Image of কারিমুল ইসলাম

নাম: কারিমুল ইসলাম

জন্ম তারিখ: ১৫ মে, ২০০২

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: সিলেট

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : লেবু ব্যবসায়ী শাহাদাতের স্থান : যাত্রাবাড়ী থানার সামনে, ঢাকা

শহীদের জীবনী

কারিমুল ইসলাম ২০০২ সালে ১৫ মে সিলেট জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন । তাঁর বাবার নাম মোঃ শাহাবুদ্দিন এবং মায়ের নাম সায়েদা বেগম। তাঁর স্ত্রীর নাম কোহিনুর আক্তার। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট কোটাপ্রথা নিয়ে টানা আন্দোলন শুরু হয় ৫ জুলাই। শুরুতে এই আন্দোলন অহিংস হলেও তা সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে ১৫ জুলাই থেকে। প্রথমে আন্দোলন প্রতিহত করতে নামেন ছাত্রলীগ ও দলীয় সমর্থকেরা। এই সন্ত্রাসী বাহিনী নির্দয়ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরদের পেটায়। শেখ হাসিনা ছাত্রদের নির্মূল করতে পরে রাজপথে নামান হয় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীকে। ৬ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, ‘বিএনপি তো একটি রাজনৈতিক দল। দেশের ভেতরে যা হচ্ছে, তার প্রতিক্রিয়া তো বিএনপিকে দিতেই হবে। এটা ছাত্রদের আন্দোলন। এখানে বিএনপির সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই বলে ন্যায্য আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন করব না?’ ৮ জুলাই ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটা বাতিলের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’ অপরদিকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধু সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রেখে সংসদে আইন পাশ করতে হবে। এটা করার দায়িত্ব কেবল নির্বাহী বিভাগ ও সরকারের। এখন আর আদালত দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।’ ১১ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা লিমিট ক্রস করে যাচ্ছেন।’ ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটা বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। মামলার পর আদালত যে রায় দেন, এতে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। আদালতেই সমাধান করতে হবে।’ ‘তারা তো আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান কি তারা চিনবে না বা একটা কাজ করতে হলে কার্যনির্বাহীর কাজ কী, বিধিমালা বা ধারা থাকে, একটা সরকার কীভাবে চলে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা এদের নাই।’ মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে?’ তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে সারাদেশে ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে নেমে এসে স্লোগান দিতে থাকে, তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে? স্বৈরাচার স্বৈরাচার! ১৫ জুলাই ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ‘‘রাজাকার’’ স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে।’ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাঁরা ‘‘আমি রাজাকার’’ স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁদের শেষ দেখিয়ে ছাড়ব।’ তখনকার শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল বলেন, যারা প্রকাশ্যে নিজের আত্মপরিচয়, জন্মপরিচয়, ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে ‘‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার! রাজাকার!’’ স্লোগান দিয়েছে, এরা সবাই এই যুগের রাজাকার। এ যুগের রাজাকারদের পরিণতি ওই যুগের রাজাকারদের মতোই হবে! ঘৃণা, ধিক্কার আর ক্রোধ এদের প্রতি! রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়!’ পরদিন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সরকারী সন্ত্রাসী বাহিনী যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে। অপরদিকে খালি হাতে সাধারণ ছাত্র-জনতা কাতারে কাতারে প্রাণ বিসর্জন দিতে থাকে। ইসলামী ছাত্রশিবির সমন্বয়কদের সেফ হোমে রাখাসহ নিত্য নতুন ও অভিনব কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনকে জাগিয়ে রাখে। মার্চ ফর ঢাকা কর্মসূচির আহ্বান করা হয়। দেশবাসী হাসিনা খেদাও আন্দোলনে অতীতের যেকোনো সময়ের আন্দোলনের চেয়েও দুর্বার গতিতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। শহীদ কারিমুল ইসলাম অদম্য সাহস নিয়ে ৫ আগস্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আন্দোলন চলাকালীন যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের গুলিতে আহত হন। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়, ২ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পরে ১ অক্টোবরে ইন্তেকাল করেন। অর্থনৈতিক অবস্থা শহীদ কারিমুল ইসলাম পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন, তিনি আড়তে লেবু বিক্রি করতেন। তার গ্রামে ভিটে বাড়ি সংক্রান্ত সামান্য জায়গা আছে। সেখানে তার বাবা-মা থাকেন। কোন আয় উপার্জন না থাকায় তারা বর্তমানে খুব অভাবে দিন যাপন করছেন। শহীদের স্ত্রী বর্তমানে ৯ মাসের অন্ত:সত্বা তিনি তার বাবার বাড়িতে আছেন। তিনিও খুব আর্থিক সংকটে দিন অতিবাহিত করছেন। একনজরে শহীদ সম্পর্কিত তথ্যাবলি নাম : কারিমুল ইসলাম জন্ম : ১৫/০৫/২০০২ পেশা : ক্ষুদ্র ব্যবসা (আড়তে লেবু বিক্রি করতেন) পিতা : মো: শাহাব উদ্দিন মাতা : সায়েদা বেগম স্ত্রী : কোহিনুর আক্তার, বয়স: ১৯ (সন্তানসম্ভাবা) ভাই-বোন : ৩ ভাই স্থায়ী ঠিকানা : পশ্চিম রুহিতনসী, পশ্চিম রুহিতনসী, লাখাই, লাখাই, হবিগঞ্জ, সিলেট বর্তমান ঠিকানা : পশ্চিম রুহিতনসী, পশ্চিম রুহিতনসী, লাখাই, লাখাই, হবিগঞ্জ, সিলেট ঘটনার স্থান : যাত্রাবাড়ী থানার সামনে। আক্রমণকারী : পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার সময় : ৫ আগস্ট দুপুর ১২ টা আঘাতের ধরন : বুক ও হাতে ৪ টা গুলি লাগে। মৃত্যুর তারিখ ও সময়, স্থান : ১ অক্টোবর ২০২৪ সকাল ৫ টা, ঢাকা মেডিকেল শহীদের কবরের অবস্থান : নিজ গ্রাম প্রস্তাবনা : ১. মাসিক ও এককালীন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা : ২. পুনর্বাসন করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: শাহজাহান মিয়া

তারেক আহমেদ

মো: সোহেল আহমদ

রিপন চন্দ্র শীল

জয় আহমেদ হাসান

মো: আকিনুর রহমান

নাহিদুল ইসলাম

পঙ্কজ কুমার কর

মো: সোহেল আখঞ্জি

মো: মামুন আহমেদ রাফসান

মিনহাজ আহমদ

মো:  কামরুল ইসলাম পাভেল

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo