Image of শেখ মো: সফিকুল ইসলাম (শামীম)

নাম: শেখ মো: সফিকুল ইসলাম (শামীম)

জন্ম তারিখ: ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০

শহীদ হওয়ার তারিখ: ২০ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: সিলেট

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: শরবত ব্যবসায়ী শাহাদাতের স্থান: সাভার, ঢাকা

শহীদের জীবনী

জন্ম পরিচয় শহিদ মো: সফিকুল ইসলাম ১৯৭০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার শিমুলঘর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকে শামীম নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। তার পিতার নাম শেখ লাল মিয়া ও মাতার নাম হামিদা খাতুন। জন্ম থেকে বেড়ে উঠা ছিলো নিজ জেলা হবিগঞ্জে। দারিদ্র্যের সংগে লড়াই করে বড় হয়েছেন তিনি। জীবীকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন ঢাকা শহরে। পুরান ঢাকায় ছোটখাটো ব্যবসা করেই সংসার চালাতেন। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার এ চেষ্টা বহুদিন ধরে করছেন। গতবছর তিনি সাভারে চলে যান। সেখানে শুরু করেন শরবতের ব্যবসা। আরও কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সাথে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ঘটনা সংক্রান্ত বিবরণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে নতুন বিপ্লবের সূচনা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। স্বাধীন দেশকেই পুনরায় স্বাধীন করতে হয় ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে। টানা চারবার ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামীলীগ সরকার। যারা দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ পরিমাণ লুটপাটের মাধ্যমে বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে এবং নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে ও মানুষের বাক স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে গুম খুন করে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অসংখ্য নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণকে। মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর আটকে রেখে নির্যাতন করেছে বহু আলেম ওলামা ও গন্যমান্য ব্যক্তিকে। তাদেরই ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা ছাত্রলীগ নামক গুন্ডাবাহিনী তান্ডব চালিয়েছে সারা দেশ জুড়ে। এভাবেই কেড়ে নেয়া হয়েছিলো মানুষের মৌলিক অধিকার আর বাক স্বাধীনতা। জীবনের কোনো নিরাপত্তাই ছিলোনা নিজের দেশে। বেশ কয়েকবার আন্দোলন হলেও ক্ষমতার জোরে সেগুলো জোরদার হতে দেয়নি স্বৈরাচার সরকার। ২০২৪ সালের ৫ই জুন হাইকোর্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার পরেই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। যা পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রুপ নেয়। ১৬-১৮ জুলাই শতাধিক ছাত্রজনতা নিহত হয়। ফলে আন্দোলন শুধু ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গণআন্দোলনে পরিণত হয়। আর আন্দোলনের মূল কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সাভার ছিলো অন্যতম। যদিও বেশ কিছুদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পেটের দায়ে বের হতে হয়েছিলো কাজের সন্ধানে । তেমনি খেটে খাওয়া মানুষ ছিলেন শহীদ শামীম। ২০ শে জুলাই বিকেল ৪ টার সময় বাসা থেকে বের হয়েই পুলিশের গুলির মুখে পড়েন শামীম সহ বেশ কয়েকজন । এ সময় তিনিও অন্যদের মতো পালাতে চেষ্টা করেন। অন্যরা দৌড়ে পালাতে সক্ষম হলেও শামীমের গলায়, মুখে ও পেটে কয়েকটি গুলি লাগে। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শামীম। পরে রাতে একটি মিনি ট্রাক ভাড়া করে শহীদের লাশ বাড়িতে নিয়ে যান তার স্বজনরা। পরের দিন ২১ শে জুলাই সকাল ১১ টায় নিজ গ্রামে তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান শামীমের দেহে অসংখ্য গুলির চিহ্ন ছিলো। যেন তার শরীর টা ঝাঁঝরা করে দেয়া হয়েছে। শহীদ সম্পর্কে স্ত্রীর বক্তব্য শোকে মুহ্যমান শামীমের স্ত্রী সহায় সম্পদহীন পিয়ারা বেগম স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে অস্ফুট স্বরে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছাড়া আজ পর্যন্ত কেউ খোঁজ খবর নেয় নাই। এই দুনিয়াতে এখন আমার আর কেউ নেই। পারিবারিক আর্থিক অবস্থান শহীদ শামীমের আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। তাদের নিজেদের কোনো ঘরবাড়ি কিংবা চাষের জমি নেই। ঢাকার ছোট ব্যবসা দিয়েই কোনোরকমে সংসার চালাতেন। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে শেয়ার করা ছোট একটি খুপরি বাসায় থাকতেন তিনি। পরিবারে আয় করার মতো তিনি ছাড়া দ্বিতীয় আর কেউ নেই। তাই তার মৃত্যুর পর অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে তার আপনজনেরা। এক নজরে শহীদ পরিচিতি নাম : শেখ মো: সফিকুল ইসলাম, জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ পিতা : শেখ লাল মিয়া মাতা : হামিদা খাতুন গ্রাম : শিমুলঘর ডাকঘর : ছাতিয়াইন থানা : মাধবপুর জেলা : হবিগঞ্জ আহত হওয়ার স্থান ও তারিখ : সাভার, ২০/০৭/২০২৪ আক্রমনকারী : পুলিশ নিহত হওয়ার স্থান : সাভার, ২০/০৭/২০২৪ সমাধি : নিজ গ্রাম শহিদ পরিবারকে সাহায্যের প্রস্তাবনা : ১. বাসস্থানের ব্যবস্থা করা : ২. স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: সোহেল আখঞ্জি

নাহিদুল ইসলাম

মো: মোজাক্কির মিয়া

মো: আশরাফুল আলম

সোহাগ মিয়া

তারেক আহমেদ

আজমত আলী

সানি আহমদ

মো: আকিনুর রহমান

মো: হাসাইন মিয়া

মিনহাজ আহমদ

শেখ নয়ন হোসেন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo