Image of মো: আলামিন

নাম: মো: আলামিন

জন্ম তারিখ: ৭ আগস্ট, ২০০৫

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : ‍দিন মজুর, শাহাদাতের স্থান : ঢাকা, উত্তরা ১১ নং সেক্টর জমজম টাওয়ারের মোড়।

শহীদের জীবনী

শহীদ মো: আল আমিন মুন্সিগঞ্জ জেলায় ২০০৫ সালের ৭ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আইয়ুব খলিফা (৫০) এবং মাতা আছিয়া বেগম (৪৫)। পিতা এবং অসুস্থ মাকে গ্রামে রেখে আপন বড় ভাই ও চাচাতো ভাইয়ের সাথে রাজধানী ঢাকা শহরে জীবিকার সন্ধানে এসেছিলেন। তিনজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দিনমজুরির কাজ নেন এবং একই ঘরে ভাড়ায় থাকতেন। মাসিক আয় থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে গ্রামে বসবাসরত বাবা এবং অসুস্থ মায়ের জন্য পাঠাতেন। অন্যের দোকানের কর্মচারী হয়েও দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে আন্দোলন সংগ্রামে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন শহীদ মো: আল আমিন। আন্দোলনের একেবারে শুরুর দিকে উনিশে জুলাই তিনি আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন এবং মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তৎক্ষণাৎ ইন্তেকাল করেন । শাহাদাতের প্রেক্ষাপট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃবৃন্দের ডাকে বাংলা ব্লকেড চলাকালীন সময়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে সরাসরি গুলি করে পৈশাচিকভাবে হত্যা করলে সারাদেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। এ আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকাসহ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, বাড্ডা, রামপুরাসহ পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে ওঠে ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃবৃন্দের কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণার ফলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের আহবানে সাড়া দিয়ে ঢাকার অন্যান্য এলাকার মত ঢাকা উত্তরার ১১নং সেক্টরের সাধারণ মানুষও ছাত্রদের সাথে মাঠে নেমে আসে এবং কমপ্লিট শাটডাউন এর সাথে একাত্ত্বতা ঘোষণা করে। এমতাবস্থায় দিশেহারা হয়ে সরকারের পেটুয়া বাহিনীর সাথে খুনি হাসিনার লেলিয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সংগ্রামরত ছাত্র জনতার ওপর আক্রমণ শুরু করে। তাদের বেপরোয়া ছোড়া গুলির মুখে ছাত্র জনতা একের পর এক আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে শহীদ আলামিন মাথায় গুলিবদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার বড় ভাই এলাকার লোকজনের সহায়তায় তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শহীদের পরিবার সংক্রান্ত বিশেষ তথ্য আর্থিকভাবে অসচ্ছল তৃতীয় বিশ্বের এক দারিদ্র পীড়িত দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসাবে খ্যাত এ আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অধিকাংশই অতি দরিদ্র পরিবারের সদস্য। শহীদ মো: আল আমিনও এর ব্যতিক্রম নন। দিনমজুর বাবার ভিটেমাটি ও কৃষি জমি নেই। অন্যের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করেন। অভাবের কারণে বেশিদূর লেখাপড়াও করতে পারেননি। বাবা অসুস্থ তাই সংসারে সাহায্য করার জন্য নিজেকে দিনমজুরের কাজে নিয়োজিত করেন। মাও অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। শহীদ আল আমিনের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে অসুস্থ পিতা-মাতা বাকরুদ্ধ। বড় দুই বোন হাফিজ আক্তার এবং রুমা আক্তার বিবাহিত হলেও অপর বোন সুমা আক্তার এখনো ছাত্রী। নিঃস্ব এই পরিবারটির মাসিক আর্থিক সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন। এক নজরে শহীদ পরিচিতি নাম : শহীদ মো: আলামিন পিতার নাম : আইয়ুব খলিফা (৫০) মাতার নাম : আছিয়া বেগম (৪৫) জন্ম তারিখ : ৭ আগস্ট ২০০৫ স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম- বালাশুর, ইউনিয়ন: বাঢ়ীখাল, থানা: মুন্সিগঞ্জ সদর, জেলা: মুন্সিগঞ্জ বর্তমান ঠিকানা : একই বৈবাহিক অবস্থা : অবিবাহিত আহত হওয়ার স্থান : ঢাকা, ১১ নং সেক্টর জমজম টাওয়ারের মোড় আহত হওয়ার সময়কাল : ১৯ জুলাই, বিকাল ৩:০০ মিনিট শহীদ হওয়ার সময় : ১৯ জুলাই ২০২৪, বিকাল ০৩:৩০ মিনিট, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যাদের আক্রমণের শহীদ : আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী এবং পুলিশ পরামর্শ ১. শহীদ পরিবারের জন্য নিয়মিত অনুদানের ব্যবস্থা করা ২. শহীদের বৃদ্ধ পিতা-মাতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ৩. শহীদ পরিবারের জন্য একটি স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ করে দেওয়া ৪. ছোট বোনের পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহ করা এবং পড়াশোনা শেষে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: আদিল

মোঃ জালাল উদ্দিন

মো: এলিম হোসেন

মো: রুখতন মিয়া

মোহাম্মদ ফিরোজ তালুকদার

ইসমাইল হোসেন রাব্বি

আল আমিন ইসলাম (সেলিম)

বাবু মোল্লা

মো: মাহফুজ

মো: বিপ্লব

মো: হৃদয়

মো: ইমন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo