জন্ম তারিখ: ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১১
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা_সিটি
পেশা: ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদের সামনে
প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখতে কিশোর ইমন বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের প্রাণ। তার পুরো নাম শহীদ জোবাইদ হোসেন ইমন। শহীদ ইমন ৪র্থ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী। সে দারুন নাজাত ইসলামিয়া মাদরাসায় অধ্যয়ন করত। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হলেও সে ছিল অত্যন্ত মেধাবী ও চতুর বালক। তার পিতা জনাব কাঞ্চন মিয়া পেশায় ভ্যান ড্রাইডার। মাতা জহুরা খাতুন একজন গৃহিনী। শহীদ ইমনের পরিবার কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছিলেন ২৫ বছর আগে। পিতার স্বপ্ন ছিল ঢাকায় গিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাবেন বা ভালো একটি কাজের ব্যবস্থা করবেন। পিতামাতার স্বপ্নের পথেই হাটছিল শহীদ ইমন। সে তার মাদরাসার সব ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছিল অনন্য-এক বালক। অন্যদের থেকে ছিলো আলাদা। ছোটকাল থেকেই সে প্রচন্ড সাহসী ছেলে। শৈশব থেকেই ভালো-মন্দ, ন্যায় অন্যায় ইত্যাদীর প্রতি খুবই সচেতন ছিল ইমন। সে প্রতি ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করার চেষ্টা করতো। তাকে ঘিরে পিতার যে স্বপ্ন ছিল তা পূরণের সূচনা হয়েছিল মাত্র। তবে এগুতে পারলো না। পুলিশ লীগ, আওয়ামী লীগ, টোকাই লীগ, সন্ত্রাসী লীগ, যুবলীগের জঙ্গিরা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। পরিবার এখন তার শোকে কাতর। ইমনের মতো একটি কিশোরের সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সেবা থেকে বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ। শিশুটি দেশ রক্ষা করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখতে কিশোর ইমন বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের প্রাণ। তার পুরো নাম শহীদ জোবায়ের হোসেন ইমন। শহীদ ইমন ৪র্থ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী। সে দারুন নাজাত ইসলামিয়া মাদরাসায় অধ্যয়ন করত। চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী হলেও সে ছিল অত্যন্ত মেধাবী ও চতুর বালক। তার পিতা জনাব কাঞ্চন মিয়া পেশায় ভ্যান ড্রাইডার। মাতা জহুরা খাতুন একজন গৃহিনী। শহীদ ইমনের পরিবার কিশোরগোঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছিলেন ২৫ বছর আগে। পিতার স্বপ্ন ছিল ঢাকায় গিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাবেন বা ভালো একটি কাজের ব্যবস্থা করবেন। পিতামাতার স্বপ্নের পথেই হাটছিল শহীদ ইমন। সে তার মাদরাসার সব ছাত্রছাত্রীদের ছিল অনন্য- এক বালক। অন্যদের থেকে ছিলে আলাদা। ছোটকাল থেকেই সে প্রচন্ড সাহসী ছেলে। সে শৈশব থেকেই ভালো-মন্দ, ন্যায় অন্যায় ইত্যাদীর প্রতি খুবই সচেতন ছিল ইমন। সে প্রতি ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করার চেষ্টা করতো। তাকে ঘিরে পিতার যে স্বপ্ন ছিল তা পূরণের সূচনা হয়েছিল মাত্র। তবে এগুতে পারলো না। পুলিশ লীগ, আওয়ামী লীগ, টোকাই লীগ, সন্ত্রাসী লীগ, যুবলীগের জঙ্গিরা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। পরিবার এখন তার শোকে কাতর। ইমনের মতো একটি কিশোরের সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সেবা থেকে বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ। শহীদ সংক্রান্ত ঘটনার বর্ণনা শহীদ ইমন ছিলেন ১৪ বছরের শিশু বালক। বয়সের দিক থেকে শিশু হলেও তার মেধা, নীতি-নৈতিকতা, সততা ও ভালো মন্দের জ্ঞান বেশ পরিপক্ব। খুনি হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী, পুলিশ লীগ দেশব্যাপী ক্রাকডাউন পরিচালনা করছিল। রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগ। কোলের বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্কদের জীবন দিতে হয়েছে। বুলেট, টিয়ারশেল, ছররা গুলি, রাবার বুলেট কোন কিছুই তাদের বাধা হতে পারেনি। নির্বিচারে শত শত মানুষকে হত্যার মিশন নিয়ে নেমেছিল খুনি হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী। তবুও এদেশের বীর সন্তানেরা কেউ পিছপা হয়নি। নিজেদের পিঠ প্রদর্শন করেনি। এরই অংশ হয়েছে শহীদ ইমন। ১৯ জুলাই ২০২৪ তারিখটি ছিল শুক্রবার। জুমার আজান হলে, শহীদ ইমন গোসল করে, পাঞ্জাবি পায়জামা পরে আনন্দচিত্তে উৎফুল্ল মনে নামাজ পড়তে যান। কে জানতো যে, এই শিশুটির জন্য এটিই হবে শেষ নামাজ। সে সবার থেকে শুনে শুনে নিজেও শ্লোগান দিত ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা।’ জুমার নামাজ শেষে মোহাম্মাদপুরস্থ রায়বাজার এলাকাসংলগ্ন কবরস্থান মসজিদের সামনে থেকেই ছাত্র জনতার প্রতিবাদী মিছিল বের হয়। সেই মিছিলে ছোট্ট ইমন ও তার বন্ধুরাও যুক্ত হয়। মিছিলটি আল্লাহ করিম মসজিদের সামনে গেলে শুরু হয় সন্ত্রাসী বাহিনীর আক্রমন। তারা শুধু নিচ থেকে বুলেট, টিয়ারশেল, ছোড়া গুলি ছোড়েনি বরং রক্তপিপাসু হাসিনার লেলিয়ে দেয়া পুলিশ ও র্যাবের সন্ত্রাসীরা আকাশ থেকে নিক্ষেপ করে বুলেট। বৃষ্টির ন্যায় আসতে থাকে বুলেট। আন্দোলনকারীরা তখন নিজেদের জীবন রক্ষার জন্য আশেপাশে আশ্রয় নিলেও কিছু আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। তখন সময় ছিল আনুমানিক বিকাল ৩.৩০। হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলির শিকার হন শহীদ ইমন। গুলি বাম কানের নিচ দিয়ে ঢুকে ডান চোয়ালের নিচ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ বালককে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। দ্রুত ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রচন্ড রক্তক্ষরণের কারণে এই নিরপরাধ-নিষ্পাপ ছেলেটি সন্ধ্যা ৭.৩০টার দিকে শাহাদাৎ বরণ করেন। তার অপরাধ সংঘটিত করার বয়সই হয়নি। এরপরও ফাসিস্ট, খুনি, মানবতাবিরোধী হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে হত্যা করেছে। দেশের জন্য শহীদ আবু ইমন নিজেঁকে উৎসর্গ করেছে। সে পথ দেখিয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে। তার এই আত্মত্যাগে ৫ তারিখে পতন ঘটেছে খুনি হাসিনার। শহীদ ইমন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবে আজীবন। শহীদ পরিবারের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদ জুবায়ের হোসেন ইমন এর বাবার কোন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নেই। বস্তিতেই তিনি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন। তিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক। কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে ঢাকায় আসেন। তাঁরা দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত ঢাকাতে অবস্থান করছেন। তার চার ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মুহাম্মদ জিহাদ (২১)-লেগুনার হেলপার। বড় মেয়ে স্বর্ণা আক্তার কানসি (১৯) বিবাহিতা এবং ছোট মেয়ে সুবর্ণা আক্তার বর্ণা (১২) চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বড় ছেলে ও পিতার সামান্য আয় দিয়ে সংসার পরিচালনা খুবই কষ্টকর। শহীদ সম্পর্কে নিকটাত্মীয় ও বন্ধুর বক্তব্য/অনুভূতি শহীদ জুবায়ের হোসেন ইমন (১৪) এর বন্ধুর ভাষ্যমতে, ছেলে হিসেবে অনেক ভালো ছিল। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় মসজিদে যেত। শুক্রবার জুমআ'র নামাজ পড়ার জন্য সবার আগে মসজিদে হাজির হয়ে যেত। মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত বলে ছোট থেকেই বড়দের দেখলে সালাম দিত এবং সকলকে সম্মান করত। ক্রিকেট ও ফুটবল খেলায় সে যথেষ্ট পারদর্শী ছিল। সকলের সাথে ইমন হাসিখুশি ও ভদ্র স্বভাব নিয়ে কথা বলত। (তাঁর বন্ধু-মো: সুজন) ব্যক্তিগত প্রোফাইল পুরো নাম : জোবাইদ হোসেন ইমন জন্মতারিখ : ০৩-০২-২০১১ পিতার নাম, বয়স, পেশা : মো. কাঞ্চন মিয়া, ৪০, ভ্যান চালক মায়ের নাম, বয়স, পেশা : জহুরা খাতুন, ৩৬, গৃহিণী পারিবারিক সদস্য : পাঁচ জন ভাই বোনের সংখ্যা : দুই ভাই দুই বোন, ১. বড় ভাই: জিহাদ হোসেন, বয়স: ১১, পেশা: লেগুনা হেল্পার ২. বড় বোন: স্বর্ণা আক্তার কানশি, বয়স: ১৯, পেশা: গৃহিণী ৩. শহীদ জোবায়ের হোসেন ইমন ৪. ছোট বোন: সুবর্ণা আক্তার বর্ণা, বয়স: ১২, পেশা: ছাত্রী, শ্রেণি: ৪র্থ পড়াশোনা : ৪র্থ শ্রেণি বর্তমান ঠিকানা : ৩২/১১, আই সুলতানগঞ্জ, এলাকা: মেকআপ খান রোড, থানা: মোহাম্মদপুর, জেলা: ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : কিশোরগঞ্জ আঘাতকারী : হেলিকপ্টার থেকে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে ঘটনার স্থান : মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদের সামনে আহত হওয়ার সময় কাল : ১৯ জুলাই ২০২৪, বিকেল ৩.৩০টা নিহত হওয়ার সময়কাল, স্থান : ১৯ জুলাই ২০২৪, সন্ধ্যা ৭টা, ইবনে সিনা হাসপাতাল, ধানমন্ডি, সংকর, ঢাকা শহীদের কবরে বর্তমান অবস্থান : কিশোরগঞ্জ