Image of খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ

নাম: খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ

জন্ম তারিখ: ২৯ মে, ২০০৮

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: ঢাকা

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা: ছাত্র, শাহাদাতের স্থান : আজিমপুর স্টাফ কোয়াটার

শহীদের জীবনী

ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ। তার বাবার নাম কামরুল হাসান ও মায়ের নাম নিলুফা ইয়াসমিন। খালিদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। তিনি ২০০৮ সালে ২৯ মে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। যেভাবে শহীদ হলেন চাকুরীতে দলীয় কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিলেন খুনি হাসিনা ও তার অবৈধ সরকার। একারণে কোটা পদ্ধতি চালু করে। যাতে মেধাবীদের চাকুরীতে নিয়োগ পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। লেখাপড়া শেষ করে অনেক মেধাবী ছাত্র কোথাও নিয়োগ না পেয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নেয়। ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করে দেয়। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বার বার নস্যাৎ করে দেয় বিতর্কিত, খুনি, সন্ত্রাসী ও ধর্ষকদের সংগঠন ছাত্রলীগ। ১৬ জুলাই আন্দোলনে আবু সাইদসহ ৬ জন ছাত্রকে হত্যা করা হয়। ছাত্রলীগ অস্ত্র হাতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে ঝাপিয়ে পড়ে। ১৭ জুলাই সাধারণ ছাত্ররা ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলো থেকে ছাত্রলীগকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। রাস্তায় কফিন মিছিল করে। যদিও পুলিশের টিয়ারশেল, লাঠিচার্জ ও হ্যান্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ফলে শান্তিপূর্ণ কফিন মিছিল পন্ড হয়ে যায়। ছাত্ররা সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউনের কর্মসূচী দেয়। আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরাসহ পুলিশ রাতের আঁধারে ঘরে ঘরে গিয়ে গ্রেফতার অভিযান শুরু করে। ১৮ জুলাই থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়না। এদিন একটি অকল্পনীয় ঘটনা ঘটে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজপথে নেমে আসে। ১৮ জুলাই প্রায় ৪০ জন ছাত্র-জনতা শহীদ হয়। আহত হয় শতাধিক ছাত্র। আহতদের হাসপাতাল গুলোতে ভর্তি করাতে নিষেধ করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। কিছু কিছু মানবিক হাসপাতাল ভিন্ন রোগের কথা লিখে আহতদের ভর্তি নেয়। অপরদিকে নিহতদের লাশ তাদের পরিবারের কাছে প্রদান করতে গড়িমসি করতে থাকে দূর্নীতিবাজ পুলিশ। লাশ নিতে অর্থের লেনদেন করতে হয়। নিহতদের ‘ডেথ সার্টিফিকেটে’ আন্দোলনে নিহত হয়েছে এমন তথ্য লিখতে হাসপাতালকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়। অনেক লাশকে অজ্ঞাত দেখিয়ে দাফন করে ফেলা হয়। খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন। টিভি চ্যানেলে সঠিক নিউজ সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে পাওয়া যেতনা। দেশবাসী ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে সমস্ত সংবাদ পেতেন। খালিদ ১৮ জুলাই বিকাল ৫.৪৫ মিনিটের সময় আজিমপুরে স্টাফ কোয়াটারের পিসতলা ভবন ৭ম তলা বিল্ডিং এর পাশে আন্দোলনে অবস্থান গ্রহণের সময় মাথার পেছনে গুলি বিদ্ধ হন। সাথে সাথে মাটিতে পড়ে যান। এরপরে খুনি হাসিনার খুনি পুলিশ সরাসরি এসে বন্দুক তাক করে তাকে ছররা গুলি করে পুলিশ। তার শরীরে ৭০টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে চলে যায়। খালিদ হাসান তখনো জীবিত ছিলেন। ছাত্ররা এক পর্যায়ে খালিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পথে ছোরা, দা, শর্টগান প্রভৃতি অস্ত্রে সজ্জিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হাসপাতালে যেতে বাঁধা দেয়। সেখানে খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ শাহাদত বরণ করেন। সন্ত্রাসীরা মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে সাহায্যকারীদের যেতে দেয়। সন্ধ্যা ৬.১৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার জানান খালিদ হাসান অনেক আগেই মারা গেছেন। নিহতের লাশ শুরুতে তার পরিবারকে দেয়া হয়নি। তার পরিবার একেকবার একেক থানায় উপস্থিত হয়ে অনেক কাকুতি মিনতি করেও লাশ গ্রহণ করতে পারেন নি। পরবর্তীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়নি মর্মে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে শহীদের দেহ ফিরে পায় পরিবার। কেমন আছে তার পরিবার খালিদ হাসানের বাবা একটি মাদরাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। মা নিলুফা ইয়াসমিন গৃহিণী। গ্রামে তাদের একবিঘা জমি আছে। গ্রামের বাড়িটি পুরনো। একনজরে শহীদের পরিচয় নাম : খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ পেশা : ছাত্র, একাদশ শ্রেণি, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ ঢাকা জন্ম তারিখ : ২৯ মে ২০০৮ পিতা : কামরুল হাসান মাতা : নিলুফা ইয়াসমিন ভাই-বোন: ১. আশরাফুন্নেসা কারিমা (১২) ৬ষ্ঠ শ্রেণি ২. রাফসান সাকিব খান (৮ মাস) আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৮ জুলাই ২০২৪ শাহাদাত বরণের স্থান : আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টার আক্রমণকারী : পুলিশ দাফন করা হয় : সরইবাড়ি কবরস্থানে বর্তমান ঠিকানা : ২৪/১, জে এন সাহা রোড, ৮ তলা আমলিগোলা, লালবাগ, ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : সরইবাড়ি, ভাঙ্গা, ফরিদপুর ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : গ্রামে ১ বিঘা জমি ও পুরনো ঘর আছে প্রস্তাবনা ১. শহীদের বাবাকে সহযোগিতা করা ২. ছোট ভাইদের ভরণ-পোষণ ও লেখাপড়ার খরচ প্রদান করা

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

নাফিসা হোসেন মারওয়া

তামিন হৃদয়

মো: রাসেল

মামুন সরদার

মোশারফ

মো: সুজন মিয়া

পারভেজ হাওলাদার

আব্দুল গণি

মো: আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ

মো: আবদুল্লাহ ইবনে শহীদ

মানিক মিয়া

মোঃ সিফাত হোসেন

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo