জন্ম তারিখ: ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা
পেশা : বাবুর্চি, শাহাদাতের স্থান : শাহাজাদপুর, বাঁশতলা, ঢাকা
রাজবাড়ী জেলা বাংলাদেশের মধ্য অঞ্চলে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। ১৯৭৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এই জেলার আলিপুর, মুকুন্দিয়া এলাকায় আব্দুল মজীদ ও জাহানারা বেগম দম্পতির ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন তেজস্বীখ্যাত শহীদ আব্দুল গণি। শৈশব-কৈশোর নিজ জেলায় কাটালেও পরবর্তীতে পেশাগত কাজে পাড়ি জমান রাজধানীর গুলশান শহরে। শাহাদত বরণের পূর্বে সিক্সসিজন নামক আবাসিক একটি হোটেলের কারিগরি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। পরিবার নিয়ে উত্তর বাড্ডার গুপীপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্ত্রী লাকি আক্তার, ছেলে আলামিন শেখ ও মেয়ে জান্নাতকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন সুখের সংসার। এই সুখকে সহ্য করতে পারেনি ফ্যাসিবাদ সরকার প্রধান খুনি হাসিনা ও তার নরখাদক দলবল। শহীদের পরিবার বর্তমানে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। শাহাদতের প্রেক্ষাপট বিগত ১৭ বছর রক্তখেকো হাসিনা দেশ ও দেশের বাইরে তার স্বকীয়তা বজায় রাখতে পাখির মত মানুষ হত্যা করেছে। এই নরপিশাচ ও তার পেটুয়া বাহিনী বাদ দেয়নি মাতৃগর্ভের আগত শিশুকেও। আওয়ামী মদদপুষ্ট ঘাতক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে দলটির নেতা-কর্মীরা সবচেয়ে নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে। তবে একপর্যায়ে আপামর জনতার রক্তের বন্যায় পদস্খলন হয় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শীর্ষে অবস্থান করা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামক বিতর্কিত দলটির। গত ১৯শে জুলাই সকালে ঢাকার উত্তর বাড্ডার গুপীপাড়ার বাসা থেকে কর্মস্থলের দিকে হেঁটে রওনা হন আব্দুল গণি। পথমধ্যে শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকায় তাকে হত্যা করে খুনি হাসিনার দোসর পুলিশ বাহিনী। এসময় মাথাকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি চালানো হয়। মাথার ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে দীর্ঘক্ষণ তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন। চারিদিকে মুহুর্মুহু গুলি চলায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করতে কয়েক ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায়। অতঃপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জীবন বাজী রেখে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আওয়ামী গণহত্যার শিকার হয়ে বিদায় নিয়েছেন দেশমাতার এই সূর্য সেনা। মহান আল্লাহ দুই সন্তানের জনককে শাহাদাতের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করুন। (আমিন) নিকটাত্মীয়ের বক্তব্য শহীদ আব্দুল গণি’র স্ত্রী লাকি আক্তার (৪৫) বলেন- শেখ হাসিনা সরকারের পতনে আমি খুশি হয়েছি। ভয়ে আগে স্বামী হত্যার বিচার চাইতে পারিনি। এখন আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। তার মৃত্যুর পর থেকে আমি দুটি সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি। আমি আর্থিক সহযোগিতা চাই। সরকারের কাছে দাবী, আমার ছেলেকে যেন একটি চাকরি দেওয়া হয়।’ প্রস্তাবনা ১. সন্তানদের লেখাপড়ায় সহযোগিতা ২. মাসিক ও এককালীন ভাতা প্রদান করা একনজরে শহীদ সম্পর্কিত ব্যক্তিগত তথ্যাবলি নাম : আব্দুল গণি, বয়স: ৪৭ বছর জন্ম : ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ পিতা : আব্দুল মজীদ মাতা : জাহানারা বেগম স্ত্রী : লাকি আক্তার, বয়স: ৪৫ বছর, পেশা: গৃহিণী সন্তান : ১. ছেলে: আলামিন শেখ, বয়স: ১৯ বছর পেশা: ছাত্র, শ্রেণি: এইচএসসি পরীক্ষার্থী ২. মেয়ে: জান্নাত, বয়স: ৬ বছর, পেশা: ছাত্রী, শ্রেণি: প্রথম বর্তমান ঠিকানা : জেলা: রাজবাড়ী, উপজেলা: সদর, ইউনিয়ন: খানখানাপুর, মহল্লা: নতুন বাজার স্থায়ী ঠিকানা : জেলা: রাজবাড়ী, উপজেলা: সদর, ইউনিয়ন: আলিপুর, ডাকঘর: মুকুন্দিয়া শাহাদতের তারিখ : ১৮ জুলাই ২০২৪, সময়: সকাল, স্থান: শাহজাদপুর, বাঁশতলা, ঢাকা দাফন : নিজগ্রাম, পারিবারিক কবরস্থান