Image of  মো: জাহাঙ্গীর আলম

নাম: মো: জাহাঙ্গীর আলম

জন্ম তারিখ: ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৭৬

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৯ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা_সিটি

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: সবজি ব্যবসা, শাহাদাতের স্থান : যাত্রাবাড়ী

শহীদের জীবনী

শহীদ মো: জাহাঙ্গীর আলম (৩৯) একজন নিম্ন ম্যধবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও তার মন ছিল খুবই উদার। মনোবল ছিল দৃঢ় আর বিশ্বাস ছিল অগাধ। তিনি ১৯৭৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার দনিয়া ইউনিয়ন এর কাজলারপাড়ের এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত গফুর কালু মিয়া এবং মা মৃত সেলিনা বেগম। ছোট বয়সেই তিনি তার বাবা-মা কে হারান। বড় বোন পারভিন আক্তারই নিজের ছোট ভাইকে লালন পালন করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি স্ত্রীসহ দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার দুই কন্যা মোসা: মিথিলা খাতুন (২০) বিবাহিতা এবং সিনথিয়া বেগম (১৪) কাজলাপাড় উচ্চ বিদ্যালয় এর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। পেশাগত জীবেনে তিনি একজন সবজি বিক্রেতা হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত। আচার-ব্যবহার ও হাসি-খুশি ব্যক্তি হিসেবে সকলেই তাকে ভালো জানতেন। যেভাবে শহীদ হলেন সবজি বিক্রেতা শহীদ মো: জাহাঙ্গীর আলম পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ফুটপাতে এবং ফেরী করে সবজি বিক্রি করতেন। প্রতিদিন তিনি কাজলারপাড় এলাকার সবজি আড়ত থেকে তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন সবজি কিনে রাস্তায় ফেরী করে বিক্রি করতেন। প্রতিদিন যে টাকা আয় করতেন তাই দিয়ে সংসার চালাতেন। চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর মধ্যেও তার সবজি বিক্রি করতে হতো তা না হলে তার সংসার চলতো না। জুলাইয়ের শুরু থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ধীরে ধীরে গণ আন্দোলনে পরিণত হয়। চূড়ান্ত রুপ নেয় ১৬ জুলাই এর পর থেকে। এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ সারাদেশের সর্বত্রই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পতিত হয়। তারই প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী শহীদ মো: জাহাঙ্গীর আলম। প্রতিদিনের ন্যায় জাহাঙ্গীর আলম সবজি বিক্রির উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। দিনটি ছিলো ১৯ জুলাই ২০২৪ সাল রোজ শুক্রবার। তিনি কাজলারপাড় এলাকার সবজি আড়ত থেকে তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন সবজি কিনে বিকেল ৪:৩০টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ডেমরা রোডে কাজলা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যান। সেখানে পুলিশ আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর অনবরত গুলিবর্ষণ করতে থাকে। শহীদ মো: জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে কিছু বুঝে উঠার আগেই স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনীর একটা বুলেট এসে তার বুক দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হয়ে যান। তাঁকে প্রাথমিকভাবে কেউ সনাক্ত করতে পারেনি। পরে স্থানীয় এলাকার লোকজন দেখে চিনতে পারলে তার ভাই হাসানকে ফোন করে শহীদ জাহাঙ্গীর আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকার বিষয়টি জানানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের লোকজন ছুটে গেলে শহীদ জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার জানায় বুকে গুলি লাগায় প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে শহীদ জাহাঙ্গীর আলমকে মাতুয়াইল কবরস্থানে দাফন করা হয়। শহীদ সম্পর্কে বড় বোনের স্মৃতিচারণ শহীদের বড়ো বোন পারভিন আক্তার বলেন, “শহীদ মো: জাহাঙ্গীর আলম একজন সহজ সরল মানুষ ছিলেন। তাকে কেউ বকা দিলে সে তা হজম করতেন তবুও কোনো কটু কথা বলতেন না। কারও সাথে কোনো ঝামেলায় জড়াতেন না। দুই মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছিলেন। শহীদ জাহাঙ্গীর আলম এর যখন ১৪ বছর বয়স তখন আমার মা মারা যায়। মা মারা যাওয়ার পর আমিই তাকে বড় করেছি। আমি ভাইকে ভালো রাখার জন্য মশারি কারখানায় কাজ করে তাদের খাবার জোগান দিয়েছি। আমি কোথাও তার মায়া ছেড়ে যেতে পারতাম না। কারণ, আমাকে এক মুহূর্ত না দেখলে আপা, আপা করে চারিদিকে খুঁজে বেড়াত। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।” শহীদের প্রোফাইল নাম : মো: জাহাঙ্গীর আলম, পেশা-সবজি ব্যবসায়ী পিতা : মৃত গফুর কালু মিয়া মাতা : মৃত সেলিনা জন্মতারিখ : ২৫ ডিসেম্বর ১৯৭৬ সাল আহত হওয়ার তারিখ ও স্থান : ১৯ জুলাই ২০২৪, কাজলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা / ঢালের সন্নিকটে, যাত্রাবাড়ী শাহাদাতের তারিখ ও স্থান : ১৯ জুলাই ২০২৪, বিকাল ৪:৩০, কাজলা ব্রিজ সংলগ্ন স্থানী ঠিকানা : কাজলাপাড়, ইউনিয়ন- দনিয়া, থানা-যাত্রাবাড়ি, ঢাকা শহীদের বড় বোন : পারভিন আক্তার

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of  মো: জাহাঙ্গীর আলম
Image of  মো: জাহাঙ্গীর আলম
Image of  মো: জাহাঙ্গীর আলম
Image of  মো: জাহাঙ্গীর আলম
Image of  মো: জাহাঙ্গীর আলম

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

বাবুল হাওলাদার

শাহরিয়ার হোসেন রোকন

তাহিদুল ইসলাম

আবদুল্লাহ সিদ্দিক

মো: সবুজ

মো: সাকিব হাসান

মো: আবদুল মোতালেব

 মোঃ শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ

মো: শাহাবুদ্দিন

মো: নাইমুর রহমান

জিল্লুর শেখ

রিদোয়ান শরীফ রিয়াদ (জয়)

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo