Image of মো: আহাদুন

নাম: মো: আহাদুন

জন্ম তারিখ: ১ ডিসেম্বর, ২০০৭

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ময়মনসিংহ

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : মেরুল বাড্ডা, ঢাকা

শহীদের জীবনী

শহীদ আহাদুন ০১ ডিসেম্বর ২০০৭ সালে নেত্রকোনার শ্যামপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শহীদ পিতা মজিবুর রহমানের চায়ের দোকান আছে। মা মোসা: কল্পনা আক্তার গৃহিণী। আহাদুন হাজী সিকান্দার আলী টেকনিক্যাল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই কর্মী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অনুগত বাহিনী কর্তৃক হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে ইন্তেকাল করেন। মেধাবী এই তরুণের ইলেকট্রনিক্সের প্রতি ছিল অগাধ আগ্রহ। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট পতিত স্বৈরাচার খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে সারাদেশব্যাপী সর্বাত্মক গণআন্দোলন শুরু হয়। এমন গণ-আন্দোলন ইতিপূর্বে কখনো বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ করেনি। অবৈধ দখলদার হাসিনা সরকার আন্দোলনকে দমাতে মানুষদের ঘর বন্দী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। জারি করে কারফিউ। আন্দোলনরত জনতা কারফিউকে খোড়াই কেয়ার করলে আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করে খুনি হাসিনা। হেলিকপ্টার থেকে স্নাইপার দিয়ে গুলি করে জনগণকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ১৮ জুলাই ২০২৪ রাজধানীর ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ শুরু করলে দুধের বাচ্চাসহ সব শ্রেণির মানুষ হতাহতের শিকারে পরিণত হয়। আহাদুনের পরিবার বসবাস করে ঢাকার মেরুল বাড্ডা এলাকায়। এই এলাকাতেও হেলিকপ্টার হতে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়। তেমনি হেলিকপ্টার থেকে বর্ষিত গুলির আঘাতে আহাদুনও প্রাণ হারায়। লাশ নিয়ে ব্যাবসা ও রাজনীতি আওয়ামী হায়েনা গোষ্ঠীর তৎপরতা পতনের একমুহূর্তে আগে একটুও কমে ছিল না। লুটপাট করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ধ্বংস করে দিলেও লুটের নেশা তাদের কমছিল না। কি নিয়ে তারা ব্যবসা করেনি? মদ,নারী,জুয়া,জমি,জায়গা এবং শেষ পর্যন্ত মরা লাশ নিয়েও তারা ব্যাবসায় নামে। শহীদ আহাদুনের লাশ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তার বাবা। রাতভর ঢাকা মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের মর্গে ছেলের লাশ খুঁজতে থাকেন। কিন্তু নিরাশ হয়ে সারারাত কাটানোর পর ১৯ জুলাই দুপুর বারোটায় বাড়ি ফিরে আসেন। অতঃপর লাশের সন্ধানে ঘুরতে থাকেন থানায় থানায়। ১৯ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত হন্য হয়ে খুঁজতে থাকেন লাশ। অবশেষে ২১ জুলাই তিনি লাশ ফিরে পান। এজন্যে মর্গে এক ছাত্রলীগ নেতা লাশ ছাড়ার জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করে, যা ছিল পরিবারের সামর্থ্যের বাহিরে। শেষ পর্যন্ত ১৮ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি লাশ সংগ্রহ করেন। শহীদ আহাদুনের প্রথম জানাজা ২১ জুলাই বিকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা আলিফ টাওয়ারের কাছে অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার মানুষ সেখানে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে ২২ জুলাই বিকাল তিনটায় তার নিজ গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আরো হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে তার জীবন ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানায়। শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য শহীদ আহাদুনের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছিল ৭, বর্তমানে ৬ জন। বড় ভাই সামায়ন কবির (১৯) অনার্স ভর্তিচ্ছু। পরের জন হুমায়ুন কবির (১৭) পড়াশোনা করেন। সবচেয়ে ছোট জন জাহিদ হাসান (১৪) সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল বাবার ছোট্ট মুদি দোকান মেরুল বাড্ডার গলির এক কোণে অবস্থিত। তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। শহীদ প্রোফাইল নাম : মো: আহাদুন পিতা : মো: মুজিবুর রহমান মাতা : মোসা: কল্পনা আক্তার জন্ম তারিখ : ১ ডিসেম্বর ২০০৭ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: শ্যামপুর, ইউনিয়ন : বিষমপুর, থানা: কমলাকান্তা, জেলা: নেত্রকোনা বর্তমান ঠিকানা : মেরুল বাড্ডা, আলিফ নগর, বাড্ডা, ঢাকা আহত হওয়ার স্থান : মেরুল বাড্ডা, ঢাকা আহত হওয়ার সময়কাল : ১৮ জুলাই, ২০২৪, রাত ৮টা শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ১৮ জুলাই, রাত ১০টা, মেরুল বাড্ডা, ঢাকা যাদের আঘাতে শহীদ : র‌্যাব শহীদের কবরস্থান : শ্যামপুর, কৈলাটি, কমলাকান্দা, নেত্রকোনা শহীদ পরিবারের জন্য করণীয় ১. শহীদের পরিবারকে এককালীন অনুদান দেওয়া যেতে পারে ২. শহীদের পিতাকে ব্যবসার পুঁজি বাড়াতে সাহায্য করা যেতে পারে ৩. শহীদের ভাইদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে আমাদের ছোট আহাদুন দেশ মাতৃকার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। জীবন অতি সংক্ষিপ্ত হলেও যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষের অন্তরে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার স্মৃতি আমাদের হৃদয়ে চিরকাল জাগরুক থাকবে এক আলোকবর্তিকা হয়ে।

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: আহাদুন
Image of মো: আহাদুন
Image of মো: আহাদুন
Image of মো: আহাদুন

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: সবুজ মিয়া

উমর ফারুক

মো: এ কে এম শহীদুল ইসলাম

মো: সুমন হাসান

সফিক মিয়া

সাফওয়ান আখতার সদ্য

সারদুল আশিষ সৌরভ

মো: মাহবুব আলম

মোখলেসুর রহমান

মো: জুবাইদ ইসলাম

 মো: রাব্বী মিয়া

মো: জিন্নাতুল ইসলাম খোকন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo