Image of মেহেরুন্নেসা তানহা

নাম: মেহেরুন্নেসা তানহা

জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ২০০২

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা_সিটি

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ছাত্রী, অনার্স-৩য়, ব্যবসায় শিক্ষা, হযরত শাহ আলী কলেজ, মিরপুর শাহাদাতের স্থান : আলোক হাসপাতাল, মিরপুর, ঢাকা

শহীদের জীবনী

মেহেরুন্নেসা তানহা ২০০২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার আজিমনগর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহন করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে তার জীবন প্রদীপ নিভে যায়। তিনি ছিলেন কলেজ ছাত্রী এবং জুলাই বিপ্লবের এক সক্রীয় নারী নেত্রী। তার বাবার নাম মোশারফ হোসেন (৬৪) ও মায়ের নাম আছমা আক্তার (৪৫)। একমাত্র ভাইয়ের নাম আব্দুর রহমান তারিফ (১৯)। তারিফ ২০২৪ সালে এইচএসসি পাশ করেছে। মেহেরুন নেসার বাবা গাড়িচালক এবং মা গৃহিনী। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট কোটা আন্দোলনে জুলাই মাস জুড়ে চলে গ্রেফতার ও গণহত্যা। দেশব্যাপী প্রকাশ্যে ও অপ্রাকাশ্যে চলে নিন্দার ঝড়। এসময় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বন্ধ করে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিলে ছাত্ররা পাল্টা শিক্ষকদের সরকারী বাসভবন ত্যাগের নির্দেশ দেয়। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্ররা শিক্ষক ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে পাল্টা নোটিস প্রদান করে নজির স্থাপন করে। এইচ এস সি পরীক্ষা চলমান ছিল। ছাত্ররা যাতে আন্দোলনে নামতে না পারে একারণে সরকার সর্বত্র সাধারণ ছুটির ঘোষণা দেয়। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। ফলে অনলাইনে আয়-ব্যায় বন্ধ হয়ে যায়। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কাজ করাসহ আয়-ব্যায় বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাংকিং সেক্টর স্থবির হয়ে পড়ে। অনলাইনে ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য ও ইলিয়াস হোসাইনের আহ্বানে প্রবাসীরা আওয়ামীলীগের গ্রেফতার,গুম,খুন ও গণহত্যার প্রতিবাদে রেমিটেন্স প্রেরণ বন্ধ করে দেয়। বৈদেশিক আয় কমে যাওয়ায় শেখ হাসিনা ইন্টারনেট সংযোগ অব্যাহত রাখতে বাধ্য হন। অফিস আদালত আবার সরব হয়ে উঠে। স্থগিত এইচ এস সি পরীক্ষা পুনরায় গ্রহণের নির্দেশনা পেয়ে নটরডেম কলেজ, তামিরুল মিল্লাত মাদরাসা, ঢাকা কলেজ, রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, তিতুমীর কলেজ, চট্টগ্রামের বাইতুশরফ, পতেঙ্গা আলিয়াসহ সারাদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ইসলামী ছাত্রশিবিরের পরামর্শে তৈরী ৯ দফা দাবী বাস্তবায়নের পক্ষে জোর দাবী জানায়। ছাত্রদের হত্যার বিচার করা না হলে এইচ এস সি পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। একে একে কলেজ ও মাদরাসার এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বয়কটের নোটিস অনলাইনে আসতে থাকে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন জুলাইয়ের শেষ দিকে আওয়ামীলীগের নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ভাতের হোটেলের মালিক খ্যাত পুলিশের ডিবি হারুন ওরফে হাউন আংকেলের পতিতালয়ে সক্রীয় অংশগ্রহণের ভিডিও প্রকাশ করে দেয়। যা নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়ে যায় এবং আওয়ামীলীগের নেতাদের লাম্পট্য অতীতের মতো হট নিউজ হিসেবে প্রচারিত হতে থাকে। যার প্রেক্ষিতে ১ আগস্ট হারুনকে গোয়েন্দা শাখা থেকে স্থানান্তর করে ডিএমপির ক্রাইম এন্ড অপারেশন শাখায় পদায়ন করা হয়। ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে সরকার। আওয়ামীলীগ বুঝতে পেরেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করছে শিবিরের মেধাবী সদস্যরা। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিশেষভাবে ভূমিকা রেখেছিল স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ার পরে গ্রামীনফোন সেন্টার ঘেরাওয়ে নেতৃত্ব দেয় একজন ছাত্রী। উত্তরা, মিরপুর, বাড্ডা, রামপুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রাজপথের উত্তপ্ত ময়দানে ছাত্রীদের সরব উপস্থিতি ছিল বেশ লক্ষনীয়। মিরপুরের হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়তেন মেহেরুন নেছা তানহা। তানহার মামাতো ভাই আকরাম খান রাব্বি ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন। তানহা বিক্ষুব্ধ হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদে অংশ নেয়। জুলাই মাস জুড়ে রাজপথে সরব থাকে। ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতা কোন ধরণের অস্ত্র ছাড়াই সারাদেশে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পরদিন ৫ আগস্ট ১ দফার ঘোষণায় ভয় পেয়ে শেখ হাসিনা তার দূর্নীতিবাজ ছোট বোনকে সাথে নিয়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন। ছাত্র-জনতা প্রাণের মায়া ত্যাগ করে গণভবনের দিকে যাত্রা শুরু করেন। পথে পথে ছিল পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও আওয়ামীলীগের অস্ত্রধারীদের বাধা এবং নির্বিচারে গুলি। আহত হতে থাকে মানুষ, অনেকে শাহাদাত বরণ করেন। মেহেরুন নেসা তানহা দৃপ্ত পদে গণভবন দখলে এগিয়ে যায়। যেসকল সাহসী ছাত্র-ছাত্রী গণভবন দখলে নিয়েছিল তানহা তাদের একজন। এসম্পর্কে বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মিছিলে যেতে মানা করতাম। মেয়ে শুনত না। অন্যদিনের মতো ৫ আগস্টও শেখ হাসিনার পালানোর খবরে গণভবনে যায় তানহা। ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়। তানহার মা আছমা আক্তার বলেন, ‘ওই দিন রাতে ৮ টায় মেয়ে আমার জন্য ফুল নিয়ে আসে। এসে বলে মা দেখো, তোমার জন্য গণভবন থেকে ফুল নিয়ে এসেছি। নাও এটা গণভবনের ফুল। আমাকে একগ্লাস পানি দাও। সারা রাস্তা হেঁটে এসেছি। আমি ওকে পানি দেই। শাহাদাত সম্পর্কে মা বলেন, আমি তানহাকে বলি চারদিকে ঝামেলা হচ্ছে, ভাই কোথায়? তানহা বলে ও যে কোন দিকে গেলো আমি জানি না। তখন ছেলেকে ফোন দিতে বলি, ওর ভাই তারিফকে ফোন দিয়ে বলে নতুন বাজারের দিকে ঝামেলা হচ্ছে। তুই পেছনের রাস্তা দিয়ে বাসায় আয়, এই কথা বলা শেষ হতেই তানহা মেঝেতে পড়ে যায়। আমি তাকিয়ে দেখি মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। ওর বুক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তখন আমি ওর আব্বাকে ফোন করি। ওর আব্বা দৌঁড়ে এসে ওকে ধরে নিয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসম্পর্কে তানহার বাবা বলেন, ‘ওর মা যখন ফোনে আমাকে বলে তানহার গুলি লাগছে। আমি নিচে ছিলাম। দৌড়ে বাসায় আসি। এসে দেখি মেয়ে আমার মেঝেতে পড়ে আছে। ওর শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে। তখন ওকে আমি একটু পানি খাওয়াই। মা, মা বলে ডাকি, মা আমার চোখ খোলে না। আমার দিকে তাকায় না। পরে আলোক হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু কোন লাভ হয় না। মা টা আমাকে ছেড়ে চলেই গেল। আমি এমন হতভাগ্য বাবা, আমার কোলের মধ্যে মেয়েটা মারা গেল, আমি কিছুই করতে পারলাম না।’ পরিবারের মামলা বাবা মোশাররফ হোসেন সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। অর্থনৈতিক অবস্থা ২০২২ সালের শুরুর দিকে পরিবারকে সহযোগিতা ও নিজের লেখাপড়ার খরচ যোগাড় করতে রাকাইন সিটির একটি মেয়েদের পোশাকের শো রুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। শহীদ মেহেরুন নেসার বাবা ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রাইভেট কার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর বাবা মোশাররফ হোসেন গাড়ি চালক। অসচ্ছল হলেও সবাইকে নিয়ে মোশাররফের ছিল সুখের সংসার। বাবার ১৬ হাজার টাকা বেতনে সংসার চলে না। তাই বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাসার পাশেই একটি শোরুমে চাকরি করে পড়ালেখার খরচ চালাতেন তানহা। পরিবারকেও সহায়তা করতেন। সহযোগিতা জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে পাঁচলাখ টাকার চেক ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা পেয়েছেন। পরিবারের বক্তব্য মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি না, বুঝিও না। আমার মেয়েও রাজনীতি করত না। ১৯ জুলাই জুম্মার নামাজের পর মিরপুরের মাজার রোডে মিছিলে ছিল তানহা’র মামাতো ভাই আকরাম খান রাব্বি। এমবিএ পরীক্ষা দিয়েছিল সে। ছেলেটার হাতে জায়নামাজও ছিল। কোনো অপরাধ করেনি। তবে পুলিশ প্রথমে রাব্বির হাতে গুলি করে। মাটিতে পড়ে গেলে পেটে গুলি করে। তিন দিন হাসপাতালের মর্গে রাব্বির লাশ আটকে রেখেছিল। পচাগলা লাশ ফেরত দিয়েছে। গোসল পর্যন্ত করানো যায়নি।’ তিনি বলেন, ‘রাব্বি হত্যার পর বদলে যেতে শুরু করে তাঁর ছেলে ও মেয়ে। তানহা প্ল্যাকার্ড লিখত, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’। এটা লিখে রাস্তায় দাঁড়াত। তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নির্দোষ মেয়েটারে মাইরা ফেলল। আমার বুক খালি কইরা দিল। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’ অন্তবর্তীকালিন সরকারের কাছে প্রত্যাশার বিষয়ে বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পরিবারের নিরাপদ ভবিষ্যত চাই। আমার এই অল্প আয় দিয়ে তো সংসার চলে না। আমার বয়স হয়েছে। তাই সরকারের প্রতি আহবান, আমার ছেলের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ওর যেন একটি চাকুরির ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি যারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত হয়েছেন রাষ্ট্রীয় ভাবে সবাইকে শহিদের মর্যাদা দেওয়া হোক। আছমা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েটা ঝাল খেতে পছন্দ করতো। বোম্বাই মরিচ তার খুব পছন্দের ছিল। প্রতি শুক্রবার নিজ হাতে পোলাও-মাংস রান্না করতো। এখন আমি পোলাও-মাংস রান্না করতে গেলেই মেয়েটার কথা মনে হয়। ওরা ভাই-বোন এক রুমে ঘুমাত। তানহা চলে যাওয়ার পর ওর ভাই ঠিক মত ঘুমায় না, খাবার খায় না, কথাও বলে না।’ তিনি আরো বলেন, আশা ছিল মেয়েটা পড়ালেখা শেষ করলে একটা চাকুরি করবে। ভালো ঘর দেখে ওর একটা বিয়ে দেব। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। এখনও ভুল করে অনেক সময় খেতে বসে ডাকি, ‘তানহা খেতে আয়’। কিছু সময় পরে মনে হয়, ও কিভাবে খেতে আসবে? চোখের পলকেই আমার সব শেষ হয়ে গেল। এখন আর আমাকে কেউ বলে না ‘আমি বেতন পেয়েছি, মা তোমার কি লাগবে’? মামা ফারুক খান বলেন, ‘আমাদের একমাত্র ভাগ্নি ছিল তানহা। তাই আমরা সবাই ওকে আদর করতাম। আন্দোলনে আমার ছেলে (ওর ভাই রাব্বি) শহিদ হয়েছে ১৯ জুলাই। এরপর থেকে তানহা ওর মামিকে দেখাশোনা করার জন্য আমার বাসাতেই ছিল। ৫ আগস্ট সকালে নিজের বাসায় আসে। কেন যে মেয়েটাকে আসতে দিলাম। যদি আসতে না দিতাম তাহলে ছেলের পর ভাগ্নিটারে হারাতে হতো না।’ নিউজ লিংক https://www.probahobangla.com/fitcher/9625 https://www.bssnews.net/bangla/stories-of-mass-upsurge/173111 https://www.somoynews.tv/news/2024-12-29/QJSL5AKV একনজরে শহীদ সম্পর্কিত তথ্যাবলি নাম : মেহেরুন নেসা জন্ম : ২০০২ পেশা : ছাত্রী, অনার্স-৩য়, ব্যবসায় শিক্ষা, হযরত শাহ আলী কলেজ, মিরপুর পিতা : মো: মোশারফ হোসেন খান (৬৬) মাতা : আসমা আকতার (৪০) ভাই : আবদুর রহমান (১৯), ছাত্র, এইচ এস সি, মিরপুর ডিগ্রী কলেজ স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা : ৫৫/২, পূর্ব বাইশটেক, ওয়ার্ড-০৪, কাফরুল, ঢাকা ঘটনার স্থান : নিজ বাসার বারান্দায় আক্রমণকারী : পুলিশ ও যুবলীগ আহত হওয়ার সময় : তারিখ: ৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবার, সময়: রাত ৯ টা আঘাতের ধরন : বুকে গুলি মৃত্যুর তারিখ, সময় ও স্থান : ৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবার, সময়: রাত ৯ টা , আলোক হাসপাতাল শহীদের কবরের অবস্থান : পূর্ব বাইশটেক কবরস্থান প্রস্তাবনা ১. মাসিক ও এককালীন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা ২. ছোট ভাইয়ের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: সাফাকাত সামির

বাবুল হাওলাদার

মো: মেহেদী হাসান

মোঃ নুরু বেপারী

মো: রায়হান

মোঃ সাইফুল ইসলাম

মো: মনির হোসাইন

মাহামুদুর রহমান সৈকত

মারুফ হোসেন

আবু ইসাহাক

মাওলানা খুবাইব আহমাদ

মো: মোসলেহ উদ্দিন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo