Image of আবদুল্লাহ আল রোমান

নাম: আবদুল্লাহ আল রোমান

জন্ম তারিখ: ২০ জুলাই, ২০০৭

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্র, শ্রেণি: ১০ম, নবকিশলয় স্কুল শাহাদাতের স্থান : ছনপাড়া, ডেমরা, ঢাকা

শহীদের জীবনী

আবদুল্লাহ আল রোমান ২০ জুলাই ২০০৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং মায়ের নাম রোজিনা। রোমান ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম নবকিশলয় স্কুল। রোমানের বাবা আনোয়ার হোসেন পোলার আইস্ক্রিম কোম্পানীর কর্মকর্তার গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট ৫ আগস্ট ২০২৪। সোমবার। কয়েকদিন বিরতির পর ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ দিয়েছিল হাসিনা সরকার। এই দিনেই হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার কর্মসূচি ছিল ‘লং মার্চ টু ঢাকা’। তাই আগের রাত থেকেই রাজধানীর সড়ক ছিল সুনশান নিরবতা। সকালটাও ছিল মেঘাচ্ছন্ন, বৃষ্টিস্নাত। রাজধানীর সড়ক ছিল যানবাহন শূণ্য। সবার মধ্যে চাপা উত্তেজনা কি হতে যাচ্ছে? আগের মতো এদিন সকাল থেকেই সড়কে তেমন পুলিশ কিংবা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল না। কখনো বা সড়কে একত্রে পুলিশের কিছু গাড়ি টহল দিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবন ঘিরে সকাল বেলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। তবে সকল ভয়-ভীতি, আতঙ্ক, বৃষ্টি উপেক্ষা করে উৎসুক ছাত্র-জনতা একে একে ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন লং মার্চ টু ঢাকায় যোগ দিতে। মোবাইল ইন্টারনেটের পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেয়ায় যোগাযোগ দূরুহ হয়ে পরে। এরই মধ্যে রাজধানীর উত্তরা, রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী, পলাশী, শাহবাগ, চাঁনখার পুল, যাত্রাবাড়ী-শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এলাকার রাস্তায় নেমে আসেন ছাত্র-জনতা। শাহবাগ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। শাহবাগকে ঘিরে এক দিকে ইন্টার কন্টিনেন্টাল মোড়, কাটাবন মোড়, মৎস্যভবন মোড়, শিক্ষা ভবন মোড়, চাঁনখারপুল মোড়, পলাশী, নীলক্ষেত এলাকা সেনাবাহিনী-পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা তৈরি করা হয়। চাঁনখার পুল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় এবং গুলি ছুড়ে। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধও হন। উত্তরায় কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে শাহবাগের দিকে রওয়ানা হলে সেনাবাহিনী তাদের পথ ছেড়ে দিয়ে স্বাগত জানায়। রামপুরায় শিক্ষার্থীরা ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে সড়কে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয় এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে এবং শিক্ষার্থীদের সড়কে নেমে আসার সুযোগ করে দেয়। যাত্রাবাড়ী-শনিরআখড়া, মিরপুর, মোহাম্মদপুর এলাকা ছাত্র-জনতা দখলে নিয়ে তারাও শাহবাগের উদ্দেশ্যে পায়ে হেটে যাত্রা শুরু করেন। হাটি হাটি পায়ে রাজধানীর চতুর্দিক থেকে শিশু, কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী, আবাল বৃদ্ধ বণিতা সকলে এগুতে থাকেন শাহবাগের দিকে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের সকল বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা শাহবাগে প্রবেশ করতে থাকে এবং শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকে। পৌনে ১টার দিকেই সংবাদ আসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বুঝে ফেলেন তাদের বিজয় হয়ে গেছে। বেলা আড়াইটার দিকে খবর আসে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এই সংবাদ শোনার পরপরই উল্লাসে ফেটে পড়ে শাহবাগ থেকে শুরু করে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, রামপুরা, যাত্রাবাড়ীসহ সারাদেশের সকল জেলা-উপজেলার ছাত্র-জনতা। সরেজমিনে শাহবাগ এলাকায় দেখা যায়, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পূরুষ সকলেই ছুটে এসেছেন