Image of মো: সাব্বির হোসেন

নাম: মো: সাব্বির হোসেন

জন্ম তারিখ: ৯ জানুয়ারি, ২০১২

শহীদ হওয়ার তারিখ: ২০ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা_সিটি

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: হকার, শাহাদাতের স্থান : আবাহানী মাঠ ধানমণ্ডি

শহীদের জীবনী

স্বৈরশাসকের কোন নীতি নাই। ফ্যাসিস্টের মনে কোনো দরদ নেই। ক্ষমতার জন্য তারা নির্মম হয়, নিষ্ঠুর হয়ে যায়। পাষাণসম হৃদয় তাদের। তারা হত্যা করতে একটুকুও দ্বিধা করে না। শহীদ মো: সাব্বির হোসেন নিষ্পাপ একজন শিশু। বয়স ১২ বছর। ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর তার জন্ম হয়। বাবা মো: নুর আলম, মা মাকসুদা বেগম। ঘটনার বিবরণ শহীদ মো: সাব্বির হোসেন সংগ্রামী এক শিশু। প্রতিদিনই ছিল তার জীবনযুদ্ধ। জীবনই যেন যুদ্ধের ময়দান। মাত্র বার বছর বয়সেই থেমে যায় তার জীবন। জীবন কেড়ে নেয় ধানমন্ডি থানার পুলিশ। নির্মমভাবে হত্যা করে একজন শিশুকে। সাব্বির ও তার মায়ের খরচ তাদের পিতা বহন করেন না। কেননা, তিনি তার অন্য সংসার নিয়ে নিখোঁজ। মা ও তার আরও তিন ভাই মোট পাঁচ জনের সংসার। সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয় দশ বছরের সাব্বির। অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ারও আরও দুই বছর আগেই আয়ের পথ ধরতে হয় তাকে। প্রতিদিন আবাহনী খেলার মাঠের সামনে বেলুন বিক্রি করতেন সাব্বির। সাব্বিরের আয় দিয়েই চলতো সংসার। সংসার যুদ্ধে সাব্বির এক সংগ্রামী যোদ্ধা। সংগ্রাম করতে করতেই বেঁচে থাকা। ২০ জুলাই তার জীবনের শেষ দিন। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও সে বেলুন বিক্রি করছিল। তখনই খবর আসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। আবাহনীর আশপাশ আন্দোলনকারীরা মিছিলে কাঁপিয়ে তোলে। সাব্বিরের শিশু মন জেগে ওঠে। সরকারের অনিয়ম, দূর্নীতির খবর হয়তো তার মনকেও বিষিয়ে তোলে। বিদ্রোহ করা আকাঙ্খাই হয়তো তাকে নামিয়ে নেয় আন্দোলনে। যোগ দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারমুখী হয়ে উঠে সরকারের পেটুয়া বাহিনী। তারা নির্বিচারে গুলি চালায়। সাব্বিরের হাতে তখনও বেলুনের থলেটি। হঠাৎ একটি বুলেটে সে রক্তাক্ত হয়। তার বুক, মুখ, মাথায় আঘাত করে গুলি। মূহুর্তে লুটিয়ে পড়ে সাব্বির হোসেন। পুরো দেশ মর্মাহত হয় পুলিশের নির্মমতায়। আন্দোলনকারীরা দ্রুত তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তারদের সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে রাত ৯টায় সাব্বির শাহাদত বরণ করেন। সমাপ্তি ঘটে শিশু সাব্বিরের সংগ্রামী জীবনের। তার মৃত্যুতে দেশবাসী, আন্দোলনকারী ও সচেতন জনগণের মনে গভীর রেখাপাত করে। পরদিন ২১ জুলাই জানাজা শেষে তাকে মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। আত্মীয়দের অনুভূতি ছোট্র একটি শিশু। স্কুলে যাবার বয়সে তার কাঁধে তুলে নেয় সংসারের দায়িত্ব। বয়স মাত্র বার। মা ও তিন ভাইয়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব তার কাঁধে। বিষ্ময়কর বিষয়। অন্যরাও খুব ছোট। যথাক্রমে ১১, ৫ ও ৩ বছর বয়সী তিনটি ভাই তার। সাব্বিরের মা এবং তার প্রতিবেশীরা তার মৃত্যুতে ভীষণভাবে মর্মাহত। পরিবারটি একেবারের হতাশার সাগরে ভেসে যাওয়ার মতো অবস্থা। ছেলেটির মৃত্যুতে তার মা দু চোখে কেবলই শূন্যতা অনুভব করেন। সাব্বির ছিল বয়সের তুলনায় অধিক কর্তব্য সচেতন, দায়িত্ববান। প্রতিবেশী আসলাম বলেন, এতোটুকু ছেলের পরিবার সচেতনতা বয়স্কদেরও বিস্মিত করে। পরিবারের অবস্থা পরিবারটি এখন বিপর্যস্ত। তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই ছিল সাব্বির। হতদরিদ্র একটি পরিবার আরও হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। শহীদ মো: সাব্বির হোসেনের প্রোফাইল নাম : শহীদ মো: সাব্বির হোসেন জন্ম : ০১-০৯-২০১২ পিতা : মো: নুর আলম মাতা : মাকসুদা বেগম পেশা : ধানমণ্ডি আবাহনী মাঠে হকারী করতেন স্থায়ী ঠিকানা : ছোট আমতলা, নাজিরপুর, পিরোজপুর বর্তমান ঠিকানা : বাসা: নুরজাহানের বাড়ী, আজিজ খান রোড, মোহাম্মদপুর ঢাকা ঘটনার স্থান : আবাহানী মাঠ ধানমণ্ডি আক্রমণকারী : ধানমণ্ডি থানার পুলিশ সময় : ২০ জুলাই রাত ৮.৩০ মৃত্যু : ২০ জুলাই রাত ৯, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল কবর : মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান প্রস্তাবনা ১. স্থায়ী বাসস্থানের বন্দোবস্ত করা ২. তার মাকে কোন একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া ৩. এককালীন অর্থ দিয়ে সহায়তা করা ৪. মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা ৫. ছোট ভাইদের পড়াশোনায় সহযোগিতা করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: সাব্বির হোসেন
Image of মো: সাব্বির হোসেন
Image of মো: সাব্বির হোসেন
Image of মো: সাব্বির হোসেন

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মোঃ সাইফুল ইসলাম

জহিরুল ইসলাম শুভ

মো: সুমন সিকদার

মোঃ ইয়াকুব

মেহেরুন্নেসা তানহা

মো: জাকির হোসেন

শাওন তালুকদার

মো: নুর হোসেন

মো: আসাদুল্লাহ

নুর হোসেন পিয়াস

মো: ইমন

মো: রবিউল ইসলাম

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo