জন্ম তারিখ: ১ অক্টোবর, ১৯৮৮
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: ময়মনসিংহ
পেশা : কৃষিকাজ , শাহাদাতের স্থান: মোরগ মহল, এমপি মার্কেটের সামনে,
অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শহীদ কুদ্দুস মিয়া। অপরূপ সৌন্দর্যের জেলা কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থানার চেংগাহাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বাবা মো: জালাল মিয়া পেশায় একজন কৃষক এবং মা রাবেয়া খাতুন একজন গৃহিণী। কুদ্দুস মিয়ার রয়েছে আরো এক ভাই ও এক বোন। তিনি ভাই বোনদের ভেতরে ছিলেন মেজো। ছিলো অভাব-অনটনের সংসার। যার ফলে পড়াশোনা করতে পারেননি কুদ্দুস মিয়া। ছোটবেলাতেই পিতার সাথে হাল ধরেন কৃষিকাজের। বাবাকে কাজে সহযোগিতা করতেন তিনি। ভালো স্বভাবের একজন মানুষ ছিলেন। কুদ্দুস মিয়া বিবাহিত ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম ফারজানা আক্তার। তিনি একজন গৃহিণী। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলে নয়ন মিয়া ও মেয়ে মুনি আক্তার পড়াশোনা করে। আরেক ছেলে ছোট, যার বয়স বর্তমানে আড়াই বছরের মত। কুদ্দুস মিয়া শহীদ হওয়ার সময় তার স্ত্রী ৮ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। কুদ্দুস মিয়া যেভাবে শহীন হন ৫ আগস্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা হয় এক দফার। প্রধান আন্দোলনের স্থান ছিলো ঢাকার শাহবাগ। কিন্তু সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। যার ফলে, যে যার জায়গা থেকেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। সারাদেশের মত ছাত্র-জনতা নেমে এসেছিল কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর বাজারেও। এখানেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল শহীদ কুদ্দুস মিয়া। জানা যায়, সকালের দিকে বাসা থেকে বের হন তিনি। বাজিতপুর বাজারের মোরগ মহলের সামনে আন্দোলনরত নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার সাথে বিক্ষোভে এসে যোগ দেন তিনি। চলতে থাকে বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের ঘাতক পুলিশ এবং সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ এসে বাঁধা দেয়। যার ফলে, ছাত্র-জনতার সাথে পুলিশ-ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের একটি ইট এসে আঘাত করে কুদ্দুস মিয়াকে। ইটটি এসে লাগে তার বুকে। সেখানেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ছাত্ররা তখন সাথে সাথেই তাকে পার্শ্ববর্তী একবাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবার ও ছাত্রদের সহায়তায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদ কুদ্দুস মিয়ার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এক ছেলে, এক মেয়ে পড়ালেখা করছে। আরেকজন ছোট, আড়াই বছর বয়স। স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা । তার আয়ের কোনো উৎস নেই। বর্তমানে শহীদের ভাই সহযোগিতা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তারা চরম অর্থনৈতিক সংকটে দিন যাপন করছেন। একনজরে শহীদ কুদ্দুস মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য নাম : কুদ্দুস মিয়া জন্ম তারিখ : ০১.১০.১৯৮৮ পেশা : কৃষিকাজ পিতা : জামাল মিয়া মাতা : রাবেয়া খাতুন স্থায়ী ঠিকানা : চেংগাহাটি, দিঘীর পাড়, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ শহীদ হওয়ার তারিখ ও সময় : ০৫.০৮.২০২৪, বিকাল: ৪:৩০ মিনিট শহীদ হওয়ার স্থান : মোরগ মহল, এমপি মার্কেটের সামনে, বাজিতপুর আঘাতের ধরণ : বুকে ইটের আঘাত লাগে আঘাতকারী : সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ সমাধিস্থল : নিজ গ্রাম শহীদ পরিবারের জন্য সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রস্তাবনা ১. পরিবারের স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করা ২. ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খোঁজ রাখা
আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনোই মৃত মনে করো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকা-প্রাপ্ত হয়ে থাকে। (সুরা আল-ইমরান ৩:১৬৯)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে শহীদ হতে চায়, আল্লাহ তাকে শহীদের সাওয়াব দেন।” (সহীহ মুসলিম ১৮৮৮)