শাহবাগের দিকে। কারো হাতে লাঠি তো, কারো হাতে জাতীয় পতাকা। কেউ আবার সেই পতাকা বেধেছেন মাথায়ও। সবার মুখে মুখে শ্লোগান, এই মাত্র খবর এলো খুনী হাসিনা পালিয়ে গেল, এই মাত্র খবর এলো ছাত্র-জনতার বিজয় হলো, এই মাত্র খবর হলো স্বৈরাচারের পতন হলো। এছাড়া সবাই আওয়ামী লীগ, আওয়ামী সরকার, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতাদের নাম ধরে ধরে ভূয়া ভূয়া স্লোগান দিতে থাকেন। আগেরদিন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ডাক আসে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই কর্মসূচি ঠেকাতে রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। ৫ আগস্ট সেই কারফিউ ভেঙ্গে রাজধানীর অলিগলিতে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা। তাদেরকে মূল সড়কে উঠতে বাধা দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। দুপুরে বেলা দুইটার সময় গণমাধ্যমে খবর বের হয় পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকার রাজপথসহ সারাদেশে নেমে পড়েন লক্ষ লক্ষ ছাত্র-জনতা। তারা একে অপরকে ঘিরে ধরে বিজয় উল্লাস করতে থাকেন। নানা স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজপথ। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ জড়ো হন শাহবাগে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের দিকে যাত্রা করে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-জনতা। গণভবনের পাশাপাশি জাতীয় সংসদ ভবনেও অবস্থান নেন তারা। এই আন্দোলনে প্রায় আট শতাধিক মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সব মন্ত্রী-এমপিসহ অনেক নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যায়। বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। উচ্চ আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে কোটা সংস্কারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছিল শিক্ষার্থীরা। আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও ছাত্র সংগঠন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বলপ্রয়োগে সেই আন্দোলন এক পর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সেই আন্দোলনকে দমাতে ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রাণ হারায় শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ। কিন্তু তারপরও দমানো যায়নি ছাত্র-জনতাকে। ৫ আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি মাইলফলক। দেশের জনগণ সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে অত্যাচারী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ অপশাসনামলে। আর দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। এই ফ্যাসিবাদী সরকার গুম খুন হত্যা, নির্যাতন এবং মানুষের অধিকার হরণ করে দেশে বিভীষিকা সৃষ্টি করেছিল। বাতি নিভিয়ে রাতের আঁধারে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল। দেশের সেনাবাহিনীর জেনারেল, উচ্চশিক্ষিত অ্যাডভোকেট, ব্যারিস্টারসহ হাজার হাজার মেধাবী নাগরিকদেরকে তারা গুম করে আয়নাঘরে বন্দী রেখেছিল। ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে জুডিশিয়াল কিলিং করেছে। মানুষ তার মৌলিক অধিকার হারিয়েছিল। বিচারব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং দেশের সংস্কৃতিকেও তারা ধ্বংস করেছে। ছাত্ররা যখন তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করে কোটা বাতিলের দাবিতে তখন তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়েছে, খুন করে পুলিশের গাড়ির ওপর থেকে টেনে হিঁচড়ে ফেলে দিয়েছে। এদেশের মানুষ তাদের কাছে কখনোই নিরাপদ ছিল না। স্বজন হারানো মানুষের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল। হাসপাতালগুলোতে আহত আর নিহতদের রোনাজারিতে বিবেকবান প্রতিটি মানুষের হৃদয় কেঁপে উঠেছিল। