Image of মো: ইমরান

নাম: মো: ইমরান

জন্ম তারিখ: ১০ ডিসেম্বর, ২০০৩

শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৮ জুলাই, ২০২৪

বিভাগ: চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত তথ্য:

পেশা : বাবুর্চি, শাহাদাতের স্থান : কাজলা, যাত্রাবাড়ি

শহীদের জীবনী

মো: ইমরান (২১) ১০ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে বাবা মো: আলম ও মা জাহানারার সংসারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দা হওয়ায় ঐতিহ্যগত কারনে ধার্মিক ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন। ইমরান ১৭ জুলাই পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ১৮ জুলাই ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। ১৭ জুলাই পুলিশ ও সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের তান্ডবের ফলে অসংখ্য ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ায় দেশবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। স্বৈরাচারের গদিতে কাঁপন ধরে। সেদিনই নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলার ফেরাউন সরকারের পতন খুব শীঘ্রই হচ্ছে।যভাবে শহীদ হলেন হাসিনা প্রশাসন দেশের মানুষকে অদৃশ্য এক জালে আটকে রেখেছিল দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে। অধিকারের কথা বলা, ন্যায়ের কথা বলা, ইসলামের জন্য কথা বলা ছিল ভয়ংকর অপরাধের শামীল। বাংলাদেশের মানুষ বেশ কয়েকবার আন্দোলন করে চক্রান্তকারীদের কারনে ব্যার্থ হয়। হাসিনা ১৯৭৫ সালের পরে বেশ কয়েক বছর ভারতের আশ্রয়ে ছিলেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা সেখানে তিনি ভারতের হাতে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে হাসিনা সরকার শুরুতে সেনাবাহিনীর ৫৬ জন সেরা অফিসারকে হত্যা করে এই বাহিনীকে পঙ্গু করে ফেলেন। হাসিনা বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস করতে পারলে তার ক্ষমতা নিশ্চিত। বিচার ব্যবস্থাকে নিজের হাতে নিয়ে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধী খেতাব দিয়ে একে একে হত্যা করতে থাকেন। পাশাপাশি বিএনপি নামক জাতীয়তাবাদী দলের দেশপ্রেমিকদের হত্যা ও গুম করেন। বাকিদের টাকা ও ভয় দেখিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজে লাগান। দেশবাসী ভাবে বিএনপি স্বৈরাচারকে হটাতে ভূমিকা রাখবে! বছরের পরে বছর গড়ায়। প্রতিবছর ঈদের পরে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসে। কিন্তু কোন কিছুই ঘটেনা। সাধারণ জনতা নিহত হয়, বিএনপির নেতারা ঘরে লুকিয়ে থাকেন। এভাবে হাসিনা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করে ফেলেন। তার পরিকল্পনা ছিল দীর্ঘমেয়াদী। পরিকল্পনা করেন ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করবেন। তার চাটুকার ও দলীয় সন্ত্রাসীদের সকল সেক্টরে নিয়োগ দেবেন। একারনে ২০১৮ সালে নিষিদ্ধ হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটাকে ফিরিয়ে আনেন। এতে ছাত্ররা ক্ষুব্ধ হয়। তারা শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে থাকেন। সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ ও আওয়ামী পুলিশ প্রচন্ডভাবে লাঠি পেটা করে। মিডিয়া নিয়ন্ত্রন করার কারনে সঠিক সংবাদ দেশবাসী না পেলেও ফেইসবুক ও ইউটিউবে দেশের মানুষ জানতে পারে প্রকৃত ঘটনা। শহীদ ইমরান এসব খবর আগে থেকেই রাখতেন। তিনি সরকারের দমন নীপিড়নে প্রতিবাদ করেন। ১৫ জুলাই পর্যন্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপরে নিয়মিত হামলায় দেশের মানুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। প্রকাশ্যে আন্দোলন করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। ছাত্ররা ১৬ জুলাই সারাদেশে আন্দোলনের ডাক দেয়। ইমরান দেশের কর্মকান্ড সম্পর্কে সজাগ ছিলেন। মোঃ ইমরান বৈষম্যবিরোধী এই আন্দোলনে রাজপথে শামীল হন। পরদিন ১৭ জুলাই দুপুরের খাওয়া খেয়ে আন্দোলনে অংশ নিতে চলে যান। মাকে বলেন, ‘ভয় পেলে চলবেনা। অধিকার আদায় করতে হলে রাজপথে যেতে হবে। আমাদের কিছু হবেনা। আমি এসে পড়বো’। এটাই ছিল মায়ের সাথে তার শেষ কথা। ঘৃণিত পুলিশ বাহিনীর গুলিতে তিনি রাজপথে শহীদ হন। কেমন আছে তার পরিবার মো: ইমরান একজন এতিম ছিলেন। তার মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। তার বোন শামিমা আক্তার বিবাহিতা এবং অপর বোন সানজিদা আক্তার এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুক। ইমরানের গ্রামে নিজস্ব কোন জমি নেই। পরিবারের বক্তব্য শহীদের বোন সানজিদা আক্তার বলেন, আমরা আমাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ভাইকে হারিয়েছি। ২৪ মে ২০২৪ সালে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। দুইমাস পরে আমার ভাইও মারা গেলেন। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। প্রস্তাবনা ১. মাসিক ও এককালীন সহযোগিতা প্রদান করা ২. বোনের লেখা-পড়ায় সহযোগিতা প্রদান করা ৩. গ্রামে একটুকরা জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করা একনজরে শহীদের পরিচয় নাম : মো: ইমরান পেশা : বাবুর্চি জন্ম তারিখ : ১০ ডিসেম্বর ২০০৩ পিতা : মো: আলম মাতা : জাহানারা আহত ও শহীদ হওয়ার তারিখ: ১৭ জুলাই ২০২৪ সন্ধ্যা ৬.৩০ এবং ১৮ জুলাই ৬.৫০ শাহাদাত বরণের স্থান : কাজলা, যাত্রাবাড়ি আক্রমণকারী : পুলিশ দাফন করা হয় : জুরাইন কবরস্থানে বর্তমান ঠিকানা : পূর্ব রসুলপুর, দনিয়া, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা স্থায়ী ঠিকানা : চলহনিয়া, ফরদাবাদ, বাঞ্চারামপুর, বিবাড়িয়া ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবস্থা : গ্রামে নিজস্ব জমি নেই

শহীদের তথ্য সম্বলিত ছবি

Image of মো: ইমরান
Image of মো: ইমরান

একই বিভাগ অন্যান্য শহীদদের তথ্য

মো: কবিরুল ইসলাম

শহীদ জসীম উদ্দিন

মো: ইমন গাজী

আবদুল কাইয়ুম

মো: তানভীর ছিদ্দিকী

শাব্বির হোসেন

মো: ওসমান পাটওয়ারী

মো: পারভেজ হোসেন

রিফাত হোসেন

 কাউছার হোসেন

নাছিমা আক্তার

মো: নিশান খান

শেয়ার করুন Facebook Logo Twitter Logo WhatsApp Logo