জন্ম তারিখ: ১ মার্চ, ১৯৬৮
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪
বিভাগ: ঢাকা_সিটি
পেশা : প্রবাসী, শাহাদাতের স্থান : শনির আখড়ায়.
শহীদ আবু ইসাহাক ছিলেন সৌদি প্রবাসী। একজন গর্বিত রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তিনি খোদা ভীরু, সৎ, পরোপকারী মানুষ ছিলেন সাদা মনের সহজ সরল। তিনি কোম্পানি থেকে ছুটি নিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশে। আগস্ট মাসের ২৪ তারিখেই ছিল তার ফিরতি ফ্লাইট। সৌদি আরবে গিয়ে আবার কাজে যোগ দিবেন এমনটাই পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু এক ছেলে এক মেয়ে আর প্রিয়তমা স্ত্রীকে ছেড়ে খোদার অমোঘ ডাকে সাড়া দিয়ে শাহাদাতের নাজরানা পেশ করেন শহীদ আবু ইসাহাক। ফুটফুটে ছেলে মেয়ে দুটি চিরদিনের জন্য এতিম হয়ে যায়। এই এতিম শিশুদের কষ্টের কথা আর বিধবা স্ত্রীর করুণ আহাজারি কী জালেম শাসক শেখা হাসিনার সভাসদদের কানে পৌঁছাতে পেরেছিল? নাকি আল্লাহ তাদের কানে মোহর মেরে দিয়েছিল? তার ৯০ বছরের বয়োঃবৃদ্ধ পিতার নির্বাক করুণ মুখটি যেন শুধু অভিশাপই দিচ্ছে খুনিদের। বাবা বলে মেয়েটি আর কোনদিন ঝাপিয়ে পড়বে না আবু ইসাহাকের বুকে! শহীদ আবু ইসাহাক ১৯৬৮ সালের মার্চ মাসের ১ তারিখে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। আই. কে. কে. গ্রুপ অব কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। কদমতলীর নুরপুর মসজিদ রোডের ৪২৫ নম্বর বাসার ৩য় তলায় সপরিবারে বসবাস করতেন শহীদ আবু ইসাহাক। যেভাবে শহীদ হয় : বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম থেকেই তিনি পানি, খাবার দিয়ে সহযোগিতা করে আসছিলেন। নিজেও স্লোগান তুলেছেন ছাত্রদের সাথে। পঞ্চাশোর্ধ বয়স হলেও মনের দিক থেকে ছিলেন ছাত্রদের মতই তারুণ্যদীপ্ত। আন্দোলনে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ক্যাডারদের আক্রমণে আহত ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসা প্রদানে অব্যাহত সহযোগিতা করতে থাকেন আবু ইসাহাক। আগস্টের ৫ তারিখ ঘৃণিত পতিত শাসক শেখ হাসিনা জনরোষে পালিয়ে গেলে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে। কিন্তু ৫ তারিখ সকালেও আন্দোলনকারীদের দমন করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে থাকে পুলিশ, র্যাব, এসবি ও আনসার সদস্যরা। ৫ তারিখ দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিটে বাসা থেকে বের হন তিনি। শনির আখড়ায় আন্দোলনকারীদের সাথে যোগ দেন। পরবর্তীতে তার স্ত্রী বেলা ১.৩৫ এ ফোন দিলে আন্দোলনকারী একজন রিসিভ করে। অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয় আবু ইসাহাক গুলিবিদ্ধ হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন। তিনি গুলিবিদ্ধ হন আনুমানিক ১.২০ টায়। তার স্ত্রী ও ছেলে শনির আখড়ার ঘটনাস্থল থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ১. ৩৫ এর দিকে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তাকে সমাহিত করা হয় গৌরিপুর, কুমিল্লা (নানা বাড়ির পারবিারিক কবরস্থানে) শহীদের আপনজনদের কথা মেয়ে: আমার আব্বু এখন আর দুনিয়াতে নেই। আমি এখন বুঝতে পারছি যে আমার আব্বু আমাকে খুবই ভালোবাসত। ব্যক্তিগত তথ্য নাম : আবু ইসাহাক পিতা : আরশাদ চৌধুরী (৯০) মাতা : মৃত আমবিয়া খাতুন জন্ম : ০১/০৩/১৯৬৮ পেশা : প্রবাসী (সৌদি আরব) কর্মরত প্রতিষ্ঠান : আই. কে. কে গ্রুপ অব কোম্পানি ছেলে : ইশতিয়াক চৌধুরী আদিপ, ২২ বছর, ১ম বর্ষ, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি মেয়ে : সারা চৌধুরী (১৪), ৮ম শ্রেণি, বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় স্থায়ী ঠিকানা : ৮২৮ নুরপুর, ৬০ নং ওয়ার্ড, থানা: কদমতলী, ঢাকা বর্তমান ঠিকানা : ৪২৫, ৩য় তলা, এ-ইউনিট, নুরপুর মসজিদ রোডে, কদমতলী ঢাকা