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করে দেওয়া হয়েছিল। কোথাও মানুষ স্বস্তিতে কথা বলার সুযোগ পায়নি, প্রতিবাদ করলেই দমন পীড়ন চলত। মানুষের অধিকার হরণ করার ইতিহাসে স্বৈরাচারী হাসিনার সরকার ছিল কুখ্যাত। তাই ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বিপ্লব ছিল অনিবার্য। ৫ আগস্টের খবর আন্তর্জাতিকভাবে পরিবেশিত হয়েছিল। বিবিসির খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা প্রাসাদ (গণভবন) দখলে নিয়েছে।’আল জাজিরা বলেছে, ‘একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। তার সরকারি আবাস গণভবনে হাজারো মানুষ ঢুকে পড়েছে।’ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি সেনাপ্রধানের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে।’ এএফপির খবরেও বোনকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ‘নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে তিনি দেশ ছেড়েছেন।’স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এএফপি বলেছে, ‘হাজারো মানুষ গণভবনে ঢুকে পড়েছে। ৫ আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানকে ধরে রাখতে গোটা জাতির মধ্যে ঐক্য স্থাপন করতে হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খুনি লুটেরা দুর্বৃত্ত নতুন করে যেন ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। জুলাই আন্দোলনের শহীদ এবং আহতদের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ রাখতে হবে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর দেশ পথ হারিয়েছিল আর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ আবার পথের দিশা ফিরে পেয়েছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদদের পরিবার ও আহতদের বক্তব্য শুনলে পাষাণ হৃদয় নরম হয় ও অজান্তে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে। এ গণ-অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আল্লাহর সাহায্যে এ কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। শেখ হাসিনা অহংকার করে বলেছিল, তিনি কখনো পালিয়ে যান না! কিন্তু জান বাঁচানোর জন্য তিনি চোরের মতো পালিয়ে যান। ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবও দলের কর্মীদের কোন নির্দেশনা না দিয়ে একই রকম পাকিস্তানে চলে যান। সুরক্ষিত এবং কঠিন প্রাচীর দিয়ে ঘেরা, ‘গণভবন’। এই গর্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হয়েছে দেশের বাইরে। দেশের কোথাও তার স্থান হলো না। অত্যাচারী হাসিনার ভবিষ্যৎ দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। দীর্ঘ ১৫ বছরে গুম, খুন, ধর্ষণ মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করেছিল। দেশের মানুষ গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারকে সমূলে উৎখাত করেছে। এখন দেশে গণতন্ত্র ও দেশের মানুষকে পূর্ণভাবে মুক্ত করতে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজন আরেকটি বিপ্লবের। যা এই জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করবে। ৭ নভেম্বর একনায়কতন্ত্র, শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে যেভাবে এদেশের মানুষ সম্মিলিতভাবে গর্জে উঠেছিল একইভাবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা সকল আধিপত্যবাদী শক্তির মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ছাত্র-জনতা খুশিতে রাজপথে নেমে আসে। এদিন সন্ধ্যার সময় আনন্দ মিছিলে যুক্ত হতে রোমান বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। সারাদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী পুলিশ নির্দয়ভাবে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করলেও রোমান ভেবেছিলেন সন্ধ্যার মধ্যে আওয়ামী লীগের খুনি সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাবে অথবা আত্মসমর্পন করবে। কিন্তু তা হলোনা। হঠাৎ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে বুকে, কপালে ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। কবর থেকে লাশ উত্তোলন ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান নিহত হন। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পরে তাঁর পরিবার মামলা দিলে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয় ময়না তদন্তের জন্য পরিবারের মামলা রোমানের পরিবার মামলা করায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম দস্তগীর গাজীকে ৩ দিনের রিমাণ্ডে নিয়েছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলীর আদালতে ৭ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান। এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট একই মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে রিমান্ডে নিয়েছিল রূপগঞ্জ থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোহাম্মদ মোহসীনের আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট সশস্ত্র হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান। এ ঘটনায় গত ২১ আগস্ট রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের খালা রিনা বেগম। ওই মামলায় গোলাম দস্তগীর গাজীও আসামি। গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। তাকে এর আগে একাধিক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমাণ্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত ২১ আগস্ট দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান মিয়াকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে দায়ের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গোলাম দস্তগীর গাজীসহ ৪৫ জনকে আসামি করা হয়। গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত রোমান মিয়ার খালা রিনা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন অর্থনৈতিক অবস্থা রোমানের বাবা পোলার আইসক্রিম কোম্পানীর কর্মকর্তার গাড়ি চালান। তিনি সন্তানদের নিয়ে ছনপাড়া ৮ নং ওয়ার্ডে সরকারি খাস জমিতে বাসা নিয়ে থাকেন। তাদের নিজস্ব কোন সম্পদ নেই। পরিবারের বক্তব্য মা রোজিনা বলেন, রোমান আমার প্রথম সন্তান। তার পড়ালেখার যাতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য আমার পরের সন্তানদের আরো দেরি করে নিয়েছি। রোমান শুধু আমার সন্তান নয়, সে আমার বন্ধু ছিল। রোমান ওর ভাইদের সাথে নিয়ে ঘুরতো। রোমান না থাকায় তার ভাইয়েরা এখন অসহায় বোধ করে। প্রায় সময় কবরস্থানে চলে যায়। ওর ছোট ভাই যার বয়স মাত্র ৩ বছর সে প্রশ্ন করে, ‘মা, কেন তুমি গেইট লাগিয়ে দিলেনা? কেন ভাইয়াকে মিছিলে যাইতে দিছো?’ বাবাকে প্রশ্ন করে, ‘কেন তুমি বাসায় ছিলেনা? কেন রোমান ভাইকে গুলি করে মাইরালাইছে?’ রোমানের ৫ বছরের ভাইটা রোমানের খুনি কে তা খোঁজে। সন্তানদের শাসন করলে তারা কবরস্থানে চলে যায়। কোথাও না পেলে কবরস্থানে এসে তাদের খুঁজে পাই। ওরা রোমানকে খুব মিস করে। নিউজ লিংক https://www.facebook.com/61561074656660/videos/577619417976921 https://www.facebook.com/hathazaridarpan24/videos/1884585658617741 একনজরে শহীদ সম্পর্কিত তথ্যাবলি নাম : আবদুল্লাহ আল রোমান জন্ম : ২০ জুলাই ২০০৭ পেশা : ছাত্র, দশম, নবকিশলয় স্কুল পিতা : মো: আনোয়ার হোসেন মাতা : রোজিনা ভাইদের নাম : আবদুল্লাহ (৬), আহমেদ (৫), মোহাম্মদ (৩) স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা : ছনপাড়া, ডেমরা, ঢাকা ঘটনার স্থান : ছনপাড়া, ডেমরা, হলুদ মরিছের মিলের সামনে আক্রমণকারী : আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী আহত হওয়ার সময় : ৫ আগস্ট, সন্ধ্যা আঘাতের ধরন : বুকে, কপালে ও মাথায় গুলি মৃত্যুর তারিখ ও সময়, স্থান : ৫ আগস্ট ২০২৪, ছনপাড়া, ডেমরা, হলুদ মরিছের মিলের সামনে শহীদের কবরের অবস্থান : ৩ নং ওয়ার্ড, ছনপাড়া কবরস্থান প্রস্তাবনা ১. মাসিক ও এককালীন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা ২. রোমানের বাবাকে সরকারী চাকুরী প্রদান করা যেতে পারে

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: শাকিল হোসেন

শেখ হৃদয় আহমেদ শিহাব

মারুফ মিয়া

মো: মায়া ইসলাম

মো: আরিফুল মিয়া

মো: এলিম হোসেন

দীপ্ত দে

মো: রাসেল

রিয়াজুল ফরাজী

মো: আল আমিন

মোহাম্মদ নুরু

সুমন মিয়া

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo