Image of মো: ফারুক

নাম: মো: ফারুক

জন্ম তারিখ: ১ জানুয়ারি, ১৯৮৮

শহীদ হওয়ার তারিখ: ৪ আগস্ট, ২০২৪

বিভাগ: চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : নির্মাণ শ্রমিক, শাহাদাতের স্থান : মিরপুর ১০

শহীদের জীবনী

সারাদেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। কোটা বিরোধী থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। ৮ দফা, ৯ দফা শেষ পর্যন্ত এসে ঠেকে দফা একে। দফা একটাই, হাসিনার পদত্যাগ। আন্দোলনটি ছিল অহিংস। খালি হাতে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে। নিরস্ত্রই ছিল তারা। নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের দমন করতে সরকার লেলিয়ে দেয় আওয়ামী লীগের সকল সন্ত্রাসীদের। রাজপথে নামায় পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, সেনাবাহিনী। সরকার মসনদ টিকিয়ে রাখতে মরিয়া। দেশে জারি করে অঘোষিত যুদ্ধ। নিজের দেশের মানুষ মারতে প্রয়োগ করে সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্র। হেলিকপ্টারে গুলি করে খুন করে নাগরিকদের। আহত নিহতদের চিকিৎসা কাজে বাঁধা দেয় দলীয় সন্ত্রাসীরা। লাশ দাফনেও বাঁধাগ্রস্থ হয় পরিবার। কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়ে যায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনটি শুরু থেকেই ছিল একটি অহিংস আন্দোলন। নিরস্ত্র ছাত্র জনতা স্লোগান মুখর ছিল রাজপথে। সরকার এই আন্দোলনকে করলেন রক্তাক্ত। রাজপথ নিরীহ ছাত্রদের তরতাজা রক্তে রঞ্জিত হল। ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করল শত ছাত্রকে। মানুষ নেমে গেলেন রাস্তায়। বুকের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ঢাললেন মিছিলে। মিছিলে আসলেন কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, কবি, সাংবাদিক সব শ্রেণী পেশার মানুষ। ৪ আগস্ট দেশ মৃত্যুর নগরী হয়ে যায়। ছেলে, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ এখন একস্রোতে। ঢাকা ঘেরাও। সরকার প্রমাদ গুনলেন। কোথাও অবশিষ্ট রইল না সরকারের শক্তি। কেউ ভাবতেই পারেনি একটু পরই পালাবেন সরকার। সরকারের পালিত বাহিনী রাজনীতি, বা জনতার পালস বুঝতে ব্যর্থ হলেন। তারা তখনও খুনি ও স্বৈরাচারের আজ্ঞাবহ হয়ে রইল । ৪ আগস্ট ফারুক শরিক হন আন্দোলনে। মিরপুর ১০ এ তিনি অবস্থান নেন। আনুমানিক ২:৩০ টায় পুলিশের গুলিতে তার বুক বিদীর্ণ হয়ে যায়। তিনি লুটিয়ে পড়েন। জালেমের বিষাক্ত বুলেটে প্রাণ হারান। বুলেটের ক্রিয়ায় তার শরীর নীলচে হয়ে যায়। গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় লাশ। নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাকে কবর দেওয়া হয়। পারিবারিক অবস্থা অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল। গ্রামের বাড়িতে মাত্র ৮ শতাংশ জমি আছে। আর কোন জায়গাজমি বা সঞ্চয় নেই। আছে ঋণ। থাকার কোন ঘর নেই। ঢাকাতেই তিনি শ্রমজীবন যাপন করতেন। তার স্ত্রীও একজন পোষাক শ্রমিক।তার তিনি মেয়ে। তারা নিত্য সংগ্রামে কাটাতেন জীবন। একটি দরিদ্র পরিবারের উপার্জন করার মতো পুরুষ মারা গেলে তাদের দুঃখের আর শেষ থাকে না।শহীদের স্ত্রী তার কন্যাদের নিয়ে চরম অর্থ সংকটে কালাতিপাত করছেন। মেয়েরা মাদ্রাসায় পড়তো। জীবন বাঁচানোই যেখানে কঠিন সেখানে পড়ালেখা তো দিবাস্বপ্ন। শহীদের স্ত্রী এখন দিশেহারা। খাবার,বাসা ভাড়া,মেয়েদের পড়াশোনা সব ভাবনায় তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ভাইদের অনুভূতি চতুর্থ ভাই মোহাম্মদ রাকিব হোসেনের মতে তার ভাই ছিলেন ধার্মীক। ইবাদত বন্দেগিতে ছিলেন মনোযোগী। নিয়মিত নামাজ পড়তেন। তার ভাইয়ের মৃত্যুতে তারা শোকাহত। দেশের জন্য তিনি শহীদ হয়েছেন এ বিষয়টি তাদের গর্বিতও করে। শহীদের বড় ভাইয়ের বক্তব্য মতে, তার ভাই ভদ্র ও ভালো মানুষ ছিলেন। তার তিনটি কন্যা। তারা অর্থনৈতিক কষ্টে দিন অতিক্রম করছে। সরকার বা কোন সংস্থা তাদের সহায়তা করলে তার পরিবারটির জন্য জীবন সহজ হত। এক নজরে শহীদ ফারুক নাম : মো: ফারুক জন্ম : ০১-০১-১৯৮৮ সাল। জুলাই বিপ্লবের শহীদ পিতা : আব্দুল হাই মাতা : নুরজাহান পেশা : নির্মাণ শ্রমিক, মিরপুর ১০. স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম : বামানন্দী: ইউনিয়ন: ১নং চরমটুয়া থানা : নোয়াখালী সদর, জেলা নোয়াখালী বর্তমান ঠিকানা বাসা : শিয়ালকাটা রোড, মহল্লা: রূপনগর আবাসিক এলাকা থানা : মিরপুর জেলা: ঢাকা উত্তর সিটি ভাই বোন সংখ্যা : ৮ ভাই বোন। তিনি মেঝো পারিবারিক সদস্য : স্ত্রী ও ৩ কন্যা নিহত হওয়ার সময়কাল, আঘাতকারী : ৪ আগস্ট ২.৩০ টায় পুলিশের গুলি তার বক্ষ বিদীর্ণ করে ঘটনার স্থান : মিরপুর ১০ নং পয়েন্টে তিনি শহীদ হন শহীদের কবরে বর্তমান অবস্থান : নিজ এলাকায় দাফন করা হয় এই শহীদকে প্রস্তাবনা ১.তাদের জন্য এককালীন অনুদান প্রয়োজন মাসিক ভাতাও প্রয়োজন ২. স্থায়ী বাসস্থান করে দেওয়া ৩. মেয়েদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা ৪. তার স্ত্রীকে সেলাইমেশিন কিনে দেওয়া ৫. বিবাহযোগ্য মেয়েকে বিয়ের যাবতীয় খরচ যোগান দেওয়া

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: ফারুক
Image of মো: ফারুক
Image of মো: ফারুক
Image of মো: ফারুক
Image of মো: ফারুক
Image of মো: ফারুক

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: আশিক মিয়া

নাছিমা আক্তার

মো: হাসান

মো: শাহাদাত হোসেন শাওন

তানভীর হোসেন মাহমুদ

মো: আবদুর গনি

মো: জহিরুল ইসলাম

মো: ইউসুফ

মো: জাকির হোসেন (শাকিব)

সাদ আল আফনান

মো:  রিটন উদ্দীন

 সৈয়দ মুনতাসীর রহমান আলিফ

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo