জন্ম তারিখ: ৯ জানুয়ারি, ১৯৯৬
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা_সিটি
পেশা: দিনমজুর শাহাদাতের স্থান : যাত্রাবাড়ি
রফিকুল ইসলাম দিনমজুর ছিলেন। তার গ্রাম ফেনী জেলায়। তিনি ১৯৯৬ সালের ৯ জানুয়ারি বাবা খুরশিদ আলম ও মা আলেয়া বেগমের সংসারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যাত্রাবাড়িতে বড়বোনের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রত্যক্ষদর্শীর মতে রফিকুল ইসলাম ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে যাত্রাবাড়ি এলাকায় রাজপথে পড়ে ছিলেন। যুবলীগের সন্ত্রাসীরা তার লাশ গায়েব করে ফেলে। পরবর্তীতে সব হাসপাতালে খুঁজেও রফিকুলের লাশের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যেভাবে শহীদ হলেন শেখ হাসিনা তার দলীয় কর্মীদের সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ দিয়ে নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে নিষিদ্ধ হওয়া কোটা পদ্ধতি তার নিজের গড়া আদালতের মাধ্যমে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এদিকে পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় হাসিনা প্রশাসনের স্বইচ্ছায় দেশে ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে চাকুরী করে যাচ্ছে। পড়ালেখা শেষ করে দেশে চাকুরী না পাওয়া বেকারের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে। ছাত্র-জনতা অন্যায় কোটা প্রথার বিরুদ্ধে শুরু থেকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে থাকে। তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদসভা গুলোতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ হামলা করে ছাত্র ও ছাত্রীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে আহতদের উপরে হামলা করে। এভাবেই অধিকার আদায়ের নিরব আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। ছাত্র-জনতা একের পর কর্মসূচী দেয়। স্বৈরাচারী সরকার সেসব কর্মসূচীর বিপরীতে ছাত্রদের আটক, গুম ও খুন করতে থাকে। ছাত্র-জনতা এতে দ্বিগুণ বেগে রাজপথে নেমে আসে। সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসার ছাত্ররা রাজপথে স্লোগান তোলে। উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে কোটাপদ্ধতি বাতিল করেছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ২০২৪ সালে তা আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এছাড়া চীন সফরে চরম ব্যর্থতা আড়ালে এক সাংবাদিকের জবাবে তিনি ঘৃণার সাথে অধিকারের দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রদের রাজাকের নাতি উপাধি দেন। সাথে সাথেই রাতের বেলায় ছাত্ররা প্রতিবাদে মিছিল নিয়ে বের হয়। স্লোগান উঠায়- তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার! কে বলেছে কে বলেছে? স্বৈরাচার স্বৈরাচার! ১৮ জুলাই ছাত্ররা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন। রফিকুল ইসলাম ১৮ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন। সারাদিন রাজপথ উত্তাল থাকে। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়না। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় জানা যায়, রফিকুল ইসলাম কদমতলী ও যাত্রাবাড়ি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন। ঐসময় পুলিশের টিয়ারশেল, এলোপাথাড়ি গুলি, লাঠিচার্জ, স্নাইপারের মাধ্যমে গুলির ফলে অনেক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। রফিকুল ইসলামের গায়েও গুলি লাগে। উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে তার লাশ সংগ্রহ করা যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশের সহযোগী যুবলীগের সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে কিছু লাশ সরিয়ে ফেলে। যা আর পাওয়া যায়নি। তার পরিবার বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করেন। কিন্তু আজ অবধি তারা রফিকুল ইসলামের লাশ খুঁজে পাননি। কেমন আছে তার পরিবার রফিকুলের বাবা-মা মৃত। তার ৩ ভাই ও ১ বোন রয়েছে। গ্রামে ৫ শতাংশ জমি আছে। প্রস্তাবনা ১. দেহাবশেষ খুঁজে বের করা ২. পরিবারকে এককালীন সহযোগিতা প্রদান একনজরে শহীদের পরিচয় নাম : রফিকুল ইসলাম পেশা : দিনমজুর জন্ম তারিখ : ৯ জানুয়ারি ১৯৯৬ পিতা : মৃত খুরশিদ আলম মাতা : মৃত আলেয়া বেগম নিখোঁজ হওয়ার তারিখ : ০৫ আগস্ট ২০২৪ শাহাদাত বরণের স্থান : যাত্রাবাড়ি আক্রমণকারী : যুবলীগের সন্ত্রাসী বর্তমান ঠিকানা : ৩৪৫, মদিনাবাগ, রায়েরবাগ, হাবিবনগর, কদমতলী, ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : রিয়াজউদ্দিন কারি বাড়ি, উত্তর ধলিয়া, বালুয়া চৌমুহনী, ফেনী ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : গ্রামে থাকার ঘর আছে ও সামান্য জমি আছে