Image of মো: সবুজ মিয়া

নাম: মো: সবুজ মিয়া

জন্ম তারিখ: ৫ এপ্রিল, ২০০৬

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৪ আগস্ট, ২০২৫

বিভাগ: ময়মনসিংহ

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা :শিক্ষার্থী, শাহাদাতের স্থান :খরমপুর মোড়, খাদ্য গুদামের সামনে, শেরপুর সদর।

শহীদের জীবনী

শহীদ মো: সবুজ মিয়া শেরপুর জেলার শ্রীবরদীর রুপার পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতার নাম আজহার আলী এবং মা সোমেজা। বাবা আজহার আলী প্যারালাইজড এবং মা গৃহিণী। ১৮ বছর বয়স্ক এই যুবক শ্রীবরদী সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্র ছিলেন। বাবা প্যারালাইজড হওয়ায় সংসারের পুরো দায়িত্ব তার কাঁধে ছিল। ছোট ভাই মোঃ কাউসার (১৩) এবং বোন আয়েশা (৯) লেখাপড়া করে। চার আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালনের সময় ছাত্রলীগ ও বিজিবি এক যোগে অতর্কিত হামলা চালায়। এই সময় ছাত্রলীগের গুলিতে সবুজ মিয়া মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। আহত সবুজ মিয়াকে ম্যাজিস্ট্রেটের একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায়। সবুজ মিয়া ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট ৪ আগস্ট ২০২৪ ছিল সবুজ মিয়ার জীবনের এক ভয়াবহ মর্মান্তিক দিন। এই দিন বন্ধুবান্ধবদের সাথে চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দুপুর ১.৫ টার সময় শেরপুর শহরে একত্রিত হয়। তারা আন্দোলনের অন্যান্য সদস্যের সাথে মিলিত হওয়ার প্রস্তুতি নেয়। পরে তারা খরমপুর খাদ্য গুদামের সামনে গিয়ে অবস্থান নেই। পরিস্থিতি হঠাৎ করেই সহিংস হয়ে ওঠে। এ সময় বিজিবি এবং ছাত্রলীগের কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আর আন্দোলনকারীরা নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে। শহীদ মোহাম্মদ সবুজ মিয়াও কোন কিছু বুঝে উঠতে না পেরে প্রাণ বাঁচানোর জন্য দৌড়াতে শুরু করেন। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ছাত্রলীগ হঠাৎ করে শহীদ সবুজকে লক্ষ্য করে গুলি করে। একটি গুলি তার মাথায় আঘাত করে যা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করে। আহত সজীবের শরীরের উপর দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায়। এসব আঘাতের ফলে সবুজ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং কোন প্রকার চিকিৎসা পাওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। শাহাদাতের পর আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিক্রিয়া শহীদ সবুজের মা জরিনা বেগম বলেন, “আমার ছেলে ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে যায়। বলে, মা আমার জন্য ভাত রান্না করে রেখো আমি রাতে এসে খাবো। আমি আমার ছেলেকে বলি বাবা তুমি আন্দোলনে যেও না। সবুজ বলেছিল মা, তুমিও এমন কথা বলো। আমরা আন্দোলন না করলে হাসিনা সরকার নামবে না। সে চাকরিও দিবে না। পরে ওর ফুফু এসে খবর দেয় সবুজ শহীদ হয়ে গেছে। এখন আমি কিভাবে বাঁচব? আমার পরিবার কিভাবে চলবে?” পরিবার ও এলাকাবাসীর শহীদ মো: সবুজ মিয়ার এই মর্মান্তিক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও বিচার চান। শহীদ পরিবারের বিশেষ তথ্য শহীদ মোঃ সবুজ মিয়ার বাবা প্যারালাইজড। সবুজ মিয়া পরিবারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশাপাশি ফার্মেসিতে পার্ট টাইম কাজ করতেন। বাবাও কষ্ট করে কৃষিকাজ করে অল্প কিছু আয় করতেন। দুজনের এই সামান্য আয় দিয়েই সংসার চলতো। বড় বোন মাজেদা (২৬) গৃহিণী। ছোট ভাই মোঃ কাউসার (১৩) হিফজ বিভাগের ছাত্র এবং ছোট বোন আয়েশা (৯) তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। শহীদ মোঃ সবুজ মিয়া দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। শহীদদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। মোহাম্মদ সবুজ মিয়ার মৃত্যুর পর তাদের পরিবারে যেন স্থায়ী অন্ধকার নেমে এসেছে। ছোট ছোট ভাই বোন দের পড়াশোনার খরচ এখন হুমকির মুখে, কেননা পরিবারের দৈনন্দিন খরচ মেটানোর সাধ্যই তাদের নেই। বাবা আজহার আলী আগে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এখন মানসিকভাবে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছেন। শহীদ পরিবারের জন্য করণীয় ১. শহীদের পরিবারকে এককালীন সহায়তা করা যেতে পারে। ২. শহীদের বাবা-মার মাসিক আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা। ৩. শহীদের ভাই-বোনদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে সাহায্য করা। ৪. ঘর নির্মাণে সাহায্য করা। শহীদের প্রোফাইল নাম : মো: সবুজ মিয়া পিতা : আজহার আলী মাতা : সোমেজা বয়স : ১৮ বছর স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: রুপার পাড়া, ইউনিয়ন: ৮ নং খরিয়া কাজীর চর থানা: শ্রীবরদী, জেলা: শেরপুর বর্তমান ঠিকানা : একই আহত হওয়ার স্থান : খরমপুর মোড়, খাদ্য গুদামের সামনে, শেরপুর সদর আহত হওয়ার সময় কাল : ৪ আগস্ট ২০২৪, বিকাল ৩:৩০ মিনিট শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ৪ আগস্ট ২০২৪, বিকাল তিনটা ৩০ মিনিট যাদের আঘাতে শহীদ : উপজেলা প্রশাসন এবং ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদের উপর তুলে দেয়, সেই গাড়িতে চাপা পড়ে সবুজ মিয়া শহীদ হন। শহীদের কবরস্থান : নিজগ্রাম, পূর্ব রুপারপাড়া, শেরপুর

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: সবুজ মিয়া
Image of মো: সবুজ মিয়া
Image of মো: সবুজ মিয়া
Image of মো: সবুজ মিয়া

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: লিটন

 মোঃ রফিকুল ইসলাম

মো: বিপ্লব হাসান

আব্দুল্লাহ আল মামুন

ইসমাইল

রহমত মিয়া

মো: বকুল মিয়া

মো: হাফিজুল ইসলাম

মো: নূরে আলম সিদ্দিকী

মো: আব্দুল নুর

আব্দুল্লাহ আল মাহিন

মো: কাওসার মিয়া

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo