)
Image of সাইফুল ইসলাম (সেকুল)
Image of সাইফুল ইসলাম (সেকুল)

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: বিপ্লব হাসান

মো: মোস্তফা

 মোঃ রফিকুল ইসলাম

মোখলেসুর রহমান

মো: হাফিজুল ইসলাম

মো: মিজানুর রহমান

সাব্বির ইসলাম

মো: মাহিন মিয়া

আব্দুল্লাহ আল মাহিন

 মো: সাইফুল ইসলাম

মো: তরিকুল ইসলাম রুবেল

মো: মাসুম শেখ

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo