Image of মো: গণি মিয়া

নাম: মো: গণি মিয়া

জন্ম তারিখ: ১৮ জুন, ১৯৮৫

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : রিক্সা চালক, শাহাদাতের স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

শহীদের জীবনী

‘আমরা জানি না কীভাবে কী করবো! কীভাবে বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পরিশোধ করব!’ তেজস্বী মহাবীর শহীদ মো: গনি মিয়া। নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেশ মাতার স্বাধীনতা অর্জনে বিশেষ ভুমিকা রেখেছেন। হে বীর ভ্রাতা আপনাকে হাজারো সালাম। শেরপুর জেলার শ্রীবরদী ঝিনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ফজল হক ও হাজারা বেগমের প্রিয় সন্তান তিনি। ১৯৮৫ সালের ১৮ জুন পিতা মাতার কোল আলোকিত করে জন্ম নেয় ২৪ এর মুক্তিকামী এই মুক্তিযোদ্ধা। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর মোছা: সবুজা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। মৃত্যুকালে আত্মীয় স্বজন, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ধরাধাম থেকে বিদায় নিয়েছেন পরম শ্রদ্ধেয় শহীদ গনি মিয়া। পেশাগত পরিচয় পেশা হচ্ছে কোন ব্যক্তির নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ পরবর্তী জীবন-জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা। পেশাগত পরিচয়ের মধ্যে রয়েছে ব্যক্তির ভূমিকা, দায়িত্ব, মূল্যবোধ এবং নৈতিক মানগুলির সারিবদ্ধতা এবং তাদের নির্দিষ্ট পেশা দ্বারা গৃহীত সামঞ্জস্যপূর্ণ অনুশীলন। ঠিক তেমনি বাল্যকাল থেকে গনি মিয়া পারিবারিক ভাবে দায়িত্বশীল হয় উঠেছিলেন। আর্থিক সংকুলান না থাকায় ছোট থেকেই পরিবারের দায়িত্ব এসে বর্তায় তাঁর উপর। কখনও শ্রমিক, কখনওবা রিক্সা চালক। দিনরাত পরিশ্রম করে এভাবেই সংসারের হাল ধরেছিলেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি হিসেবে তিনি ছিলেন অনুপম। অভাব অনটনের পরিবার আরেকটু ভালো থাকবে সেই আশায় ছয় মাস আগে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন গনি মিয়া। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার স্থানীয় একটি চালকলে কাজ করতেন ৩৮ বছর বয়সী এই যুবক। ভেবেছিলেন ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালিয়ে পরিবারের অভাব দূর করবেন। সেই সুদিন আর আসলো না গনি মিয়া ও তাঁর পরিবারের। শাহাদাতের প্রেক্ষাপট শহীদ ঢাকার তেজগাঁও এলাকার নাখালপাড়ায় একটি মেসে উঠেছিলেন। গত ১৯ জুলাই ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ চলে। সাধারণ জনতার উপর নরপশুরা গুলি বর্ষণ করে। আওয়ামী স্বৈরাচারী হাসিনা তার বিতর্কিত সন্ত্রাসী সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়। সেদিন সন্ধ্যায় মহাখালীতে গ্যারেজে রিকশা রেখে ঘরে ফেরার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনীর একটি গুলি তাঁর বুকে এসে বিদ্ধ হয়। ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হয় সে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পথচারীরা তাঁকে দ্রুত নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সেখানে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কয়েক ঘণ্টা পর শাহাদত বরণ করেন শহীদ গনি মিয়া। শহীদের লাশ বাড়িতে নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্যও ছিল না শহীদ পরিবারের। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া মেটাতে মানুষের কাছে হাত পাততে হয়েছে। পরবর্তীতে শ্রীবর্দী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নে নিজ গ্রামে জানাজা শেষে শহীদ গণি মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়। প্রিয়জনদের অনুভূতি শহীদের বড় ভাই হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমার ভাইয়ের তিন সন্তান রয়েছে। গণি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল। তাঁকে হারিয়ে পরিবারটি এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। প্রতিবেশী এক চাচা বলেন, গনি যখন ঢাকায় যায় তখন পরিবারের ওপর দুই লাখ টাকা ঋণের বোঝা ছিল। সেই ঋণ পরিশোধ করতেই গনি ঢাকায় গিয়েছিলেন। শহীদের বড় ছেলে ১৬ বছর বয়সী শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমার বাবা স্বপ্ন দেখতেন, পরিবারের অভাব দূর হয়ে ভালো দিন আসবে। কিন্তু এখন আমাদের কী হবে জানি না, হয়তো ছোট ভাইয়ের মতো আমাকেও স্কুল ছাড়তে হবে। বর্তমানে আমরা জানি না কীভাবে কী করব, কীভাবে বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পরিশোধ করব।’’ পারিবারিক অবস্থা শহীদ গণি মিয়ার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে শহীদুল ইসলাম (১৬) স্থানীয় কলেজের একাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়ন করছে। ছোট ছেলে সুমন ইসলাম (১৪) অভাবের কারণে দুই বছর আগে পড়ালেখা বাদ দিয়েছে। মাসে ছয় হাজার টাকা বেতনে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করেন তিনি। একমাত্র মেয়ে গোলাপি। যার বয়স মাত্র তিন বছর। শহীদ প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দেড় হাজার টাকা বাড়িতে পাঠাতেন, তা দিয়েই চলতো তাঁর অবহেলিত টানাপোড়েনের সংসার। মৃত্যুকালে তিনি কোন জায়গা জমি রেখে যেতে পারেন নি। নিউজ লিংক https://ournewsbd.net/%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%a4-%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%ac/ একনজরে শহীদের তথ্যাবলি নাম : শহীদ মো: গণি মিয়া পিতা : মৃত ফজল হক মাতা : হাজারা বেগম জন্ম তারিখ : ১৯৮৫ সালের ১৮ জুন স্থায়ী ঠিকানা : শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর গ্রাম আহত হওয়ার সময় কাল : ১৯ জুলাই ২০২৪, মহাখালী শহীদ হওয়ার সময় ও স্থান : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ১৯ জুলাই ২০২৪ যাদের আঘাতে শহীদ : পুলিশের গুলি শহীদের কবরস্থান : শ্রীবর্দী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন নিজ গ্রামের কবরস্থান সন্তানের বিবরণ ১. মো: শহীদুল ইসলাম (১৬) শেরপুর স্থানীয় কলেজের একাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়ন করছেন ২. মো: সুমন ইসলাম (১৪) একটি ওয়ার্কশপে কাজ করেন। ৩. মোছা: গোলাপি আক্তার (৩) প্রস্তাবনা ১. শহীদের এতিম সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে ২. শহীদ পরিবারে মাসিক বা এককালীন সহযোগিতা করা যেতে পারে ৩. স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে ৪. শহীদ স্ত্রীকে কর্মসংস্থান করে দেয়া যেতে পারে

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া
Image of মো: গণি মিয়া

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: সুজন মিয়া

মো: হাছান মিয়া

মো: আরিফুল মিয়া

সুমাইয়া বেগম

মো: জিয়াউর রহমান

 হাসিবুর রহমান

দীপ্ত দে

মো: শ্রাবণ গাজী

মো: মিরাজুল ইসলাম অর্নব

মো: সাগর আহম্মেদ

মামুন মিয়া

হাফেজ মো: শরিফুল ইসলাম

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo